Thursday 24 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজার উন্মুক্তের দাবিতে মানবন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩৯ | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৪১

বৈদেশিক শর্ত মেনে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বন্ধ শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ইস্কাটন গার্ডেনস্থ প্রবাসী কল্যাণ ভবন প্রাঙ্গনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বায়রা’র সদস্যরা – ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বৈদেশিক শর্ত মেনে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বন্ধ শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা)।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ইস্কাটন গার্ডেনস্থ প্রবাসী কল্যাণ ভবন প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বায়রা’র কয়েকশ’ সদস্য অংশ নেন।

কর্মসূচি পালন শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে জনশক্তি রফতানি ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে স্বল্প ব্যয়ে নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে মালয়েশিয়াসহ সকল বন্ধ শ্রমবাজার খোলার ব্যবস্থা করা হোক। দেশ ও কর্মীদের সার্বিক স্বার্থে সরকার যে পদ্ধতিতে শ্রমবাজার উন্মুক্ত করবে, বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক হিসেবে সেটা যথাযথভাবে অনুসরণ করে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে বায়রার সদস্যরা।’

স্মারক লিপিতে বলা হয়, ‘বায়রার সদস্যরা প্রতি বছর ১০ লাখের বেশি কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান করে। এর মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার আয় করে তারা দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। সৌদি আরবের পর মালয়েশিয়া বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার। মালয়েশিয়া সরকারের অভ্যন্তরীণ নীতির কারণে গত বছর ৩১ মে থেকে সকল সোর্স কান্ট্রিতে কর্মী নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য উল্লেখযোগ্য গন্তব্যস্থল সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারসহ অনেক দেশে শ্রমবাজার বন্ধ আছে বা খুবই স্বল্প সংখ্যক কর্মী গমন করছেন। সেসব দেশে শ্রমবাজার বন্ধ বা সংকোচনের কারণ এবং বাজার উন্মুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসসমূহকে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আবশ্যক।’

বিজ্ঞাপন

এতে আরও বলা হয়, ‘সম্প্রতি ১৪টি সোর্স কান্ট্রি থেকে মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার জন্য আগামী ২১ মে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ মিটিং-এর পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এই শ্রমবাজার যখন খুলবে, ঠিক তখনি এক শ্রেণির সুবিধাভোগী ও নেতৃত্বলোভী বায়রা’র কিছু সদস্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি যাতে না খুলে সে ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দুই সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক, জয়েন্ট ওয়ার্কিং সভায় সম্মত কার্যবিবরণী এবং দু’দেশের আইন-কানুন মেনে বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মী গমণের পরও এই শ্রেণির ব্যক্তিরা মানব পাচার, মানি লন্ডারিং প্রভৃতি অভিযোগ তোলে। এক্ষেত্রে বায়রা’র একজন বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম গংরা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি বন্ধ রাখার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরা বিদেশগামী কর্মী ও দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে মালয়েশিয়া সরকার বিব্রত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য বাজার উন্মুক্ত করছে না। শ্রমবাজারটি বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে বন্ধ হয়ে গেলে দেশ ও কর্মীরা একটি সুবর্ণ সুযোগ হতে বঞ্চিত হবে।’

প্রসঙ্গত, সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের মতো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিএমইটি’র ছাড়পত্র নিয়ে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ করা হয়। এর আগে ২০১৭-১৮ সালে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের পর বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত হলে দুর্নীতি দমন কমিশন বিস্তারিত তদন্ত শেষে অভিযোগের প্রমাণ না পেয়ে তদন্ত সমাপ্তি ঘোষণা করে। একইভাবে মালয়েশিয়া সরকারও বিস্তারিত তদন্ত শেষে অভিযোগ সঠিক নয়- মর্মে মালয়েশিয়ার তৎকালীন মানবসম্পদ মন্ত্রী সে দেশের পার্লামেন্টে প্রতিবেদন পেশ করেন।

বিজ্ঞাপন

একইভাবে ২০২২-২৪ সালে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে দায়েরকৃত মামলা তদন্তের লক্ষ্যে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনুরোধের প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া সরকার জানিয়েছে যে, বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়ায় মানি লন্ডারিং বা মানব পাচারের মতো কোন অনিয়ম হয়নি। বৈধ অভিবাসনের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন অনিয়ম হয়নি- বলে সে দেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান ইতোমধ্যে সংবাদ মাধ্যমকে অবহিত করেছেন।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন আল সুপ্ত ওভারসীসের সত্ত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ মজুমদার, পূরবী ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, আর্থ স্মার্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, ইএমএস ইন্টারন্যাশনালের এএমএস সাগর, তাসনিম ওভারসীসের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, আল আকাবা এসোসিয়েটের মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বিশ্বাস, আল গিফারীর সাগর মাহমুদ, স্কাইল্যান্ড রিক্রুটিংয়ের মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, আরমান এয়ার ইন্টারন্যাশনালের এডভোকেট মোহাম্মদ সাজ্জাম হোসেন, ফ্রিডম ওভারসীসের কফিল উদ্দিন মজুমদার, এসএফ গ্লোবালের হাওলাদার ফোরকান উদ্দিন ও দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন প্রমুখ।

সারাবাংলা/ইউজে/আরএস

বায়রা মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার দাবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর