ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। অসদাচরণের অভিযোগের কারণে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধনের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।
শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করেন। স্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল— “এক, দুই, তিন, চার, রেজিস্ট্রার গদি ছাড়”, “দালালের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না”, “কুয়েট থেকে শিক্ষা নে, রেজিস্ট্রার পদ ছাইড়া দে” ইত্যাদি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন আবারও কিছু শিক্ষক ফ্যাসিস্ট আচরণ করছেন। শেখ হাসিনা ভারত থেকে শিক্ষকদের মদদ দিচ্ছেন বলেই মনে হচ্ছে। এমনই একজন শিক্ষক হলেন গিয়াস উদ্দিন। উনার অফিসে গেলে উনি অসন্তুষ্ট হয়ে পড়েন। আমরা এমন বদমেজাজি ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার হিসেবে মানি না।’
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব কিশোর সাম্য বলেন, ‘প্রশাসনের দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী সহযোগিতা না পেলে তিনি প্রশাসক হিসেবে অযোগ্য প্রমাণিত হয়। আমরা কলোনিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় চাই না, চাই একটি মেরুদণ্ডসম্পন্ন প্রশাসন। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কোনো ক্ষমা চাওয়ার বিবৃতি আসেনি, যা প্রমাণ করে প্রশাসনের দুর্বলতা।’
ছাত্র অধিকার পরিষদ জবি শাখার সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, ‘বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানোর কারণে। রেজিস্ট্রার ভুলে গেছেন আগের মতো ক্ষমতা দেখিয়ে কিছু হবে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে পদত্যাগ করতে হবে, না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে শহিদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে যায় ইভান তাহসিভসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সকল চুরির ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ নিয়ে যাওয়ার পরই তিনি এর সমাধান না করে উলটো অভিযোগকারীদের সঙ্গে উত্তেজিত হন এবং অসদাচরণ করে তাদের রুম থেকে বের করে দেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।