সৈয়দপুরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা
২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:০০
নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে মাহমুদ (৪৫) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৭ এপ্রিল) শহরের সাহেবপাড়া আমিন মোড় ক্যান্টিন রোড এলাকার লিচু বাগানে নিহতের শ্বশুরবাড়ি সংলগ্ন রেলওয়ের এল-২৫ নম্বর বাংলোতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাহমুদ সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল্লাহর ছেলে। পেশায় তিনি একজন ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি ছিলেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহে জর্জরিত ছিলেন মাহমুদ। একাধিকবার স্ত্রী ইয়াসমিন এবং শ্যালকদের সঙ্গে তার মারামারি ও মামলা-মোকদ্দমার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) তাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাহমুদের এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি জানান, বিয়ের পর থেকেই মাহমুদ তার স্ত্রী ও শ্যালকদের দ্বারা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিলেন। মিথ্যা মামলায় হয়রানি করাসহ প্রায়ই তাকে হেনস্থা করা হতো।
তিনি আরও জানান, ঘটনার আগের রাতেও মাহমুদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার দিন মাহমুদের স্ত্রী তাকে না জানিয়েই তার ভাই সাদ্দামের সঙ্গে এক আত্মীয়ের বিয়েতে যান। পরে দেরীতে বাসায় ফেরার কারণে মাহমুদ তাকে ঘরে ঢুকতে দেননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রী ও শ্যালকরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মাহমুদকে মারধর করেন।
ঘটনার সময় ধারণ করা একটি ছবিতে দেখা যায়, মাহমুদের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় আছে যেখানে তার পা মাটির সঙ্গে লেগে আছে, যা আত্মহত্যার দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। নিহতের স্বজনদের দাবি, মাহমুদকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা মাহমুদের মরদেহ ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, মাহমুদের শ্যালকরা বিভিন্ন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে পুলিশকে চাপ দিচ্ছে যেন ময়নাতদন্ত না করা হয়।
অন্যদিকে, মাহমুদের বড় শ্যালক সাদ্দাম এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মাহমুদের সঙ্গে তার স্ত্রী ইয়াসমিনের মনোমালিন্য ছিল। মাহমুদ মাদকাসক্ত ছিলেন এবং পূর্বে পরকীয়াতেও জড়িয়েছিলেন। আমরা তাকে বাড়ি করে দিয়েছিলাম। তার আত্মহত্যার ঘটনায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট করার পরে মরদেহ নীলফামারী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্তের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এসডব্লিউ