Wednesday 30 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘টিকায় ১ ডলার বিনিয়োগ করলে ২৫ গুণ লাভ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৫৬ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৩০

ঢাকা: টিকায় ১ ডলার বিনিয়োগ করলে ২৫ গুণ লাভ পাওয়া যায়। এটা গবেষণায় প্রমাণিত। শিশুদের বাঁচাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে সরকার ৮৪ ভাগ বিনিয়োগ করে। ২০৩০ সাল থেকে দাতাসংস্থা না থাকলে সরকারকেই একাই বিনিয়োগ করতে হবে, যা কষ্টসাধ্য।

সোমবার (২১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। ‘বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ উদযাপন ২০২৫’ উপলক্ষ্যে ‘বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রমের সাফল্য, উদ্ভাবন, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৮১.৫ ভাগ শিশুমৃত্যু কমেছে। এখন ১০টি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, যা ১২টি রোগ প্রতিরোধ করে। আগামী আগস্ট মাস থেকে ১১টি টিকা দেওয়া হবে, যা ১৩টি রোগ প্রতিরোধ করবে। কিন্তু ২০২৯ সালের পর গ্যাভি টিকাদান প্রকল্পে সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলে সরকারকে নিজস্ব অর্থায়নে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করতে হবে।

নিজাম উদ্দিন বলেন, গত ১২ বছরে ইপিআই কভারেজ ৮৪ ভাগ এর উপর উঠেনি এবং ১৬ ভাগ শিশু টিকা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এটি হিসেব করলে দেখা যায়, প্রায় ৫-৬ লাখ শিশু টিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

টিকাদানের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে ৯৮.৮ ভাগ শিশুকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে শহরে টিকা কম নিচ্ছে, গ্রামে বেশি টিকা নিচ্ছে। কারণ, শহরে ১২ তলায় টিকা দেওয়া হাওর এলাকায় টিকা দেওয়ার থেকেও বেশি কঠিন। গতানুগতিক পদ্ধতিতে টিকা দিলে অনেক শিশুকে আমরা টিকা থেকে হারাব। অনেক দেশে ড্রোন দিয়েও কিন্ত টিকা সরবরাহ করা হয়। এছাড়া, মন্ত্রণালয়ের অধীনে শহর ও গ্রামে টিকাদান প্রকল্পে বরাদ্দকৃত জনবলের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ পদ এবং ইপিআই সদর দপ্তর এ ৪৩ শতাংশ পদ এখনও শূন্য রয়েছে। এছাড়া বরাদ্দকৃত জনসংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। দুর্গম এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যে সংখ্যায় টিকাদানকেন্দ্র থাকা দরকার, সেই সংখ্যক টিকাদানকেন্দ্র নেই। টিকাদান কর্মসূচী সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য বাজেট বরাদ্দে দেরি হচ্ছে। ফলে টিকা ক্রয়, টিকা পরিবহণ ও বণ্টনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরো বলেন, ইপিআই প্রোগ্রাম মনিটরিং এবং মূল্যায়নের সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের অনুপ্রাণিত করে মানসম্পন্ন তত্ত্বাবধান এবং পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। তাছাড়া ভৌগলিক এবং আর্থ-সামাজিক বৈষম্য চিহ্নিত করতে এবং শহরে টিকাদান নীতিকে শক্তিশালী করার জন্য নিয়মিত মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। টিকাদানের ক্ষেত্রে একটি ডাটাবেস তৈরি এবং কার্যকর করা প্রয়োজন, যা জাতীয় কর্মশক্তি পরিকল্পনার জন্য সঠিক তথ্য নিশ্চিত করবে। বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এবং নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকার মানুষের মধ্যে টিকাদান নিশ্চিত করার জন্য নির্দিষ্ট কৌশলের পরিকল্পনা (ম্যাপিং, মোবাইল ক্লিনিক, ডোর-টু-ডোর টিকাদান) বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা এবং টিকাদানের জন্য সর্বোত্তম বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করার পাশাপাশি অ্যাডভোকেসি, বিকল্প তহবিল উৎসের জন্য নীতি সংস্কার এবং সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করাও জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. এসএম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ (ডিরেক্টর এবং লাইন ডিরেক্টর, এমএনসি এএইচ, স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন পরিচালিত উক্ত গবেষণা প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।

সারাবাংলা/এমএইচ/আরএস

শিশুদের টিকা