সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় আনার সুপারিশ ইসির
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ২২:৫১
ঢাকা: আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্রবাহিনী যোগ করার সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দীর্ঘ ১৫ বছর পর ফের এই সুপারিশ করল ইসি। ফলে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের জন্য আর সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হবে না।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে এসংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মার্চের মাঝামাঝি পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্য থেকে ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো’ ‘অতি জরুরি ভিত্তিতে’ নির্ধারিত ছকে পাঠাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুরোধ করেছিল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পাঠানো চিঠির উত্তরে এমন সুপারিশ করেছে ইসি।
স্বাধীনতার পর থেকে ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী ছিল না। এর পর সেটি যোগ করা হয়। পরবর্তী নির্বাচনের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ২০০৯ সালে সংজ্ঞা থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে বাদ দেওয়া হয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, তখন থেকে এই বাহিনীকে ভোটের দায়িত্বে কাজে লাগাতে সরকারের কাছে চাইতে হয়। এর পর সরকার ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’র অধীনে সেনা মোতায়েনের অনুমতি দেয়। ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’র অধীনে মাঠে নেমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনায় দায়িত্ব পালন করে সশস্ত্রবাহিনী। নতুন করে সংশোধনী আনা হলে ইসির নির্দেশনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার চাহিদা অনুযায়ী নিয়োজিত করা যাবে।
এর আগে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে সংশোধনীটি ফেরানোর দাবি তুললেও আগের তিনটি কমিশন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন সংস্কার কমিশন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করলে, বর্তমান এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন বিধানটি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। ফলে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাব, আনসার, বিজিবি, কোস্ট গার্ডের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীও যুক্ত হবে।
জানা গেছে, সরকারের কাছে আশু বাস্তবায়নযোগ্য নয়টি সুপারিশ করেছে ইসি। এর মধ্যে চারটি সুপারিশ ইসি নিজেই বাস্তবায়ন করবে। অন্যগুলো ইসি এবং আইন ও সংসদবিষয়ক বিভাগ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশের সঙ্গে ভিন্নমত ছিল নির্বাচন কমিশনের। ১৮ মার্চ দ্বিমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়। পরে সরকারের তরফ থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে প্রস্তাব চাওয়া হয়।
এরই অংশ হিসেবে বুধবার রাজনৈতিক ঐকমত্য, আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে ভোটের আগে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আইন সংশোধন করা সম্ভব এমন বিষয়গুলো তুলে ধরেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
সারাবাংলা/এনএল/পিটিএম