‘অবিলম্বে নারী বিষয়ক কমিশন বাতিল করুন’
২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:১১ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ২০:২৮
ঢাকা: অবিলম্বে নারী বিষয়ক কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘‘পতিত স্বৈরাচারের জঞ্জাল দুর করতে জাতি একটি সামগ্রিক সংস্কার প্রত্যাশা করছে। যে সংস্কার হবে দেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস, ইতিহাস, ঐতিহ্য সমর্থিত এবং শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জনআকাঙ্ক্ষার অনুকূলে। সংস্কার নিয়ে সরকার ইতোমধ্যে যে সব কমিশন করেছে, তাদের প্রস্তাব মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু, নারী বিষয়ক কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করেছে। এই প্রস্তাব জনরোষ উসকে দেবে। তাই অবিলম্বে নারী বিষয়ক কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং কমিশন বাতিল করতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান সংস্কার কমিশন গণআকাঙ্ক্ষা ধারণ করে রাষ্ট্রের মূলনীতি থেকে সেক্যুলারিজমকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। অথচ নারী বিষয়ক কমিশন আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে যে, রাষ্ট্র হবে ‘ইহজাগতিক’। তাদের প্রস্তাবনা দেখলে মনে হয়, তারা দেশের মানুষকে বোকা মনে করে। সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরেপেক্ষতা শব্দের বদলে তারা “ইহজাগতিক” শব্দ ব্যবহার করে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং তা প্রকাশে সুক্ষ্ম প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।’’
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে বহু বছর ধরে পারিবারিক আইন ধর্মভিত্তিক। শুধু বাংলাদেশ নয় বরং ভারতসহ অধিকাংশ দেশেই পারিবারিক আইনের ভিত্তি ধর্ম। কারণ, সকল দেশ ও সভ্যতায় ধর্ম মেনেই পরিবার গঠন হয়। এর বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগও নাই। কিন্তু এই কমিশন পারিবারিক আইনের ভিত্তি বদলে দেওয়ার প্রস্তাব করে জনরোষ উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে।’’
‘‘এই ধরনের অপচেষ্টা আমরা সাম্প্রতিক বিজেপির ভারতে দেখতে পাই। আমরা আশংকা করছি, নারী কমিশনের সদস্যরা ভারত দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিপ্লবোত্তর সরকারকে বিতর্কিত করতে এবং তাদের সঙ্গে থাকা গণসমর্থনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এ ধরনের প্রস্তাব দিয়ে থাকতে পারে’’— বলেন গাজী আতাউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ তাদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত কিন্তু পারিবারিক আইন থেকে ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থাপনাকে বাদ দেওয়া বরদাস্ত করবে না। যদি সরকার নারী কমিশনের প্রস্তাব গ্রহণ করে তাহলে দুঃখের সাথে বলতে হবে, আমাদের স্বপ্ন আবারও ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কারণ, বাংলাদেশের মানুষের কাছে ধর্ম এত গুরুত্বপূর্ণ যে, এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে অন্তবর্তী সরকার সমর্থনহীন হয়ে বিক্ষোভের মুখে পরতে পারে। তাই সরকারকে পরামর্শ দেব, নারী বিষয়ক কমিশন বাতিল করুন। দেশের নারীদের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব করে এমন নারীদের সমন্বয়ে নতুন কমিশন গঠন করুন।’’
সারাবাংলা/এজেড/ইআ