চট্টগ্রামে ২ শিল্পপতির কারাদণ্ড, ২০ কোটি টাকা জরিমানা
২৮ এপ্রিল ২০২৫ ২০:১৬ | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ২২:৪৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আলোচিত ঋণখেলাপি দুই শিল্পপতি ভাইকে ব্যাংকের সঙ্গে চেক প্রতারণার একটি মামলায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাদের ২০ কোটি টাকা জরিমানা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) চট্টগ্রামের চতুর্থ যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ মুহাম্মদ আবু আমর এ রায় দেন। রায়ে দণ্ডিত দুজন হলেন- মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী ও তার ভাই মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী। তারা চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী হাবিব গ্রুপের কর্ণধার।
সেই গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হাবিব স্টিল লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে ইয়াকুব আলী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে ইয়াসিন আলী মার্কেন্টাইল ব্যাংকের করা এ মামলার আসামি হয়েছিলেন।
মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা গেছে, হাবিব স্টিলের নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের নগরীর আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন শিল্পপতি ইয়াকুব আলী ও ইয়াসিন আলী। ঋণের বিপরীতে ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার হিসাব নম্বরের নামে ২০ কোটি টাকার একটি চেক জমা দেওয়া হয়েছিল। পরদিন মার্কেন্টাইল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চেকের বিপরীতে টাকা নগদ করার জন্য সেটি ন্যাশনাল ব্যাংকে জমা দেয়।
কিন্তু অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে চেকটি ডিজঅনার হয়। ৫ সেপ্টেম্বর মার্কেন্টাইল ব্যাংকের আইনজীবী নুসরাত আরা হীরা এ বিষয়ে ঋণগ্রহীতাদের কাছে আইনি নোটিশ পাঠান। ৭ সেপ্টেম্বর তারা নোটিশ গ্রহণ করলেও হিসাব নম্বরে পর্যাপ্ত টাকা জমা দিয়ে চেকটি ডিজঅনারের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি। এ অবস্থায় মার্কেন্টাইল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর চট্টগ্রামের একটি আদালতে ঋণগ্রহীতা দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলা করেন।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের আইনজীবী নুসরাত আরা হীরা সারাবাংলাকে জানান, আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। কিন্তু আসামিরা আদালতে হাজির হননি। এর পর ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি চতুর্থ যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে। ৩১ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্কের পর আদালত দুই আসামিকে সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত দুই আসামি ইয়াকুব আলী ও ইয়াসিন আলী পলাতক আছেন বলে আইনজীবী জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দেশের বেসরকারি খাতের আলোচিত বিমান সংস্থা রিজেন্ট এয়ারওয়েজসহ ২১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল হাবিব গ্রুপের। এসব প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগ আছে এ শিল্পগ্রুপের বিরুদ্ধে।
করোনাকালে হাবিব গ্রুপের ব্যবসায় লোকসান শুরু হয়। গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, এর মধ্যেই বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা পরিশোধ না করে বিদেশে পালিয়ে যান এ দুই শিল্পপতি ভাই।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম