‘পুঁজিবাজারে লোক বদল করে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করতে চাই না’
১ মে ২০২৫ ১৬:৪২ | আপডেট: ১ মে ২০২৫ ১৯:২৯
ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি‘র) কাজ স্টক মার্কেটের সূচক উঠানামা করানো না। সূচক কমলো কেন কিংবা সূচক বাড়লে, কেন? এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা কোনোভাবেই যুক্তসঙ্গত নয়। আমাদের এই ধরনের চর্চা বন্ধ করতে হবে।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘পুঁজিবাজারে আমরা এই মুহূর্তে লোক বদল করে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করতে চাই না। সমস্যার সমাধান না করে শুধু লোক বদল করে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হবে না। এ কারণে আমরা সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার পথে রয়েছি। তবে চাইলেও আমরা রাতারাতি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। কারণ, সব সিদ্ধান্তের একটা ভালো-খারাপ দিক থাকে। এ জন্য আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করে কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে চাই।’
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে পুঁজিবাজার নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ফারজানা লালারুখ, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট‘স ফোরাম (সিএমজেএফ) সভাপতি গোলাম সামদানী উপস্থিত ছিলেন।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের প্রতি আমাদের যথেষ্ট সহানুভূতি ও সহমর্মিতা রয়েছে। পুঁজি হারিয়ে তারা বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, বিষয়টি আমরা উপলব্ধি করছি। তারপরেও বলব, বিনিয়োগকারীদের রাস্তায় নেমে কারণে অকারণে বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করা কোনো সমাধান হতে পারে না। আর এই ধরনের দাবি আমলে নেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। সরকার সব সময় কমিশনের কার্যক্রমে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, যাতে করে একটি ভালো পুঁজিবাজার পেতে পারি।’
পুঁজিবাজারে সূচক খুব দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি এখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। বিদেশি ঋণ পরিশোধসহ অর্থনীতিতে অনেক ইতিবাচক ঘটনা ঘটছে। এসবের প্রভাব শিগগিরই পুঁজিবাজারে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য বেশ কিছু প্রণোদনা থাকবে। ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনতে করছাড় সুবিধা দেওয়া হবে। তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে করহারের ব্যবধান বাড়ানো হবে।’ তবে করহারের ব্যবধান কত বাড়ানো হবে, তা এখনই বলছেন না জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিএসইসির পক্ষ থেকে এ ব্যবধান বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে।’
দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন যাতে ব্যাংকের বদলে পুঁজিবাজার থেকে হয়, সে জন্য নতুন বিধান করা যায় কিনা, তা–ও বিবেচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বহুজাতিক যেসব কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার রয়েছে, সেগুলোকে এবং সরকারি-বেসরকারি কিছু ভালো কোম্পানিকে বাজারে আনতে চাই।’
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানি, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা এবং টেক্সটাইল ও ওষুধ খাতের দেশি লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে।’
যেসব কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করার জন্য আকর্ষণীয় করছাড় দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে ব্যাংক খাত থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ সীমিত রাখা এবং পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/জিএস/এইচআই
পুঁজিবাজার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিএসইসি