জীবের জীবনধারণ ও খাদ্য গ্রহণ পরস্পর সম্পর্কিত,অবিচ্ছেদ্য ও অত্যাবশ্যকীয় প্রক্রিয়া। বিশেষ করে মানুষের জন্য খাদ্য গ্রহণ অপরিহার্য কারণ এটি শরীরের সার্বিক শক্তি যোগায় এবং সুস্থ জীবনের ভিত্তি গঠন করে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, মানুষ খাদ্য যোগাড় করতে বা সংগ্রহে যেমন পরিশ্রমী, খাদ্যাভাসে বা খাদ্য গ্রহণে তেমন সচেতন নয়। সঠিক পুষ্টি জ্ঞান ও খাদ্যাভ্যাস না মানার ফলে বিভিন্ন রোগব্যাধি, দুর্বলতা এবং স্থূলতা (ওবেসিটি) দেখা দেয়। তাই খাদ্যকে শুধুমাত্র ক্ষুধা মেটানোর উপাদান হিসেবে নয় বরং স্বাস্থ্যকর, রোগবিহীন জীবন ও পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রধান সহায়ক হিসেবে ভাবতে হবে।
আমার আজকের লেখার মূল বিষয় খাদ্যাভাসের কারণেই স্থূলতা বা ওবেসিটিতে পৃথিবীব্যাপী যে মৃত্যুহার বা অসূস্থতার হার বেড়ে চলেছে সে বিষয়ে আলোকপাত করা। একসময় খাদ্যের অভাবে মানুষ মারা যেত বা এখনও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে কিংবা ফিলিস্তিনের গাজাসহ সারা বিশ্বে কম-বেশি ক্ষুধার্থ মানুষ রয়েছে। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক ম্যাগাজিন দ্য ল্যানসেটের মতে ২০২২ সালে স্থূল জনসংখ্যা ১০৩ কোটি ৮০ লাখ এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে বিশ্বের ক্ষুধার্থ মানুষের সংখ্যা ৮২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ অর্থাৎ ক্ষুধার্থের চেয়ে স্থুল মানুষের সংখ্যাই বেশি। নিয়ম মেনে খাবার খেলে রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব, কিন্তু ভুল খাদ্যাভ্যাস মানুষকে অসুস্থতার দিকে ঠেলে দেয়। সঠিক খাদ্যাভাসে মানুষ আমৃত্যু সুস্থ থাকতে পারে।
জাপানীদের দীর্ঘ জীবন লাভের রহস্য _
মানুষের গড় আয়ুর দিক দিয়ে সব দেশকেই পেছনে ফেলেছে জাপান।জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপের বাসিন্দারা যে কোনো অঞ্চলের মানুষের চেয়ে অনেক বেশি বাঁচে।ওকিনাওয়ায় প্রতি লাখে অন্তত ৬৮ জন শতবর্ষী হওয়ার মাইলফলক স্পর্শ করেন। জাপানের অন্যান্য এলাকার মানুষের চেয়ে এই অঞ্চলের মানুষের শতবর্ষী হওয়ার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ বেশি।এসব শতবর্ষীর দুই-তৃতীয়াংশই ৯৭ বছর বয়স পর্যন্ত নির্ভেজাল রোগমুক্ত জীবন যাপন করেন। অর্থাৎ এই বয়স পর্যন্ত বার্ধক্যজনিত রোগগুলোকে তারা পাশ কাটাতে সক্ষম হয়েছেন। ওকিনাওয়া দ্বীপে বসবাসকারীদের খাবারে শর্করার এবং প্রোটিনের অনুপাত যথাক্রমে ১০:১। দীর্ঘ জীবনের রহস্য সম্পর্কিত গবেষণার বেশিরভাগ তথ্যই এসেছে ‘ওকিনাওয়া সেন্টারিয়ান স্টাডি’ (ওসিএস) থেকে। ১৯৭৫ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি বয়স্ক মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নানা অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গবেষকদের মতে ওকিনাওয়ানদের দীর্ঘজীবন ও শারীরিক সুস্থতার কারণ হলো তাদের খাদ্যাভাস।এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের প্রধান খাবার ভাত হলেও ওকিনাওয়ায় তা নয়। তাদের খাবারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপাদান হলো মিষ্টি আলু। তাদের খাদ্যতালিকার একটি বড় অংশজুড়ে আছে সবুজ ,হলুদ বা রঙ্গিন শাক সবজি। তারা প্রচুর পরিমাণে মাছ খায় তবে রেড মিট গ্রহণের পরিমাণ খুবই সীমিত। উদ্ভিজ্জের কারণেই ওকিনাওয়াবাসীর খাদ্য তালিকায় ক্যালরির মাত্রা অন্যান্য দেশের তুলনায় ১১% কম থাকে এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান ছাড়াও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের প্রাচুর্য থাকে।মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীদের ওপর ২০ বছর ধরে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রেসাস মেকাকু বানররা অন্য প্রজাতির বানরের চেয়ে গড়ে ৩০ শতাংশ কম ক্যালরি গ্রহণ করে এবং অন্য প্রজাতির বানরের চেয়ে এদের মধ্যে বার্ধক্যজনিত রোগের হার ৬৩ শতাংশ কম।
জাপানীদের খাবার ধরণ _
ওকিনাওয়ানদের পরিবার বা সমাজে একসাথে বসে ধীরে ধীরে খাওয়া সংস্কৃতির অংশ। তাদের খাওয়ার সময়ের বৈশিষ্ট্য হলো তারা ছোট প্লেটে খাবার নিয়ে খুব ধীরে ধীরে ভালোভাবে চিবিয়ে খায়। এক গ্রাস খাবার চিবানো অবস্থায় কম পক্ষে তিন কিস্তিতে তা পাকস্থলীতে প্রেরণ করে। তারা খাবার ক্ষেত্রে একটি প্রবাদ মেনে চলে আর সেটি হলো Hara Hachi Bu অর্থাৎ ৮০% পেট ভরলে খাওয়া বন্ধ করো। তারা অল্প খায়, ধীরে খায়, পেট ভরার আগেই থামে – এটাই তাদের দীর্ঘায়ুর অন্যতম রহস্য।ফলে ক্যালরি কম খাওয়া হয়, শরীরের ওপর চাপ কমে, স্থূলতা বাড়ে না।আমরা খেতে শুরু করার ২০ মিনিট পর Leptin নামক হরমোন মস্তিষ্ককে সিগনাল দেয় যে পেট ভরে গেছে।
তখন আর খেতে ইচ্ছে করে না।কিন্তু দ্রুত খেলে সিগনাল আসার আগেই অনেক খাওয়ার পরও আরো খেতে মনটা চায়।এমন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলার কারণে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে স্থুলতা বৃদ্ধি পায়। খাবার ভালোভাবে ধীরে ধীরে চিবিয়ে খেলে সময় বেশি লাগে এবং খাওয়া শেষ হওয়ার আগেই স্নায়ুতন্ত্র থেকে খাওয়া শেষ হবার সিগন্যাল এসে যায ফলে পেট ফাকা থাকলেও আর খাওয়ার ইচ্ছে থাকে না। ধীরে ধীরে, চিবিয়ে খাওয়াতেই পেট ভরা মনে হয় ফলে শরীরের ওজন বাড়ার বা স্থুল হবার বিজ্ঞান সম্মত কোনো কারণ থাকে না।
খাবার চিবানোর সময় নির্ধারণ _
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভালোভাবে চিবিয়ে খায়, তারা তুলনামূলকভাবে কম খাবার বা কম ক্যালরি শোষণ করে। এক প্লেটের বেশি খাবার খাওয়া সঠিক নয়। এক প্লেট খাবার খেতে সাধারণত ২০ মিনিটের মতো সময় নেওয়া বিজ্ঞান সম্মত। ভালোভাবে চিবালে হজম এনজাইম ও হরমোন GLP-1, Peptide YY ইত্যাদি নি:সৃত হয়ে খাবার শেষ করার ২০ মিনিট আগেই সিগন্যাল প্রদান করে। এছাড়াও ধীরে খাওয়ার কারণে Ghrelin নামক (ক্ষুধা কমানোর) হরমোন নি:সৃত হয়। প্রতি গ্রাস খাবার অন্তত ২০–৩০ বার চিবানো ভালো। কোন খাবার কতক্ষণ চিবানো দরকার তা খাবারের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। নরম বা তরল খাবার বিশেষ করে জাউ, খিচুড়ি বা ফলের টুকরা প্রায় ১৫–২০ বার চিবাতে হয়। কঠিন বা আঁশযুক্ত খাবার যেমন-ভাত, সবজি, মাংস বা রুটি ইত্যাদি বেশি সময় নিয়ে কমপক্ষে ৩০ বার পর্যন্ত চিবাতে হয়। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে খাবার ছোট ছোট কণায় ভেঙে যায় ফলে পাকস্থলীতে খাবার ফুলে বেশি জায়গা দখল করে। এতে দ্রুত তৃপ্তি (Satiety) আসে এবং অতিরিক্ত খাওয়া রোধ হয়।
শরীরের ওজন বাড়ার কারণ _
দ্রুত খেলে খাবারগুলো ঠিকমত মুখের লালার এনজাইমের সাথে মিশ্রিত হতে পারে না এবং খাবারগুলো তরল অবস্থায় না পৌছে টুকরো আকারে পাকস্থলীতে প্রবেশ করে। এই খাবারগুলো কার্বহাইড্রেট বা ভাত হলে তা পরিপাকের জন্য ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায় ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। বারবার এভাবে দ্রুত খেলে শরীরে ইনসুলিন বাড়ে এবং শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমা হয়ে স্থূলতা বাড়ে। কেউ যদি দ্রুত খাওয়ার কারণে দিনে ৫০০–৬০০ ক্যালোরি বেশি খেয়ে ফেলে (যেমন: বাড়তি ভাত, মাংস, মিষ্টি বা ভাজাপোড়া), তাহলে সেই বাড়তি ক্যালোরি চর্বি আকারে জমতে থাকে। হিসেব করলে দেখা যায় যারা দিনে ৫০০ ক্যালরি বেশি খাবার গ্রহণ করে তার এক সপ্তাহে ৩৫০০ ক্যালরি অর্থাৎ প্রায় অর্ধ কেজি ওজন বৃদ্ধি পাবে। মাসে প্রায় ২ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়তে পারে। ধীরে খেলে এবং ভালোভাবে খাদ্য চিবিয়ে খেলে খাদ্যসার সরাসরি রক্তে মিশে ফলে মানুষের মোটা হবার সম্ভাবনা থাকে না।
পানি পানের নিয়ম _
খাদ্যাভাসের সাথে পানি পানেও নিয়ম মেনে চলতে হয়। সাধারণত: খাওয়ার আগে, খাওয়ার সময় এবং পরে পানি পানের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে।খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে ১ গ্লাস পানি খাওয়া ভালো।
খাওয়ার আগে পানি খেলে হজমে সহায়তা হয়, অল্প খাবারেই পেট ভরা লাগে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। খাওয়ার সময় পানি পান না করাই ভালো। তবে বিশেষ প্রয়োজনে পান করলেও তা অল্প চুমুক দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু একসাথে বেশি পানি খেলে পাকস্থলীর হজম রস (HCl, এনজাইম) পাতলা হয়ে হজম ধীর গতিতে হতে পারে। খাওয়ার ২০–৩০ মিনিট পর পানি পান করা স্বাস্থ্য সম্মত। এতে খাবার পাকস্থলীতে ভালোভাবে মিশে যায়, হজমে সুবিধা হয়। খুব গরম বা খুব ঠান্ডা পানি এড়ানো উচিত; স্বাভাবিক কুসুম গরম পানি হজমে বেশি সহায়ক।
সঠিক খাদ্য নির্বাচন _
কিছু খাবার আছে যেমন-লাল চাল, ওটস, ডাল, শিম জাতীয় খাবার ,বাদাম, বীজ , ভালো ফ্যাট (অলিভ অয়েল, মাছের তেল, অ্যাভোকাডো ), ফল (আপেল, পেয়ারা, বেরি),শাকসবজি, আঁশযুক্ত খাবার ইত্যাদি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় অর্থাৎ শরীর অল্প ইনসুলিনেই কার্যকরভাবে রক্তের গ্লুকোজ ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করতে পারে। এ ধরণের খাবারে মেদ, ভূড়ি বাড়ে না বা স্থুলতা বৃদ্ধি পায় না। আবার কিছু খাবার আছে যেমন-কোলা, পিজ্জা, বার্গার, তেলে ভাজা খাবার,অতিরিক্ত লাল মাংস ও প্রসেসড মাংস,ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া, প্যাকেটজাত চিপস, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই,পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট, (সাদা চাল, ময়দা, পাউরুটি, পাস্তা, পরোটা, নুডলস ইত্যাদি) ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ায় অর্থাৎ শরীরকে রক্তের গ্লুকোজ থেকে শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ইনসুলিনের প্রয়োজন হয় যা ওজন বাড়ায় এবং স্থূলতার সৃষ্টি করে। খাদ্যাভাসে এ খাদ্যগুলোকেও পরিহার করতে হবে।ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে পরিবর্তিত হতে পারে, এমনকি একই জাতি এবং একই দেশের মধ্যেও, এবং সম্ভবত পরিবেশগত/জীবনধারার কারণগুলির পাশাপাশি জিনগত বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। (Regional Variations of Insulin Secretion and Insulin Sensitivity in Japanese Participants With Normal Glucose Tolerance. Frontiers in Nutrition, 8, 632422. Pubmed PMID: 33829033.)
ঘুমের সাথে স্থূলতার সম্পর্ক _
ঘুমের ব্যাঘাত স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়। ঘুম নষ্ট হলে শরীরের ক্ষুধা বাড়ানো বা কমানোর হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ক্ষুধা বাড়ায় এমন হরমোন গ্রেলিন (Ghrelin)বেড়ে যায় এবং ক্ষুধা কমায় এমন হরমোন লেপ্টিন (Leptin) কমে যায়। গ্রেলিন বেড়ে যাওয়ায় বেশি খাবার প্রবণতা সৃষ্টি হয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে স্থূলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে যাকে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (OSA) বলে। এ প্রক্রিয়াটি চক্রাকারে আবর্তিত হতে থাকে অর্থাৎ ঘুম নষ্ট থেকে হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় বেশি খাওয়া যা থেকে স্থূলতা।আবার স্থূলতার কারণে সৃষ্ট অতিরিক্ত ওজন গলার আশেপাশের টিস্যুতে চাপ সৃষ্টি করে ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি করে।যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে OSA (Obstructive Sleep Apnea)-এর প্রাদুর্ভাব পুরুষদের মধ্যে ২৪% এবং নারীদের মধ্যে ৯%। কিন্তু যখন গুরুতর স্থূলতা দেখা দেয় তখন এ হার পুরুষদের মধ্যে ৯৩.৬% এবং নারীদের মধ্যে ৭৩.৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। (Sleep and obesity – PMC).
চিনি জাতীয় খাবার পরিহার _
চিনি থেকে প্রাপ্ত অতিরিক্ত ক্যালোরি ডায়াবেটিস, স্থূলতা এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণ।বিশেষ করে চিনি মিশ্রিত পানীয় (soft drinks, energy drinks, চা–কফিতে বেশি চিনি) সবচেয়ে দ্রুত ফ্যাট বাড়ায়। চিনি পানির সাথে মিশ্রিত থাকলে তা দ্রুত রক্ত কর্তৃক শোষিত হয়। আর সেই এনার্জি শরীর ব্যবহার না করলে অতিরিক্ত অংশ লিভারে গ্লাইকোজেন হিসেবে জমা হয়ে ফ্যাট বাড়ায় যা স্থূলতার কারণ। পক্ষান্তরে রসগোল্লা, চমচম, জিলাপি ইত্যাদি খাবারে চিনি মিশ্রিত থাকলে তা কিছুটা ধীর গতিতে শোষিত হয়। FOXO3 জিনের G অ্যালিল (একক-নিউক্লিওটাইড পলিমরফিজম) মানুষকে দীর্ঘায়ু করে কিন্তু যে খাবারগুলো স্থূলতা বাড়ায় সেগুলি এ জিনের কার্যকারিতাকে বাধাগ্রস্থ করে। (Gerontology. 2015 Mar 28;61(6):515–525.)
শেষ কথা _
স্থূলতার বহুবিধ কারণ রয়েছে যেমন: খাদ্যাভাস, শারীরিক কার্যকলাপের অভাব, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা,মানসিক ও সামাজিক প্রভাব, জেনেটিক ও বংশগত প্রভাব, ঔষধের প্রভাব এবং বষস জনিত কারণ উল্লেখ করার মতো। তবে উল্লেখিত কারণগুলোর মধ্যে খাদ্যভাসের কারণে মানুষের দেহ স্থুলতার হার অনেক বেশি। খাদ্যাভাস সঠিকভাবে প্রতিপালনে কোন প্রকার অতিরিক্ত আর্থিক ব্যয়ের প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র সচেতনতাই মানুষকে সঠিক খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। আর খাদ্যাভাসই সূস্থ মানুষ, সুন্দর সমাজ এবং সূস্থ জাতি গড়ে তুলতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
লেখক: অধ্যক্ষ, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ, কুড়িগ্রাম