রোহিঙ্গাকে জন্মসনদ দেওয়ার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
২ মে ২০২৫ ১৮:৩৬
কুমিল্লা: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় রোহিঙ্গা নারীকে জন্ম সনদ প্রদান করার অভিযোগে চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহেরকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদ এলাহির সই করা চিঠির মাধ্যমে এই বহিস্কার আদেশ দেওয়া হয়।
তৌহিদ এলাহি তার সই করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করেন, ‘চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (নিবন্ধক) মো. আবু তাহেরের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গার অনুকূলে জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যুকরন ও নিজের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড অন্য ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর, সচেতনতার অভাব, দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অবহেলার অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় রেজিস্টার জেনারেলকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করা হয়েছে।’
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ‘চেয়ারম্যান আবু তাহের কর্তৃক সংগঠিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যান আবু তাহেরকে স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১১ জুন ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ভিয়েতনাম যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ হুমায়রা ও শারিমন আক্তার নামে দুইজন রোহিঙ্গা নারীকে আটক করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে ১৫ জুন কুমিল্লার ডিএসবি’র উপ পরিদর্শক ইমাম হোসেন বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরই ২৭ জুন থানা পুলিশ হুমায়রা ও শারমিন আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠান। এরপরই জানা যায় এই দুই রোহিঙ্গা নারী উপজেলার ১১ নং চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের ডিমাতলী গ্রামের মৃত কাজী শামছুল হকের ছেলে কাজী খবির উদ্দিন এই দুই নারীর পিতা সেজে ঐ ইউনিয়ন থেকে দুইটি জন্ম সনদ তৈরি করে। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরি করে ভিয়েতনাম পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুর ঘটনাটি জন্ম নিবন্ধন শাখার রেজিস্টার জেনারেল আমাকে কারন দর্শানোর নোটিশ করলে আমি তার সঠিক জবাব প্রদান করি। এ ছাড়াও জন্ম সনদ গ্রহীতার পিতা কাজী খবির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ডিএসবি মামলা দায়ের করেছিলো। সেই মামলায় পুলিশ তাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। পুলিশ চার্জশিটে আমাকে স্বাক্ষী করেন। তারপরও আমাকে স্থানীয় সরকার ইউপি শাখা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
সারাবাংলা/এনজে