Tuesday 29 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশে চরম দরিদ্র বাড়তে পারে ৩০ লাখ: বিশ্বব্যাংক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:১১ | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:২৯

ঢাকা: চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্যের হার বাড়তে পারে। চরম দারিদ্র্যের বিদ্যমান হার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। এতে নতুন করে আরও ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের কবলে পড়তে পারে। আর শুধু অতি দারিদ্র্য হার নয়; জাতীয় দারিদ্র্য হারও বাড়তে পারে। জাতীয় দারিদ্র্য হার গত বছরে ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। ২০২৫ সালে তা বেড়ে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে।

সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘ম্যাক্রো পোভার্টি আউটলুক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকেও বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত: ২০২২ সালের জনশুমারি অনুসারে, দেশের সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। বিশ্বব্যাংকের হিসাব বিবেচনায় নিলে ২০২৫ সাল শেষে অতি গরিব মানুষের সংখ্যা হবে ১ কোটি ৫৮ লাখের মতো। অন্যদিকে জাতীয় দারিদ্র্য হার বা গরিব মানুষের সংখ্যা হবে প্রায় ৩ কোটি ৯০ লাখ।

সামগ্রিকভাবে দারিদ্র্যের হার বাড়ার পূর্বাভাস ব্যক্ত করে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ নানাবিধ কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এই সময় মানুষ যেমন কাজ হারিয়েছে, তেমনি তাদের মজুরি কমেছে। চলতি বছরে শ্রমবাজারের দুর্বল অবস্থা অব্যাহত থাকবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থান কমে যাওয়া স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর জীবনে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ফলে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা মানুষের প্রকৃত আয় কমতে পারে। এমতাবস্থায়, অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় প্রতি পাঁচটির মধ্যে তিনটি পরিবারকেই তাদের সঞ্চয় ভেঙে জীবন নির্বাহ করতে হতে পারে। তবে প্রবাসী আয় গ্রহণকারী পরিবারগুলো ভালো থাকবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, দু্র্বল শ্রম বাজার ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের শ্লথগতির কারণে ঝুঁকিতে থাকা গরিব মানুষের ওপর বেশি প্রভাব পড়ছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বৈষম্য আরও বাড়তে পারে। গত কয়েক বছর ধরেই এটি ঊর্ধ্বমুখী। চলতি অর্থবছরে জিনি সহগ শূন্য দশমিক ৫ পয়েন্টের কম বাড়তে পারে।

বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ৪ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। একই সময়ে স্বল্প দক্ষ কর্মীদের মজুরি ২ শতাংশ এবং উচ্চ দক্ষ কর্মীদের মজুরি শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।

সামষ্টিক অর্থনীতি প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের পূর্ভাবাসে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৪ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। সরকারের মূলধন ব্যয় সামগ্রিকভাবে কমে আসতে পারে, যদিও তার সুফল তেমন একটা মিলবে না বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। ভর্তুকি ও সুদ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতির অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগ, রপ্তানি ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়তে পারে। এর মধ্যে কিছু বাহ্যিক চাপ আংশিক প্রশমিত হয়েছে, যেমন ব্যালান্স অব পেমেন্ট ঘাটতি হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল হওয়া ইত্যাদি।

সারাবাংলা/আরএস

দারিদ্র হার বিশ্ব্যব্যাংক