আন্তজার্তিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর দাবি ফ্রিল্যান্সার ও আইটি পেশাজীবীদের
২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৩৮ | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৫৪
ঢাকা: বাংলাদেশে আন্তজার্তিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর দাবি জানিয়েছেন ফ্রিল্যান্সার ও আইটি পেশাজীবীরা। এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দফতরে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ সম্মেলনে এসব তুলে ধরেন তারা।
এ সময় পে-পল, ওয়াইস ও স্ট্রিপের মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে বাংলাদেশে চালুর প্রযোজনীয়তা তুলে ধরে ফ্রিল্যান্সার ও আইটি পেশাজীবীরা বলেন, এটি চালু না করা হলে ক্রেতাদের প্লাটফর্ম হারাবেন তারা।
তারা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি সক্রিয় ফ্রিল্যান্সার ও আইটি উদ্যোক্তা রয়েছেন, যারা প্রতি বছর একটি বড় অংকের বৈদেশিক মুদ্রা রেমিটেন্সে যুক্ত করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু এখনো বাংলাদেশে পে-পল, ওয়াইস ও স্ট্রিপের মতো জনপ্রিয় পেমেন্ট সেবাগুলো চালু হয়নি, যার ফলে দেশের তরুণ উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সাররা আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বড় ধরণের সীমাবদ্ধতায় পড়ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও আইটি খাতের অগ্রগতির জন্য আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমের সহজলভ্যতা তুলে ধরা হয়।
সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি উদ্যমী ও প্রযুক্তিনির্ভর তরুণ প্রজন্ম গড়ে উঠেছে, যারা সঠিক সহায়তা ও সুযোগ পেলে গ্লোবাল টেক ইন্ডাস্ট্রিতে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। এ ছাড়া ৩ দশমিক ২ শতাংশ গ্লোবাল মার্কেট শেয়ার নিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম ফ্রিল্যান্সিং শক্তি যা আমাদের ডিজিটাল সামর্থ্যের একটি শক্ত বার্তা বহন করে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন, থ্রি-জিরো খিওরি শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নির্গমনে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি। তবে পে-পল, ওয়াইস, স্ট্রিপের ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের অনুপস্থিতি আমাদের এই পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক অর্থ গ্রহণে চরম জটিলতা ও সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশের অসংখ্য দক্ষ তরুণ ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তা বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের সুবিধা চালু হলে থ্রি-জিরো খিওরির বাস্তবায়ন আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে সম্ভব হবে।
ফ্রিল্যান্সার ও আইটি পেশাজীবীরা বলেন, বিশ্বজুড়ে যখন রিমোট কাজের মাধ্যমে আয় বাড়ছে, তখন বাংলাদেশে পেমেন্ট সমস্যার কারণে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।
ফ্রিল্যান্সার আতাউর রহমান বলেন, পেমেন্ট গেটওয়ে না থাকার কারনে ক্রেতাদের ভিন্ন মার্কেটে নিয়ে যাচ্ছে অন্য দেশ এবং অন্য কোম্পানিগুলো। ক্রেতা কিন্তু সেখানে সেট হয়ে যাচ্ছে। যদি দেশের নিজস্ব মার্কেট প্লেজ থাকতো তাহলে ক্রেতাদের সম্পৃক্ত করা যেতো তাহলে এটা হতো না।
এরইমধ্যে স্টার লিংক অনুমোদন পেয়েছে আমরা বিশ্বাস করি সরকারের উদ্যোগে আন্তজার্তিক গেটওয়েও বাংলাদেশে চালু হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দেশের আইটি কমিউনিটির পরিচিত প্রতিনিধি গ্রাফিক্স ডিজাইনার এমরাজিনা ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এইচ এম ওসমান শাকিল, গোলাম কামরুজ্জামান, আতিকুর রহমান, সুমন সাহা, মিনহাজুল আসিফ, রাসেল খন্দকার, সাজিদ ইসলাম প্রান্তসহ দেড় শতাধিক আইটি ও ফ্রিল্যান্স পেশাজীবী।
উল্লেখ্য, পেমেন্ট গেটওয়ে এমন একটি অনলাইন সিস্টেম যার মাধ্যমে একজন গ্রাহক তার ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যে কোনো জায়গা থেকে সশরীরে না এসে পেমেন্ট করতে পারবে। সরাসরি কাস্টমারদের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের যোগাযোগের দরকার হয় না এবং এই পেমেন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি টাকা তোলা যাবে। উন্নত দেশে সকল প্রকার কেনা-বেচা এখন অনলাইনে হয়ে থাকে এবং সব প্রকার পেমেন্ট তারা অনলাইনে নিয়ে থাকে।
সারাবাংলা/জেআর/ইআ