ভাতা ও নগদ সহায়তা উত্তোলনে এমএফএস সার্ভিস চার্জ কমছে
২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:১১ | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৪৮
ঢাকা: সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা ও অন্যান্য নগদ সহায়তা (গভর্মেন্ট টু পারসন-জি টু পি) উত্তোলনে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) ক্যাশ আউট চার্জ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিদ্যমান ক্যাশ আউট চার্জ হার শূন্য দশমিক ৭০ টাকা থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন এ হার কার্যকর হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্যান্য নগদ অর্থ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিতরণের ক্ষেত্রে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/সংস্থা এ অভিন্ন ক্যাশ আউট চার্জ অনুসরণ করবে। একই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতার উপকারভোগীরা নিজেরাই এখন থেকে ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক নির্বাচন করতে পারবেন।
সম্প্রতি অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো: খায়েরুজ্জামান মজুমদারের পাঠানো এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত মার্চে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা ও অন্যান্য নগদ সহায়তা জি টু পি পদ্ধতিতে বিতরণে বিদ্যমান ক্যাশ আউট চার্জ যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছিল। সে পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্যান্য কার্যক্রমের নগদ অর্থ জি টু পি পদ্ধতিতে বিতরণের বিষয়ে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে- সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্যান্য নগদ অর্থ বিতরণের ক্ষেত্রে উপকারভোগী নিজে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান/ ব্যাংক নির্বাচন করবে। এ ক্ষেত্রে বিতরণকারী মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/ দফতর/ সংস্থার কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান/ব্যাংকের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া সমীচীন হবে না বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্যান্য নগদ অর্থ ক্যাশ আউট চার্জসহ একসাথে প্রেরণ করা সমীচীন হবে। নগদ অর্থ বিতরণের ক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান/ ব্যাংক উপকারভোগীর ওপর কোনোরূপ চার্জ আরোপ করতে পারবে না এবং ইএফটি রিটার্নের ক্ষেত্রে ক্যাশ আউট চার্জসহ সরকারকে ফেরত প্রদান করতে হবে। উপকারভোগীর কাছে প্রেরিত ইএফটির রিয়াল টাইম ট্রাকিংয়ের জন্য অর্থ বিভাগের সিঙ্গেল রেজিস্ট্রি সিস্টেমের সাথে প্রত্যেক মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের এপিআই সংযোগ স্থাপন করতে হবে। এপিআই সংযোগ স্থাপনের সময়সীমা আগামী ২৯ মে তারিখ নির্ধারণ করা যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করা হয়।
সিদ্ধান্তগুলো একটি পরিপত্র জারির মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্যান্য কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অবহিত করার কথাও অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিদ্যমান ব্যবস্থার আওতায় দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ অর্থ লেনদেনের সেবা নিচ্ছে। কিন্তু এ সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর চার্জ এবং সেবার মান এবং গ্রাহক হয়রানির বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গ্রাহকসেবা এবং নির্ঝঞ্ঝাট সেবা নিশ্চিত করতে এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সূত্র জানায়, গত সরকারের সময়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’কে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা দেয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে উপকারভোগীদের কোনো পছন্দকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এখন তারা নিজেরাই পছন্দ করবে কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা এই ভাতা পেতে চান। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একধরনের প্রতিযোগিতার মনোভাব গড়ে উঠবে এবং তারা গ্রাহক ধরতে বিভিন্ন অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করতেও বাধ্য হবে।
সারাবাংলা/আরএস