আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
হেলমেট ছুড়ে পুলিশকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে শাসালেন শাজাহান খান
২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:০৮ | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:২১
ঢাকা: শাজাহান খান। মাস কয়েক আগেও ছিলেন শাসকদলের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী নেতা। কিন্তু ৫ আগস্ট গণঅভুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লেও পালাতে পারেননি তিনি। বর্তমানে একাধিক মামলা কাঁধে নিয়ে রয়েছেন জেলে। গণহত্যার মামলায় রোববার (২০ এপ্রিল) সকালে সাবেক এই মন্ত্রীকে আনা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। তবে প্রিজনভ্যান থেকে নামার সময় ক্ষুব্ধ হয়ে ছুড়ে মারেন নিজের মাথার হেলমেট। এমনকি শাসিয়েছেন পুলিশকেও।
জানা গেছে, ট্রাইব্যুনালের হাজতে নেওয়ার সময় শাজাহান খানকে হাতকড়া পরাতে যান দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। একইসঙ্গে হেলমেট ছুড়ে ফেলে পুলিশকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। যদিও তাৎক্ষণিক তার মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিনের প্রসঙ্গটি বিচারকরদের সামনেও উঠে আসে। ট্রাইব্যুনালে মামলা শুনানির সময় এজলাসে দাঁড়িয়ে কথা বলার অনুমতি চান আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য।
বিচারকের অনুমতি পেয়ে শাজাহান বলেন, ‘আমাদের আগেও ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছিল। কিন্তু হাতকড়া পরানো হয়নি। আজ এজলাসেও হাতকড়া পরিয়ে আনা হয়। অথচ আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাবাসহ আমাদের পরিবারের ছয় জনই যুদ্ধ করেছি। মাননীয় বিচারক আমরা মর্যাদা পেতে চাই। মানবিক কারণে হলেও আপনি বিষয়টি দেখবেন।’
ঘটনাটির বিস্তারিত কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান ট্রাইব্যুনাল। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ‘জেল কর্তৃপক্ষের আইন অনুসারে পুলিশ সদর দফতরের অনুমতিতে আসামিদের হাতকড়া পরিয়ে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। প্রিজনভ্যান থেকে নামানোর সময় শাজাহান খানকে পরাতে গেলে ক্ষেপে যান। বেশ উগ্র মেজাজে আমাদের নির্বংশ করার হুমকি দেন তিনি। এমনকি রাজাকারের বাচ্চা বলেও গালি দেওয়া হয়।’
এ প্রসঙ্গে চিপ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারে নেই। আদালতে আসামিকে হাতকড়া পরিয়ে তোলা হবে কি না তা সিদ্ধান্ত দেয় জেল কর্তৃপক্ষ। আসামিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে কিংবা নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকলে হাতকড়া পরানো হয়।’
এদিন সকাল ১০টায় কেরানীগঞ্জ, কাশিমপুর ও নারায়ণগঞ্জ কারাগার এবং বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কড়া নিরাপত্তায় সাবেক মন্ত্রী-উপমন্ত্রীসহ ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। দুপুর ১২টায় তাদের এজলাসে তোলা হয়।
আসামিরা হলেন- সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহম্মেদ পলক, সাবেক সাংসদ শাহজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, এনটিএমসি সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
সারাবাংলা/আরএম/ইআ