দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি শিখতে বাংলাদেশে মালেয়েশিয়ান চিকিৎসক
২৫ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৫২
জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউটের অভিজ্ঞ সার্জন ডা. মো. মাহবুব আলমের সঙ্গে মালয়েশিয়ান চিকিৎসক ডা. বিনসেন্ট ট্যান
ঢাকা: বাংলাদেশে এসে সার্জারি শিখছেন মালয়েশিয়ান এক চিকিৎসক। দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারির প্রশিক্ষণ নিতে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছেন নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডা. বিনসেন্ট ট্যান। শেখার জন্য বেছে নিয়েছেন জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউটের অভিজ্ঞ সার্জন ডা. মো. মাহবুব আলমকে। কারণ এরইমধ্যে ড. মাহবুব আলম দাগবিহীন এন্ডোসকপি থাইরয়েড সার্জারিতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন।
জানা গেছে, কুয়ালালামপুরের বাসিন্দা ও কেপিজে ক্লাং বিশেষায়িত হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. বিনসেন্ট ট্যান এরইমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক ও থাইল্যান্ডের মতো দেশে এই সার্জারির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এবার আশার আলো নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। আর এই প্রশিক্ষণে তিনি বেছে নিয়েছেন জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউটের অভিজ্ঞ সার্জন ডা. মো. মাহবুব আলমকে।
ডা. ট্যান বলেন, ‘বাংলাদেশে এসে আমি মুগ্ধ। শুনেছিলাম, ডা. মাহবুব আলম দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারিতে দক্ষ—এখানে এসে নিজের চোখে দেখে সেটার সত্যতা পেলাম। বাংলাদেশে বড় থাইরয়েডেও দাগবিহীনভাবে অপারেশন হচ্ছে—যা সত্যিই অসাধারণ।’
১৪ দিনের প্রশিক্ষণে ডা. ট্যান শিখছেন এই নতুন প্রযুক্তি। প্রতিটি দিন কাজে লাগাচ্ছেন নিজের দক্ষতা বাড়াতে। তার ভাষায়, ‘যন্ত্রপাতি ও জনবলের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এখানকার চিকিৎসকরা যেভাবে কাজ করেন, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে—মালয়েশিয়ায় ফিরে গিয়ে আমিও পারবো এই সার্জারি করতে।’
জানতে চাইলে বাংলাদেশে দাগবিহীন এন্ডোসকপি থাইরয়েড সার্জারির প্রশিক্ষক ডা. মাহবুব আলম বলেন, ‘দেশের চিকিৎসকরা প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য বিদেশ যান। কিন্তু বিদেশ থেকে চিকিৎসক বাংলাদেশের এসেছেন থাইরয়েডের সার্জারি শিখতে। এটা আমাদের জন্য খুবই গর্বের বিষয় এবং বড় অর্জন। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে এবং সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। কিছুদিন আগে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল সিবিআর হার্ট অ্যার্টাক করেন, তাকে চিকিৎসা দিয়েছেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা। বাংলাদেশেও ভালো চিকিৎসা করা সম্ভব।’
জানা গেছে, বাংলাদেশে মোট পাঁচ কোটি মানুষ থাইরয়েডজনিত রোগে আক্রান্ত। তিন কোটি মানুষ জানেন না, তাদের এই সমস্যা আছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৩-৫ শতাংশ মানুষ থাইরয়েড সমস্যা নিয়ে ভোগেন। এরমধ্যে ২০২২ সালে ডা. মাহবুবের হাত ধরে দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হয় দাগবিহীন এন্ডোসকপি থাইরয়েড সার্জারি। এরপর থেকে দিন দিন রোগীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই পদ্ধতি। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারির প্রশংসা। এখন পর্যন্ত ১০০ জন রোগীর দাগবিহীন এন্ডোসকপি থাইরয়েড সার্জারি করেছেন ডা. মাহবুব।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এসআর