স্যার, আপনি অফিসে আসছেন তো!
২৮ এপ্রিল ২০২০ ২০:৩২
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে এক মহা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নয়। দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে অর্থনৈতিক, সামাজিক সংকট। চলমান ও আসন্ন সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ।
তারই ধারাবাহিকতায় কিছু অফিস, প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা বিভিন্ন পলিসির মাধ্যমে খোলার ঘোষণা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান স্বল্প/মাঝারী পরিসরে খুলেছে।
এটা সত্য যে, অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে হবে। কিন্তু একই সাথে এটাও মনে রাখতে হবে, চাকা কি স্বল্প সময়ের জন্য ঘোরাতে চাই নাকি দীর্ঘ সময়ের জন্য? কারণ বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি কোনভাবেই নিম্নমুখী না। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে- এমন অবস্থায় শিল্প, কারখানা, অফিস স্বল্প/মধ্যম পরিসরে চালাতে গিয়ে আরো বেশী মানুষ আক্রান্ত হবে না তো? নাকি আরো কিছুদিন করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে খোলার সিদ্ধান্তটা নিলে বেশি ভাল হবে?
প্রতিষ্ঠান চালু বা খোলার বিষয়ে যে সকল উচ্চ পদস্থ বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তা ব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাদের প্রতি একটা ছোট প্রশ্ন- আপনি নিজে স্বশরীরে অফিস, প্রতিষ্ঠান, কারখানায় উপস্থিত থেকে শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সাহস যোগাবেন তো? আপনার মতো আপনার শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদেরও আছে মৃত্যু ভয়। আছে বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান। নেই শুধু পজিশন, অর্থ, ক্ষমতা!
নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে যারা আছেন তাদের কাছে সবিনয় আবেদন- করোনা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এমন সিদ্ধান্ত নিবেন যেন সিদ্ধান্তটা আপনার নিজের জন্যও নিরাপদ।
এটা সবাই বুঝতে পারছি যে, অর্থনীতিকে বাঁচাতে হবে৷ কিন্তু যাদের মাধ্যমে অর্থনীতি বাঁচবে আগে তাদেরকে বাঁচতে হবে। এটা মনে রাখা দরকার যে, কখনো কখনো ব্যাক-ফুটে গিয়েও শক্তি সঞ্চয় করে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়!
জাতিগতভাবে আমরা মানবিক। নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে যারা আছেন তারা অবশ্যই করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশের অর্থনৈতিক যোদ্ধাদের অর্থাৎ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের সুস্থ ও নিরাপদে রাখার সিদ্ধান্ত নিবেন। নয়তো সামান্য ভুলে বড় ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে আমাদের
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, দ্য অ্যাপারেল নিউজ