আইএমএফ’র সঙ্গে সমঝোতা না হলেও বড় কোনো সমস্যা হবে না: গভর্নর
২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:১১ | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০২
ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) এর ঋণ গ্রহণ খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়- বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, যদিও তাদের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এখনো আইএমএফ’র সঙ্গে কোনো চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাইনি, তবে আমাদের অবস্থান একেবারে দূরত্বেও নেই। যদি সমঝোতা না-ও হয়, তবুও বাংলাদেশের কোনো বড় সমস্যা হবে না। আমাদের অর্থনীতি স্বাভাবিকভাবেই চলবে।
ওয়াশিংটনে আইএমএফ’র সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সাক্ষাৎকারে গভর্নর এসব কথা বলেন। প্রদত্ত এ সাক্ষাৎকারটি শনিবার (২৬ এপ্রিল) তার নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইলেও পোস্ট করেন তিনি।
গভর্নর বলেন, আইএমএফ’র ব্যালান্স অব পেমেন্ট সহায়তা না পেলেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। এটা শুধুমাত্র একটি অতিরিক্ত সুবিধা, যদি না পাই, তাও সমস্যা হবে না। আমাদের রিজার্ভ এখন ভালো অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, আইএমএফ’র সঙ্গে আলোচনার মূল বিষয় হলো সংস্কার— আর্থিক খাতের সংস্কার, কর ব্যবস্থার সংস্কার। অর্থ (ঋণ) মূল উদ্দেশ্য নয়। আমাদের নিজেদের ব্যাংক খাত ও বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সংস্কার করতে হবে এবং আইএমএফ শুধু সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আর্থিক খাতে সংস্কারের প্রকৃত লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক খাতকে রাজনৈতিক চাপ থেকে মুক্ত রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।যদি মনে করি ঋণ আমাদের সহায়ক নয়, তবে আমরা নেব না। আমরা শ্রীলঙ্কা হইনি, পাকিস্তানও হইনি। আমাদের এখন কোনো চাপে পড়ে ঋণ নিতে হচ্ছে না। ছয় মাস আগে হয়তো এমন অবস্থা ছিল, কিন্তু এখন নয়।
আইএমএফ’র সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, প্রধানত মুদ্রার বিনিময় হার এবং রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। রাজস্বের বিষয়ে মোটামুটি সমঝোতা হয়েছে। মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো— বাজার এখন স্থিতিশীল, ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে না।
পূর্ববর্তী সরকারের আমলে অর্থ পাচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রায় ২৪-২৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। যদি কিছু (আইএমএফের ঋণ) সহায়তা পাইও, কয়েক বিলিয়নের বেশি পাব না। তাই সংস্কারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যান্য দাতা সংস্থার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো অতিরিক্ত শর্ত থাকে না, তবে বাজেট সহায়তা ঋণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শর্ত থাকে।
প্রসঙ্গত: আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির অধীনে ইতোমধ্যে ২৩১ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে। আরও ২৩৯ কোটি ডলার পাওয়ার কথা রয়েছে।