Wednesday 23 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নোয়াখালীতে দাফনের ১৫ দিন পর গৃহকর্মীর লাশ উত্তোলন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪৩

মারজিনা আক্তার (১৬)

নোয়াখালী: নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়নপুর ইউনিয়নে বেওয়ারিশ হিসেবে গোপনে দাফনের ১৫ দিন পর কবর থেকে মারজিনা আক্তার (১৬) নামে এক গৃহকর্মীর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এস এম জাহিদা আক্তার মৌসুমী ও মো. শাহাদাত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এস এম জাহিদা আক্তার মৌসুমী ও মো. শাহাদত হোসেনের উপস্থিতিতে চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রামনারায়ণপুর গ্রামের মাইজের বাড়ির কবরস্থান থেকে লাশটি তোলা হয়। এ সময় নিহতের পরিবারের সদস্য ছাড়াও ঢাকার খিলগাঁও ও স্থানীয় চাটখিল থানার পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গৃহকর্মী মারজিনা আক্তারের লাশ উত্তোলন করা হচ্ছে।

মারজিনা আক্তার চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রামনারাণপুর গ্রামের মাইজের বাড়ির মাহাবুবুল হক চৌধুরী বাবরের ঢাকার বাসায় গৃহ পরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন। মারজিনা শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানার বনকুরা গ্রামের আব্দুর রউফের তিনমেয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ। মা হারা মেয়েটি বাবরের বাসায় ১১ মাস আগে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল গোপনীয়তার সাথে ওয়ারিশবিহীন বলে এই গৃহ পরিচারিকা কিশোরীর লাশ ঢাকার খিলগাঁও এলাকা থেকে গাড়ীর পেছনে (ডিকিতে) করে এনে চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নে দাফন করা হয়েছিল। এর আগে ৬ এপ্রিল বিকেলে এই গৃহপরিচারিকা ঢাকায় মারা যায়। স্থানীয়দের মাঝে এই দাফন নিয়ে তখন থেকেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এরপর জানাজানি হলে ১২ এপ্রিল নিহত কিশোরীর বাবা খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে এই লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মার্জিনার বাবা মো. আবদুর রউফ বলেন, সবশেষ ঈদের ৪/৫ দিন আগে মেয়ের সাথে তার বোনের কথা হয়েছিলো। ঈদের পর সে বাড়িতে যাবার কথা ছিল। ১১ এপ্রিল আমরা মেয়ে মারা যাওয়ার খবর শুনে ঢাকায় সে বাসায় গেলে বাসা খালি দেখতে পাই। এরপর থানায় যোগাযোগ করে মামলা দায়ের করি। আমরা আদালতের কাছে আমার মা মরা মেয়ের এই হত্যার বিচার চাই।

মার্জিনার চাচা আবদুর রহমান বলেন, আমাদেরকে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে টাকার লোভ দেখানো হচ্ছে। আমরা যেন মামলা না করি। আমার ভাতিজিকে তারা খুন করে ফেলেছে। আমরা এর বিচার চাই।

রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ওয়ারিশ বিহীন লাশ হিসেবে মরদেহটি দাফন করা হয়েছিল। এরপর গত কয়েকদিন আগে খিলগাঁও থানা থেকে আমাকে ফোন করে এই কবরটি পাহারা দিতে বলা হয়। আমরা গ্রাম পুলিশ দিয়ে গেলো কয়েকদিন কবরটি পাহারা দিয়ে রাখি। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। এ সময় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ অভিযোগের বিষয়টি জানতে মাহাবুবুল হক চৌধুরী বাবরকে বারবার ফোন করা হলো তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এস এম জাহিদা আক্তার মৌসুমী ও মো. শাহাদত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাটখিল থানা পুলিশ ও খিলগাঁও থানার তদন্ত কর্মকর্তারা উপস্থিতিতে মরদেহদটি কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/এনজে

গৃহকর্মী লাশ উত্তোলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর