হাওর জুড়ে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ, ঘরে তোলার ব্যস্ততা
২২ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:৪১
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের হাওরে পাকা ধান কাটার ধুম পড়েছে। ধানের মৌ মৌ গন্ধ এখন মাঠ জুড়ে। কৃষক-কৃষাণীরা পাকা ধান ঘরে তোলতে এখন ব্যস্ত। একদিকে কৃষকরা মাঠ থেকে পাকা ধান এনে মজুদ করছেন। অপরদিকে কৃষাণীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান মাড়াই শেষ করে ঘরে তোলছেন।
পহেলা বৈশাখ থেকে দেখার হাওর, শনি মাটিয়ানসহ বিভিন্ন হাওরে ধান কাটা শুরু হয়। আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে গোলায় ধান তোলতে পেরে কৃষকের মুখে এখন হাসির ঝিলিক।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২১ এপ্রিল) পর্যন্ত জেলায় ৩৫ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। এবার জেলায় ১৩৭টি হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এরমধ্যে হাইব্রিড ধান ৬৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৭৩ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৯৭৯ হেক্টর।
এসব ধান থেকে চাল উৎপাদন হবে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৪১৩ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা।
করচা হাওর পাড়ে কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, ‘আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় বোরো ধানের ফসল ভালো হয়েছে। সুনামগঞ্জের আকাশে ঝলমলে রোদ থাকায় দ্রুত ধান শুকিয়ে গোলায় তোলতে পারছেন।’
তেলিগাঁও গ্রামের রতিন্দ্র দাস বলেন, ‘মাটিয়ান শনি হাওরে বোরো ধান আবাদ করতে জমিতে তেমন চাষ লাগে না। হাওর থেকে পানি নেমে গেলে চারা লাগালে সোনালী ফসলে ভরে যায় মাঠ। এবার আকাশে বৃষ্টি না থাকায় সুন্দরভাবে ধান গোলায় উঠানো যাচ্ছে।’
শনির হাওর পাড়ের কৃষক মনিরাজ শাহ বলেন, ‘এবার হাওরে বোরোর ভাল ফলন হয়েছে। তাদের নিজের জমিতে প্রতি কেয়ারে (তিন কেয়ারে এক একর) ১৫-১৬মণ করে ধান হয়েছে। আবহাওয়া আর কয়েকদিন এভাবে ভাল থাকলে বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই ধান কেটে ঘরে তোলা যাবে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ বলেন, ‘এবার সময়মতো বৃষ্টি ও রোদ থাকায় এ জেলায় বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় হাওরের কৃষকরা খুশি। এখন পর্যন্ত ৩০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। আশা করছি আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে।’
সারাবাংলা/এসআর