সান্ধ্যকালীন কোর্সের টাকায় মিশর-দুবাই ভ্রমণে ঢাবির ১০ শিক্ষক
২৬ জুন ২০১৮ ১০:২৬
।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাবি: সান্ধ্যকালীন কোর্সের টাকায় মিশর-দুবাই ভ্রমণে গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দশ শিক্ষক। গত ২০ জুন বিদেশ সফরের উদ্দেশ্যে ওই ১০ শিক্ষক ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ড. এম বদরুজ্জামান সান্ধ্যকালীন কোর্সের টাকা দিয়ে শিক্ষকদের বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, সান্ধ্যকালীন কোর্সের টাকায় বিদেশ ভ্রমণের নিয়ম নেই। ওই দশ শিক্ষক নিয়ম না মেনে ফান্ডের টাকা নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে গেছেন।
বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের একাধিক অধ্যাপক বলেন, ‘সান্ধ্যকালীন কোর্সের টাকাগুলোর ক্ষেত্রে কিছুটা অস্বচ্ছতা আছে। এ টাকায় বিদেশ ভ্রমণ নৈতিকভাবে ঠিক নয়। এটি হলো পাবলিক মানির অপব্যবহার।’
বিদেশ সফরে যাওয়া ১০ শিক্ষক হলেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাকের আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক সন্তোষ কুমার দেব, নুসরাত জাহান, মোহাম্মদ রুহুল আমিন, মিনা মাহবুব হোসেন, প্রভাষক প্রসেনজিৎ সাহা, আব্দুল্লাহ আল মুনীম, বিপ্লব রায়, সামিয়া আফরীন সেতু ও করবী কবির। তারা এখন বিদেশে অবস্থান করছেন।
এর আগে গত ৫ মে রোববার বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভা হয়। সেখানে ট্যুরসংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয় এবং একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এম বদরুজ্জামান ভূঁইয়াকে উপদেষ্টা, সন্তোস কুমার দেবকে আহ্বায়ক ও কামরুজ্জামানকে সদস্য করা হয়।
এ ট্যুরে প্রভাষক ২৫ শতাংশ, সহকারী অধ্যাপক ৩০ শতাংশ ও অধ্যাপকের ৪০শতাংশ ব্যয় নিজস্বভাবে বহন করার সিদ্ধান্ত হয়। বাকি টাকা বিভাগের সান্ধ্যকালীন কোর্সের ফান্ড থেকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে জানা গেছে, এই ভ্রমণে প্রত্যেকের প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ পড়বে। এ হিসেবে একজন প্রভাষক সান্ধ্যকালীন কোর্স থেকে ১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে নিবেন। অন্যদিকে একজন সহকারী অধ্যাপক ১ লাখ ৫ হাজার ও অধ্যাপক ৯০ হাজার টাকা করে নিবেন। সব মিলিয়ে ১০ জন শিক্ষক সান্ধ্যকালীন কোর্সের প্রায় ১১ লাখ টাকা ব্যয় করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে সান্ধ্যকালীন কোর্সের আয় থেকে ৩০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বাকি টাকা শিক্ষকদের সম্মানী ও বিভাগের উন্নয়নমূলক কাজ ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদানে ব্যবহার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোর্সের আয় থেকে ৩০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়ার নিয়ম রয়েছে। বাকি টাকা শিক্ষকদের সম্মানী ও বিভাগের উন্নয়নমূলক কাজ ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদানে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন বিভাগের বিরুদ্ধে সান্ধ্যকালীন কোর্সের সঠিক পাওনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে না দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
সারাবাংলা/কেকে/একে