আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস: অধিকার আদায়ে রাজধানীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
১ মে ২০২৫ ১৪:২৮ | আপডেট: ১ মে ২০২৫ ১৬:০৩
ঢাকা: কেউ চান বকেয়া বেতন, কেউ চাকরির নিশ্চয়তা আবার কেউ চান কাজের নিরাপত্তা। নিজ নিজ অধিকারের কথা তুলে ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হাজির হন নানা পেশাজীবিরা। স্টেডিয়ামের সামনে সমাবেশ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন অটোটেম্পো, অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার (১ মে) আন্তজার্তিক শ্রমিক দিবসে বিগত কয়েক বছরের অন্যায় অবিচারের কথা তুলে ধরে বর্তমান সরকারের কাছে বৈষম্য দূর করার দাবি জানান শ্রমিকেরা।
তারা বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যে নির্যাতন আর বৈষম্যের শিকার হয়েছি তা কোনো পেশার শ্রমিকেরা হয়েছে কিনা জানি না। ঢাকা শহরের আয়তন বেড়েছে, লোক বেড়েছে অথচ সিএনজির সংখ্যা বাড়েনি। বহু আগে পাঁচ হাজার সিএনজির অনুমোদন দেওয়া হয় কিন্তু আমরা চাই ৩০ হাজার গাড়ি দিতে হবে। এটা হলে অনায়াসে যাত্রীসেবা দিতে পারবো। তখন অন্যায়ভাবে আর ভাড়া নেওয়া হবে না।’
বক্তারা বলেন, ‘একটি গাড়ির জমা ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা জমা নেয়। ওই টাকা যাত্রীর পকেট থেকেই আমাদের তুলতে হয়। এতে যাত্রীরা সিএনজি বিমুখ হয়ে পড়েছেন। যারা যাচ্ছেন বাধ্য হয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতি আমরা চাই না।’
তারা আরও বলেন, ‘গাড়ি অনুমোদন দেয়না, চালকদের নিবন্ধনের সুযোগ দেয়না আবার একটা গাড়ির দাম ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে রেখেছে। এই সমাজে এই শহরে এই খরচ দিয়ে আমাদের মতো শ্রমিকেরা টিকে থাকতে পারে?’
সমাবেশ শেষে তারা শোভাযাত্রা বের করেন। সিএনজির ওপরে শ্রমিক দিবসের লাল পতাকা বেঁধে শত শত সিএনজি এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয় শোভাযাত্রা।
শ্রমিক দিবসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বিএডিসি’র অনিয়মিত শ্রমিকেরা। চাকরি স্থায়ীকরণ, বেতন বৈষম্যসহ নানা দাবি তুলে ধরেন তারা। মানববন্ধন শেষে শোভাযাত্রা বের করেন এবং বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পল্টনে শ্রমিক দিবসের আলোচনা সভা ও সমাবেশের আয়োজন করে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। সেখানে বক্তারা শ্রম আইনের শ্রমিকবিরোধী সকল ধারা বাতিল করে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। রাজধানীর প্রেসক্লাবে বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন আয়োজিত শোভাযাত্রায় শ্রমিকদের বৈষম্য দূর করার দাবি জানান।
সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক লিডিয়া ইয়াসমিন সিলভা বলেন, ‘আমরা শ্রম কমিশনের দাবি জানাই। এরইমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা লিখিত দিয়েছি। সেখানে আমরা বলেছি শ্রম কমিশনের এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা হবে।’ ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা করার দাবি জানান তারা।
তারা আরও বলেন, ‘যে ৯ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা এখনো কার্যকর করা হয়নি। আমরা চাই এটা সকল কারখানায় কার্যকর হোক।’ বক্তারা আরও বলেন, ‘বন্ধ মিল কারখানা পরিশোধ করা হোক।’
শ্রমিক দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ছিলো ‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে, গড়বো এ দেশ নতুন করে।’
সারাবাংলা/জেআর/এসডব্লিউ