‘গণপরিবহণে যৌন হয়রানি দেখলে প্রতিবাদ করুন’
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৩৯
ঢাকা: গণপরিবহণে যৌন হয়রানি দেখলে চুপ না থেকে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) শেখ মইনউদ্দীন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ভবনে নারীর জন্য নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত গণপরিবহণে নিশ্চিত করতে ‘হোল্ড দ্য বার, নট হার স্পেস’ শীর্ষক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
নারীর জন্য নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত গণপরিবহণ নিশ্চিত করতে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), ইউএন উইমেন বাংলাদেশ ও সুইডেন দূতাবাসের সহায়তায় ‘হোল্ড দ্য বার, নট হার স্পেস’ শীর্ষক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের সমতাভিত্তিক সমাজ গড়তে সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমঅধিকারের বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করি আমরা সফল হবো। কিন্তু সেক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘গণপরিবহণে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি রোধ করার দায়িত্ব সবার। অনেক সময় হয়রানি দেখলেও আমরা চুপ করে যাই, কিন্তু চুপ করে গেলে তো প্রতিকার হলো না। আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। পুরুষদের বুঝতে হবে, একে অপরের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। কারণ নারীদেরও সমাজে সমান অধিকার ও সম্মান প্রাপ্য রয়েছে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস বলেন, ‘এই ক্যাম্পেইন প্রতিটি যাত্রী, চালক, কন্ডাক্টর এবং নীতিনির্ধারকের প্রতি একটি আহ্বান। এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান, যেখানে হয়রানি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যেখানে নারী ও কন্যা শুধু চলাচলের যেকোনো গণপরিবহণে চলাচলের জন্য নিরাপদ ও স্বাগত বোধ করবে। এটা তার মানবিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার।’
ইউএন উইমেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেন, ‘এই ক্যাম্পেইনের সঙ্গে একটি সহজ কিন্তু শক্তিশালী সত্য জড়িত। নারী ও কন্যা যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় স্বাধীনভাবে, নিরাপদে এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চলাচলের অধিকার রাখে। সেটা ঢাকার মেট্রোরেল হোক, বাস হোক বা দেশের অন্য যেকোনো গণপরিবহণে। আমদের নিশ্চিত করা প্রয়োজন, এই ক্যাম্পেইন শুধু দৃশ্যমান নয়, বাস্তব কার্যক্রম, প্রতিরোধ এবং সুরক্ষার মধ্য দিয়ে যেন অনুভূত হয়।’
ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি যাতে এই ক্যাম্পেইনটি দৃশ্যমান এবং কার্যকরি হয়, যাতে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের বার্তাগুলো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে। আমি বিশ্বাস করি, বিআরটিসি, ঢাকা চাকা এবং নগর পরিবহণের কর্মীদের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তাদের মনোজগতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, বর্তমান সরকার এসেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। সেই অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করা। আজকে যদি নারীরা অনিরাপদ বোধ করে গণপরিবহণে, সেটাও তার প্রতি বৈষম্যমূলক। কারণ নিরাপদে সে তার গন্তব্যে যেতে পারছে না।
এর আগে ‘হোল্ড দ্য বার, নট হার স্পেস’ ক্যাম্পেইনের আওতায় গত ১৬ থেকে ২০ মার্চ গণপরিবহণে নারীদের যৌন হয়রানি রোধে বাসচালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ঢাকা চাকা, ঢাকা নগর পরিবহণ, বিআরটিসি ও হানিফ পরিবহণের ১৬০ জনেরও বেশি পরিবহণকর্মী নারীবান্ধব গণপরিবহণ গড়তে প্রশিক্ষণ পায়। তাদের হাতে সনদ তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দীন ওনিকোলাস উইকস।
সারাবাংলা/এফএন/এইচআই
গণপরিবহণ গণপরিবহণে যৌন হয়রানি নট হার স্পেস যৌন হয়রানি শেখ মইনউদ্দীন হোল্ড দ্য বার