ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের সমাবেশ পণ্ড, গ্রেফতার ৩
২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:০৪ | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের একটি সমাবেশ পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। এ সময় সেখান থেকে ‘রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ’ চট্টগ্রাম শাখার আহ্বায়ক আল কাদেরী জয়সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সোয়া ১১টার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট মোড়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
সংগ্রাম পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, পুলিশের হামলায় তাদের অন্তঃত পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, সমাবেশের নামে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করায় তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আল কাদেরী জয়ের সঙ্গে মিরাজ উদ্দিন ও রূপন নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছে। আল কাদেরী জয় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) চট্টগ্রাম জেলা ইনচার্জ এবং মিরাজ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি পদে আছেন।
গত ১৮ এপ্রিল বৃষ্টির মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর কাপাসগোলায় হিজড়া খালের সঙ্গে লাগোয়া নালায় ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা পড়ে গিয়ে ছয় মাসের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নগরীতে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের জন্য পুলিশকে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান। এরপর গত এক সপ্তাহে নগর পুলিশ নগরীজুড়ে অটোরিকশার বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে নামে। তিন হাজারেরও বেশি অটোরিকশা আটক করে ডাম্পিং স্টেশনে রাখে পুলিশ।
এর প্রতিবাদে গত ২৩ এপ্রিল দুপুরে ‘রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ’র ডাকে নগরীর চান্দগাঁও থানার বাহির সিগন্যাল এলাকায় সড়ক অবরোধ শুরু করেন চালকরা। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশসহ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় চান্দগাঁও থানা পুলিশ ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালককে গ্রেফতার করেছে।
এরপর ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ ও গ্যারেজে হয়রানি বন্ধ, হামলা-নির্যাতন বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সকালে নগরীর দেওয়ান হাট মোড়ে সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি আয়োজন করে ‘রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ’ চট্টগ্রাম শাখা।
সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মনির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ১০০ থেকে ১৫০ জন মাত্র রাস্তার পাশে মানববন্ধনের মতো করে জড়ো হয়েছি। আমরা সড়কে যাইনি, কোনো বিশৃঙ্খলাও করিনি। সরকার কিংবা পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো স্লোগানও দিইনি। কিন্তু অতর্কিতে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা শুরু করে। আমাদের কাছ থেকে মাইক-ব্যানার কেড়ে নিয়ে নির্বিচারে লাঠিপেটা করে। আহত হয়ে অনেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে নানাদিকে চলে গেছে। সবার খবর এখনও পাইনি। তবে আহত পাঁচজনকে আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। আহত আরও বাড়তে পারে।’
ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রাম পরিষদের নেতা আল কাদেরী জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রূপনকে আটক করে ডবলমুরিং থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান মনির হোসেন।
জানতে চাইলে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের নামে কিছু ব্যক্তি সড়ক অবরোধ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন। আমরা যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হালিশহর থানায় দায়ের হওয়া একটি নিয়মিত মামলার আসামি। ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।’
সারাবাংলা/আরডি/এমপি