হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ
সিএজি’র স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন, কর ফাঁকি-দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে: টিআইবি
২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৬ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৭
ঢাকা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক প্রণীত নতুন ‘সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ মহাহিসাব নিরীক্ষকের (সিএজি) স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ এবং একই সঙ্গে এটি কর ফাঁকি ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে- বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নতুন অধ্যাদেশ নিয়ে সংস্থার এক প্রতিক্রিয়ায় এমন উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে।
টিআইবি’র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ অধ্যাদেশে এমন কিছু বিধান রাখা হয়েছে, যা সিএজি’র সাংবিধানিক মর্যাদা খর্ব করবে এবং সরকারি অর্থব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিকে হুমকিতে ফেলবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এ অধ্যাদেশে সিএজি’র জন্য রাজস্ব নিরূপণ ও আদায় নিরীক্ষার সুযোগ রাখা হয়নি। এতে যেকোনো আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ও বিদেশি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের আগে সরকারের অনুমতি নেওয়ার বিধান এবং বিধি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। অধ্যাদেশে এ ধরনের মৌলিক দুর্বলতা বহাল রাখা সিএজির সাংবিধানিক মর্যাদাকে অবজ্ঞা ও প্রতিষ্ঠানটির মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিতে অনীহার সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। এসব বিধান সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সিএজিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে কার্যসম্পাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে এবং অধ্যাদেশে এসব বিধান রাখা স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবদুষ্ট ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য বিব্রতকর। এ ধরনের বিধান বহাল রেখে অধ্যাদেশটি কার্যকর ঘোষণা করা হলে সরকারের আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে সিএজির জন্য নিয়ন্ত্রণমুক্ত স্বাধীন ভূমিকা পালন করা সম্ভব হবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, অধ্যাদেশের ৭ ধারায় রাজস্ব নিরূপণ ও আদায় নিরীক্ষার ক্ষমতা সিএজির এখতিয়ার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি কর ফাঁকি ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে। রাজস্ব নিরূপণ ও আদায়ে অনিয়ম এবং যোগসাজশমূলক জালিয়াতি যে, বাংলাদেশে কর ফাঁকির অন্যতম মাধ্যম- তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেন উপেক্ষা করছে, তা বোধগম্য নয়। এ ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্বার্থান্বেষী মহল দ্বারা সরকার প্রভাবিত হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্ন তোলা মোটেই অমূলক হবে না।
এ ছাড়া অধ্যাদেশের ১৭ ও ১৮ ধারায় চুক্তি সম্পাদন ও বিধি প্রণয়নে সরকারের অনুমতির বাধ্যবাধকতা যুক্ত হওয়ায় সিএজির স্বাধীনতা সীমিত হয়ে পড়বে- বলে মনে করছে টিআইবি। সংস্থাটির মতে, এ ধরনের বিধান প্রতিষ্ঠানটির সাংবিধানিক মর্যাদাকে অবজ্ঞা করার শামিল।
সারাবাংলা/আরএস