Thursday 01 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়নি, সতর্ক থাকুন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ এপ্রিল ২০২৫ ২২:৩৯ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৫৮

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমাদের সংগ্রাম কিন্তু শেষ হয়নি, গণতান্ত্রিক উত্তরণ এখনো হয়নি, নির্বাচিত সরকার ও পার্লামেন্ট এখনো পাইনি। সেজন্য অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে, দৃঢ়তার সঙ্গে, সচেতনতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। দলকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে, সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

রোববার (২০ এপ্রিল) বিকেলে কাকরাইল ডিপ্লোম ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণে এ সভা আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল বলেন, ‘আজকের এই সময়টা আমাদের পরীক্ষার সময়। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, দেখছেন, পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন, টকশো— সবকিছু দেখছেন কেমন একটা অস্থিরতা চলছে। কতগুলো নির্ধারিত বিষয়কে অনির্ধারিত করে ফেলেছি, অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আজকে সংস্কার, নির্বাচন— এই কথাগুলো অনেক বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। সকল রাজনৈতিক দল-গোষ্ঠীর দায়িত্ব হবে অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নজরুল ইসলাম খান ভাই প্রতিদিন সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আমরা আমাদের প্রস্তাবগুলো দিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি যে, আলোচনার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থেই সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা সমাধান বেরিয়ে আসবে এবং আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব পাব একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে আমি জানতে পারলাম আমাদের একজন ছাত্রদল কর্মী প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. জাহেদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যা করা হয়েছে। কারা হত্যা করেছে আমরা জানি না। তবে, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, যারা এই সময়ে একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে তারা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের এই পরিবর্তনে আন্দোলনের সঙ্গে কোনো মতেই সংযুক্ত ছিল না।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা আজ বাংলাদেশে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় তারা কখনই বাংলাদেশের পক্ষের মানুষ নন। তারা গণতন্ত্রের পক্ষের মানুষ নন। তারা শ্রমজীবী মানুষের পক্ষের মানুষ নন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা হচ্ছিল নজরুল ইসলাম খান ভাইকে জিজ্ঞাসা করি এত সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু শ্রমজীবী মানুষদের, শ্রমিকদের কথা তো কোথাও শুনতে পারছি না। আমাদের ৩১ দফার মধ্যে শ্রমজীবী মানুষের কথা আছে। কিন্তু এই সংস্কার কমিশনের মধ্যে এ নিয়ে কি আছে? আমি জানি না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কৃষকরা তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না, পানি পায় না। যখন পানির প্রয়োজন হয় সেচের জন্য, তখন তাদের (শ্রমিকদের) সমস্যার সমাধান হয় না। শ্রমিকদের সন্তানেরা ভালো স্কুলে যেতে পারে না। স্কুলে গেলেও বই পায় না। সেই কথাগুলো আলোচনা হয় না। আপনারা খুব ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন- টেলিভিশন টকশো বা টেলিভিশনে যে নাটকগুলো হয়, সেখানেও কিন্তু এই সাধারণ মানুষরা অনুপস্থিত, শ্রমজীবী মানুষরা অনুপস্থিত। অথচ এরাই হচ্ছে দেশের বড় অংশ।’

‘আমাকে আজকে একটা টেলিভিশন চ্যানেল ইন্টারভিউ করছিল। বিভিন্নভাবে কথা বলতে গিয়ে তারা তো বিশেষ কিছু মানুষকে মনে করে তাদেরই অবদান আছে। আমি বললাম, আপনারা তো একবারও জিজ্ঞাসা করলেন না ৭ তারিখে (২০২৩ সালে) বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের গুলিতে যে মকবুল শহিদ হয়েছিল, সে কে ছিল? সে ছিল একটি ফ্যাক্টরির শ্রমিক। শাওন ভোলার সে অটো চালাত… মুন্সীগঞ্জে-নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে যারা আত্মাহুতি দিয়েছিল তারাও শ্রমিক ছিল’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু‘র সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ। প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

টপ নিউজ বিএনপি মির্জা ফখরুল সংগ্রাম সতর্ক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর