এপ্রিলের ১৯ দিনেই রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা
২০ এপ্রিল ২০২৫ ২১:০৯
ঢাকা: চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনেই প্রবাসী ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২০ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। গড়ে প্রতিদিন দেশে এসেছে ৯ কোটি ডলার বা প্রায় ১ হাজার ১০৪ কোটি টাকারও বেশি।
রোববার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, হুন্ডি ও অবৈধ চ্যানেল কমে আসা, বৈধ পথে ডলারের একক মূল্য এবং ব্যাংকিং খাতে প্রণোদনামূলক ব্যবস্থার কারণে প্রবাসীরা এখন নিয়মিতভাবে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি এপ্রিলের প্রথম ১৯ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ডলারের বেশি এবং বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৯৯ কোটি ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে আরও ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।
তবে এ সময়ের মধ্যে আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। ব্যাংকগুলো হলো- বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামি ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
এর আগে মার্চে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে- যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড। গত বছরের মার্চে এই অংক ছিল ১৭১ কোটি ডলার। ফলে এক বছরের ব্যবধানে মার্চে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৫৮ কোটি ডলার।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
অর্থবছরভিত্তিক রেমিট্যান্স
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে এসেছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ এ বছর ৯ মাসেই রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪৭০ কোটি ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৩৯১ কোটি বা ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার। আর প্রবাসীরা ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার ও ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান।
এছাড়াও, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক হাজার ৬৩১ কোটি ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
পঞ্জিকাবর্ষ হিসাবে রেমিট্যান্স
২০২৪ সালে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে প্রবাসীরা ২ হাজার ১৯২ কোটি(২১ দশমিক ৯২ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠান। ২০২২ সালে প্রবাসীরা দুই হাজার ১২৭ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর আগে ২০২১ সালে প্রবাসীরা রেকর্ড দুই হাজার ২০৭ কোটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান দেশে।
অন্যদিকে ২০২০ সালে দুই হাজার ১৭৪ কোটি ১৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে। ২০১৯ সালে এক হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার, ২০১৮ সালে এক হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, ২০১৭ সালে এক হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে এক হাজার ৩৬১ কোটি ডলার এবং ২০১৫ সালে এক হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠান প্রবাসীরা।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম