রাজবাড়ীতে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের অভিযান
২৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:০২
রাজবাড়ী: রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে একটি নির্মাণাধীন রাস্তার কাজের প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার আবুল বাশারের নেতৃত্বে একটি দল প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এসে অভিযান শুরু করেন এবং যে রাস্তার কাজ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল সরেজমিনে দুদক তা পরিদর্শন করে।
গোয়ালন্দ এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চর দৌলতদিয়া হাট থেকে লাল মিয়া মৃধা পাড়া ভায়া জয়নাল মৃধার বাড়ি পর্যন্ত ১৪১৫ মিটার রাস্তার নির্মাণকাজ গ্রাম সড়ক পুনর্বাসন প্রকল্পের (ভিআরআরপি) আওতায় চলমান রয়েছে। নির্মাণের জন্য প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৫৬ হাজার ১৬৫ টাকা। পরে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫৬ টাকা চুক্তি মূল্যে কাজটি পায় মেসার্স লুপিন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ৭ জুনের মধ্যে। যা বাস্তবায়ন করে উপজেলা এলজিইডি। কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে সড়কটি নির্মাণে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। নিম্নমানের খোয়া দিয়ে সড়ক নির্মাণ করলে এলাকাবাসী বাধা দেয়। পরে উপজেলা এলজিইডি সড়কের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করে দেন।
দুদক ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার আবুল বাশার সাংবাদিকদের বলেন, রাস্তা নির্মাণ কাজের বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজকে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান, উপজেলা এলজিডি ও এলাকাবাসীর সামনে রাস্তাটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং থিকনেস এর পরীক্ষা করি। রাস্তার নির্মাণকাজ প্রকল্প সম্পর্কে জানাতে এলজিইডির নির্মিত কোনো সাইনবোর্ড নেই। এ ছাড়া ঠিকাদার নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলেন। সেটা প্রকৌশলী ও এলাকাবাসীর বাধাতে ব্যবহার করতে পারেনি। আমার সামনেই সেটা সরিয়ে নিয়েছে।
দুদুকের এই সহকারী পরিচালক বলেন, রাস্তার নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদারকে এখনো চূড়ান্ত বিল দেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত অর্ধেক বিল দেওয়া হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, এর আগে এটা এইচবিবি রাস্তা ছিল। এইচবিবি রাস্তা হওয়ার কারণে যে ইটটা আগে ছিল এটাও এই রাস্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই ইট বাবদ ৪৮ লাখ ৪ হাজার ৩০৭ টাকা ইস্টিমেটে ধরা আছে। এই টাকাটা বাদ দিয়ে ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে। কাজ শেষ হলে চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হবে। এই রাস্তা নির্মাণের অবশিষ্ট কাজ যেন সঠিকভাবে হয় তার জন্য ঠিকাদার ও উপজেলা এলজিইডিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গোয়লন্দ উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল জাহাঙ্গীর স্বপ্নীল বলেন, পাকা রাস্তার নির্মাণ কাজের নথিপত্র খতিয়ে দেখেছে দুদক। তাদেরকে সেই নথির ফটোকপি দেওয়া হয়। এরপর সরেজমিনে যেতে চান তারা। সেখানে তাদের নিয়ে গেলে তারা রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ এবং থিকনেস পরীক্ষা করে। পরে তারা সম্পূর্ণ রাস্তাটি পরিদর্শন করেন।
সারাবাংলা/এইচআই