আমরা প্রায়শই বলি, ‘বার্ধক্য হলো জীবনের শেষ অধ্যায়।’ এই শেষ অধ্যায়টাই আসলে সমাজের বিবেক, মানবিকতা আর দায়িত্ববোধের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। সিনিয়র সিটিজেনদের আমরা বোঝা ভাবি, অথচ তারা আমাদের জাতির চলমান ইতিহাস, জীবন্ত দলিল। তাদের ত্যাগ, সংগ্রাম আর অভিজ্ঞতা ছাড়া আজকের সমাজ, অর্থনীতি, শিক্ষা—কিছুই দাঁড়াত না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আজ তারা সমাজে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত শ্রেণি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা দেড় কোটিরও বেশি, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ। জাতিসংঘের পূর্বাভাস বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় পাঁচ কোটিতে। অর্থাৎ জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ হবেন প্রবীণ। কিন্তু প্রবীণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনে আমরা কতটা প্রস্তুত? কাগজে-কলমে কিছু উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে এর প্রভাব সীমিত।
রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা কোথায়?
সরকার প্রবীণদের জন্য বয়স্ক ভাতা চালু করেছে, কিছু এলাকায় স্বাস্থ্যসেবায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে, আবার জাতীয় নীতিমালায় প্রবীণবান্ধব নানা পরিকল্পনার কথা উল্লেখ আছে। বাস্তব চিত্র হলো, এসব উদ্যোগ খুবই সীমিত এবং প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বর্তমানে একজন প্রবীণকে মাসে মাত্র ৬০০ টাকা ভাতা দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন এ টাকায় কি একজন বৃদ্ধ মানুষ ওষুধ কিনে খেতে পারবেন? নাকি বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু আনতেই সব শেষ হয়ে যাবে? এর সঙ্গে যুক্ত হয় ভাতা তোলার ভোগান্তি। অনেক প্রবীণকে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করতে হয়, কখনো আবার দুর্নীতি ও জটিল কাগজপত্রের কারণে ভাতাই পান না। এ দৃশ্য কি আদৌ মানবিক?
স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও চিত্র একই রকম। প্রবীণদের জন্য আলাদা কাউন্টার, আসন কিংবা দ্রুত সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা এখনো বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতালে নেই। বড় শহরগুলোতে কিছু সুবিধা থাকলেও গ্রামের চিত্র ভয়াবহ। একজন বৃদ্ধ মানুষকে ডাক্তার দেখাতে গেলে হয়রানি, দীর্ঘ অপেক্ষা, ঔষধ সংকট—এসবই বেশি ভোগায়। অনেক সময় চিকিৎসার চেয়ে হয়রানির দুঃসহ অভিজ্ঞতা নিয়েই তারা ফিরে আসেন। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বাত, দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি সমস্যাসহ বয়সজনিত নানা জটিল রোগের জন্য নিয়মিত চিকিৎসা ও ওষুধ অপরিহার্য।
অন্যদিকে, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই অধিকাংশ প্রবীণের। ফলে তারা বাধ্য হয়ে সীমিত সরকারি সেবার ওপর নির্ভর করেন। এখানেও তারা যথাযথ সেবা পান না। ফলে রাষ্ট্রের কার্যক্রম কেবল ঘোষণাপত্র ও পরিকল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়, মাঠপর্যায়ে তার বাস্তব প্রতিফলন খুব কম দেখা যায়।
আজ যখন দেশে ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা দেড় কোটির বেশি, আর আগামী কয়েক দশকে তা দাঁড়াবে প্রায় পাঁচ কোটিতে, তখন রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা শুধু ভাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। প্রয়োজন প্রবীণবান্ধব হাসপাতাল, আলাদা স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণ, ও প্রবীণদের মর্যাদা রক্ষার সুনির্দিষ্ট নীতি বাস্তবায়ন। অন্যথায় তাদের অবস্থা আরও করুণ হয়ে উঠবে, যা কোনোভাবেই সভ্য সমাজের পরিচয় বহন করে না।
পরিবারের ভূমিকা
যৌথ পরিবারব্যবস্থায় প্রবীণরা ছিলেন সংসারের কর্ণধার। তাদের পরামর্শ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো না, সংসারের ছোট-বড় সব বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা ছিল দিকনির্দেশনার আলোকবর্তিকা। পরিবারের নতুন প্রজন্ম তাদের ছায়াতলে নিরাপদ বোধ করত। কিন্তু আজকের পারমাণবিক পরিবারব্যবস্থায় সেই চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। শহরে অনেক প্রবীণ বাবা-মা সন্তানের ঘরেই থেকেও নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে সন্তানরা নিজেদের ক্যারিয়ার, ব্যস্ততা কিংবা স্বাচ্ছন্দ্যের অজুহাতে বাবা-মাকে একাকী করে ফেলছে। ফলে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বাড়ছে, যা আমাদের পারিবারিক বন্ধনের অবক্ষয়ের এক নির্মম প্রতিচ্ছবি।
কেবল শহরেই নয়, গ্রামেও দেখা যায় প্রবীণদেরকে আলাদা ঘরে রাখা হয়, তাদের মতামতকে অপ্রয়োজনীয় ভাবা হয়, এমনকি খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রেও অবহেলা করা হয়। অনেকে বার্ধক্যে অসুস্থ হয়ে পড়লেও, তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর রাখা হয় না ঠিকমতো। অথচ এই বাবা-মায়ের ত্যাগ-তিতিক্ষায় আজ সন্তানেরা প্রতিষ্ঠিত, তাদের ঘরে আলো জ্বলছে। জীবনের সেরা সময়টা তারা কাটিয়েছেন সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। তাই শেষ বয়সে তাদের প্রতি যত্ন, ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করা কেবল মানবিক দায়িত্বই নয়, বরং নৈতিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় দায়িত্বও বটে। একটি সভ্য ও দায়িত্বশীল সমাজ গঠনের জন্য পারিবারিক বন্ধনের পুনরুজ্জীবন আজ অত্যন্ত জরুরি।
সামাজিক দায়বদ্ধতা
সমাজও প্রবীণদের প্রতি যথেষ্ট দায়িত্ব পালন করছে না। স্থানীয় সরকার, সামাজিক সংগঠন বা মহল্লাভিত্তিক কোনো উদ্যোগের অভাবে প্রবীণরা সমাজ থেকে ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। অথচ তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাতে পারতো। তরুণ প্রজন্ম তাদের কাছ থেকে শিখতে পারতো জীবনের বাস্তব শিক্ষা, ইতিহাস ও সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা। কিন্তু আমাদের সমাজে প্রবীণদেরকে প্রায়শই উপেক্ষিত করে রাখা হয়।
পশ্চিমা অনেক দেশে প্রবীণ ক্লাব, হেলথ কেয়ার সেন্টার, সাপ্তাহিক আড্ডা কিংবা সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে তাদের সম্পৃক্ত করার সুযোগ রয়েছে। এতে প্রবীণরা শুধু সুস্থ থাকেন না, মানসিকভাবেও প্রাণবন্ত থাকেন। বাংলাদেশেও কিছু এনজিও এ ধরনের কাজ করছে, তবে তা নিতান্তই সীমিত ও বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ। অধিকাংশ জায়গায় কোনো পরিকল্পিত কার্যক্রম নেই। ফলে বাস্তবে আমরা প্রবীণদের সক্রিয় রাখার পরিবর্তে ধীরে ধীরে তাদের ‘অচল’ বানিয়ে দিচ্ছি। সমাজ যদি প্রবীণদের প্রতি সত্যিকারের দায়বদ্ধতা অনুভব করত, তবে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরিবার ও সমাজ উভয়ই উপকৃত হতে পারত। তাই প্রবীণবান্ধব সামাজিক কাঠামো গড়ে তোলা আজ সময়ের দাবিই বটে।
প্রবীণরা কী চান?
তাদের প্রত্যাশা আসলে বড় কিছু নয়, বরং একেবারেই মৌলিক ও মানবিক চাহিদা। প্রথমত, পরিবারে সম্মান ও ভালোবাসা। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও তারা চান যেন সন্তান-নাতি-নাতনির চোখে সম্মানের আসনে থাকেন। শুধু খাবার বা ওষুধ নয়, পরিবারের সবার কাছ থেকে আন্তরিকতা ও যত্নই তাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান।
দ্বিতীয়ত, নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা। বার্ধক্যে নানা রোগ-ব্যাধি আসে—ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চোখ-কান দুর্বল হয়ে যাওয়া। এসবের জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী চিকিৎসা সুবিধা চান তারা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে হয়রানি নয়, বরং প্রবীণবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা তাদের প্রয়োজন।
তৃতীয়ত, ন্যূনতম আর্থিক সুরক্ষা। বৃদ্ধ বয়সে অধিকাংশ মানুষের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। হাতে সামান্য কিছু টাকা থাকলেও তা ওষুধ, চিকিৎসা বা নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচেই শেষ হয়ে যায়। তাই ভাতা বা আর্থিক সহায়তা যেন তাদের মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে সহায় হয়—এই প্রত্যাশাই প্রবীণদের।
চতুর্থত, সমাজে সক্রিয় থাকার সুযোগ। তারা চান না সমাজ তাদেরকে অচল বা বোঝা মনে করুক। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় আচার, স্থানীয় সিদ্ধান্ত বা পারিবারিক অনুষ্ঠান—এসব জায়গায় তাদের অংশগ্রহণ থাকুক, যাতে তারা নিজেকে এখনও প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয় মনে করতে পারেন।
সবশেষে নিঃসঙ্গতা কাটানোর মতো সামাজিক মেলবন্ধন। অনেক প্রবীণই দীর্ঘ সময় একা কাটান। কারো সঙ্গে গল্প করা, আড্ডায় বসা বা মিলনমেলার সুযোগ তাদের মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রবীণরা যা চান, তা বিলাসিতা নয়—বরং সামান্য সম্মান, যত্ন আর মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের উষ্ণতা।
ধর্মীয় ও নৈতিক প্রেক্ষাপট
ইসলামে বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা অসংখ্য আয়াত ও হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তার সঙ্গে কাউকে শরিক করো না, আর বাবা-মায়ের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো।’ (সূরা নিসা: ৩৬)। আবার একটি সুপরিচিত হাদিসে এসেছে, ‘তোমার জান্নাত রয়েছে তোমার মায়ের পদতলে।’ অর্থাৎ বাবা-মায়ের সেবা, যত্ন ও ভালোবাসা শুধু পারিবারিক দায়িত্ব নয়, বরং জান্নাত লাভের অন্যতম পথ। কিন্তু বাস্তবে আমরা অনেক সময় ঠিক উল্টো চিত্র দেখি। সন্তানেরা ব্যস্ততার অজুহাতে বা আধুনিকতার দোহাই দিয়ে বাবা-মাকে একঘরে করে রাখছে, এমনকি বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে যাচ্ছে। অথচ ইসলামে এটি গুরুতর অবহেলা হিসেবে গণ্য। বাবা-মায়ের দোয়া সন্তানের জন্য রহমতের চাবিকাঠি, আর তাদের অভিশাপ হতে পারে ধ্বংসের কারণ।
ধর্মীয় নির্দেশনার পাশাপাশি মানবিক ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন করা অপরিহার্য। প্রবীণ বয়সে যখন শরীর দুর্বল হয়ে আসে, তখন তাদের প্রয়োজন শুধু সেবা নয়, প্রয়োজন সম্মান, মানসিক প্রশান্তি এবং পাশে থাকার আশ্বাস। সমাজ যত আধুনিক হোক না কেন, প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক—বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই। বরং প্রবীণদের মর্যাদা ও যত্নের মধ্য দিয়েই আমাদের নৈতিকতার মানদণ্ড প্রকাশ পায়।
আজকের অবহেলা, আগামী দিনের শাস্তি
আমরা সহজেই ভুলে যাই—আজ যাদের অবহেলা করছি, আগামীকাল আমরা তাদেরই জায়গায় দাঁড়াবো। প্রবীণদের প্রতি আজকের উদাসীনতা কেবল মনুষ্যত্বের ক্ষতি নয়; এটি একটা চিরস্থায়ী প্রভাব ফেলে। যদি আজ আমরা বাবা-মাকে, প্রতিবেশীর বয়োজ্যেষ্ঠকে, সমাজের প্রবীণকে ভালোবাসা, সম্মান ও যত্ন না দেখাই, তাদের অধিকারকে অবজ্ঞা করি, তাহলে একদিন আমাদের সন্তানরাও একই অমানবিক মনোভাব গ্রহনে পিছপা হবে। এটা সরাসরি নৈতিক লঙ্ঘন- কিন্তু তার চেয়েও ভয়ঙ্কর হলো সামাজিক প্রতিফলন: সম্মান, সহমর্মিতা ও পারিবারিক বন্ধন দুর্বল হলে সমাজের আস্থা, আইনশৃঙ্খলা এবং মানবীয় মূল্যবোধ ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যায়। আরেকটা বিষয় হলো সম্পদের হিসেব। আজ আমরা প্রবীণদের অবহেলা করলে, ভবিষ্যতে সমাজের সুরক্ষা জাল মুছে যাবে। প্রবীণরা আজকের সংরক্ষিত ইতিহাস, অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার; তাদেরতার অভাবে নতুন প্রজন্ম সিদ্ধান্তহীন ও ইতিহাসবিহীন হয়ে পড়বে। অতিরিক্তই বলা যাবে—প্রবীণদের প্রতি অবহেলা একটি জাতির স্মৃতি-নাশ এবং নৈতিক অবক্ষয়ের প্রথম ইঙ্গিত।
রাষ্ট্র, পরিবার ও সমাজ- এই তিন পক্ষ মিলিয়ে যদি প্রবীণদের জন্য নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও সক্রিয় জীবন নিশ্চিত না করে, তাহলে আমাদের মানবিকতা বড় উচ্চারণেই সীমাবদ্ধ থাকবে। যে সমাজ সিনিয়র সিটিজেনদের মূল্যায়ন করে না, সেই সমাজের ভবিষ্যৎ কখনোই প্রকৃতভাবে উজ্জ্বল বা স্থিতিশীল হতে পারে না। প্রবীণদের অবহেলা মানে ইতিহাসকে অস্বীকার করা, মানবিকতাকে ধ্বংস করা এবং আমাদের নিজস্ব ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া—এটাই বাস্তবতা, আর এভাবেই কড়ে কল্যাণের ডাক দেওয়া উচিত।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী, কলামিস্ট ও সংগঠক