ভিসির পদত্যাগের দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন শুরু
২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:২১ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ২০:২৭
খুলনা: উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪ টায় কুয়েটের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে বেলা ৩ টা থেকে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আমরণ অনশন শুরু করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী তাদের এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
অপরদিকে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সকল সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) দফতরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার।
সোমবার দুপুরে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক ও পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি উক্ত আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) দফতরের উপ-পরিচালক ও সহকারী পরিচালকগণ এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্টুডেন্ট ওয়েল ফেয়ার সেন্টারের সামনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) বলেন, ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমরা তাদের নিয়ে বসেছি। তারা তাদের সমস্যার জায়গাগুলো আমাদের জানাবে। তাদের সকল সমস্যা যাতে দ্রুত সমাধান করা যায় সে লক্ষ্যে ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা চলছে। ছাত্ররা আমাদের সন্তানের মত। তারা কোন অন্যায় বা ভুল করতে পারে। এমনকি আমরাও ভুলেরে ঊর্ধ্বে নই। শিক্ষক হিসেবে আমাদের অগ্রাধিকার সবসময় শিক্ষার্থী। তাদেরকে নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিটা ছাত্রের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আমি বদ্ধ পরিকর। আমি একটি বিষয় নিশ্চিত করতে চাই-ছাত্রদের কোনো বিষয়ে কোনো সমস্যা হলে তার সমাধান করা আমার অন্যতম ও প্রধান দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। উক্ত বহিস্কার কিন্তু চূড়ান্ত বহিস্কার নয়। এখানে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি বসবে। যে সকল ছাত্রদের সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। নিরপরাধ কেউ যেন কোনো প্রকার শাস্তির মুখোমুখি
না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে তাদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রদল বহিরাগতদের নিয়ে হামলা করেছে। অপরদিকে ছাত্রদল দাবি করে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও ছাত্রশিবির হামলা করেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ক্লাস বর্জন করেন এবং উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ, ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের ছয় দফা দাবি লিখিত আকারে জমা দেন। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসের সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাসের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় প্রশাসন ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে।
সারাবাংলা/এসআর
আমরণ অনশন কুয়েট খুলনা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভিসির পদত্যাগের দাবি