Sunday 15 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাওরে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়

আল হাবিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩ মে ২০২৫ ০৮:০০

হাওরে ধানকাটা শেষ। ছবি: সারাবাংলা

সুনামগঞ্জ: জামালগঞ্জের মাঠে যেন সোনা ছড়ানো। যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই চোখে পড়ে বিস্তৃত সোনালি ধান। যেন ফসলের জমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব। বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে চলছে নতুন ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজ। তবে এসবের মাঝেও কৃষকদের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাজ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কায় কৃষকদের মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক। ঝড়, শিলাবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ চোখ রাঙ্গাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপকে। কখন যেন চুরমার করে দেয় সেই স্বপ্ন।

জানা যায়, অনুকূল আবহাওয়া ও রোগ বালাই না থাকায় এবার জামালগঞ্জ উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে এ বছর ২৪ হাজার ৫০৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাওরের ১৭ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমি এবং হাওরের বাইরে ৬ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করেছে কৃষকেরা। এরই মধ্যে নতুন ধান বাজারে উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতিমণ মোটা ধান ৯০০ টাকা আর চিকন ধান ১০০০ থেকে ১০৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ থাকলেও মাঠ ছাড়ছে না কৃষকেরা। ধান কাটা, মাড়াই, শুকানো ও খড় শুকানোর কাজ নির্বিঘ্নে করছেন কৃষকেরা।

বিজ্ঞাপন

হাওরে ধানকাটা শেষে প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় । ছবি: সারাবাংলা

ফেনারবাঁক ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের কৃষক সাইকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। যদি আগামী কয়েকদিন ঝড়-বৃষ্টি কম হয় তাহলে আমরা শত ভাগ ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ করতে পারব। ধান কাটার মেশিনও পর্যাপ্ত রয়েছে। কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটা মাড়াই ও বস্তায় ভরে বাড়িতে এনে এক রোদ দিলেই হয়।’

কৃষক আফতাব উদ্দিন সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে জানান, বর্তমানে খলা থেকে মোটা ধান ৯০০ টাকা এবং চিকন ধান একহাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সব ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। না হলে কৃষকের সর্বনাশ হবে।

জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের অভিজ্ঞ কৃষক নুরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোনো দুর্যোগ না থাকলে দুই/চারদিনের মধ্যে হাওরের ধান কাটা শেষ হবে। এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘায় ২২ থেকে ২৫ মণ ধান হয়েছে। কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে প্রতি বিঘা ধান ১৪০০ থেকে ১৭০০ টাকায় কাটা হচ্ছে। সরকারি ঘোষণায় সবাই দ্রুত ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কায়ছার আহমদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কোনো সংকট না থাকায় এ বছর এই উপজেলায় বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে কৃষকেরা ধান কাটা প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষকদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

তিনি জানান, ‘৫ মে’র মধ্যে হালির হাওর এবং ১৬ তারিখের মধ্যে পাকনার হাওরসহ সব হাওরের ধান কাটা শেষ হবে। উপজেলায় ১৪০টি কম্বাইন হারবেস্টার মেশিন ও বহিরাগত আরও ১২টি মেশিন ধান কাটায় ব্যস্ত আছে। বড়ধরনের দুর্যোগ না হলে খুব ভালো একটা বোরো মৌসুম হবে এবার।

সারাবাংলা/পিটিএম

৯০০ থেকে ১০০০ টাকা ধানকাটা হাওর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর