Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনার বিরুদ্ধে বিজেসির যুদ্ধ


১৭ মে ২০২০ ১৩:৪৭

করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝুঁকি নিয়ে যারা প্রথম কাতারে আছেন তাদের মধ্যে গণমাধ্যমকর্মীরা অন্যতম। এই তথ্য সেবাদাতাদের মধ্যে সরাসরি মাঠে কাজ করা সম্প্রচার সাংবাদিকদের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। তবে আমরা সংবাদকর্মীরা মনে করি এটি দেশসেবার একটি বড় সুযোগ এবং তা থেকে পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই। কারণ মানুষকে সচেতন করতে পারলেই রক্ষা করা যাবে। দুস্থ, অসহায় জনগোষ্ঠির খবর তুলে ধরতে পারলেই তাদের বাঁচানো সম্ভব হবে। কোথায় কি নেই, কি দরকার তা সঠিকভাবে তুলে ধরছেন সম্প্রচার সংবাদকর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইতিমধ্যে অর্ধশত সম্প্রচার সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, দেশের পুরো গণমাধ্যমের হিসেবে তো শতাধিক। তাদের মধ্যে তিনজন মারাও গেছেন। আক্রান্তদের সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের অনেকে ঝুঁকির মধ্যে আছেন।
ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার- বিজেসি মনে করে, সাংবাদিকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা, আক্রান্ত ও কোয়ারেন্টিনে থাকাদের মধ্যে খাদ্য সহায়তা এবং চিকিৎসা সুবিধার নিশ্চয়তা দেয়া জরুরী।

বিজ্ঞাপন

করোনাকালে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বিজেসির নেয়া উদ্যোগসমুহ-

১. মার্চ মাসে বিজেসি টেলিভিশন সাংবাদিকদের জন্য প্রত্যেক হাউসে মাস্ক, নিজেদের তৈরি করা হ্যান্ড সেনিটাইজার, হ্যান্ড গ্লভস, পিপিই পৌঁছে দেয়।

২. দ্বিতীয় দফায় চাল, আটা, ডাল, তেল, চিনি, আলু, লবনসহ খাদ্য সামগ্রীর ব্যাগ উপহার হিসেবে দেয়া হয় যাদের প্রয়োজন সেইসব সদস্যের কাছে। অনেকে বিজেসির অফিসে এসেও এসব সামগ্রী নিয়ে গেছেন।

৩. বিজেসি সাংবাদিকদের জন্য করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মহাখালীতে একটি কমিউনিটি সেন্টার আমাদের দিয়েছে। সেই সেন্টারে একটি ল্যাব স্থাপন হয়েছে। এই কার্যক্রমে ল্যাব, কীট, টেকনিশিয়ান ও ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করছে গাজী গ্রুপ। তত্ত্বাবধান করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিদিন ৩০জন সাংবাদিকের পরীক্ষা হয় সেখানে। এতে ধরা পড়ছে করোনা পজিটিভ।

৪. এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কতো কঠিন তা ভুক্তভোগীরাই জানেন। তাই বিজেসি রাজধানীর দুটি হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলেছে। হলি ফ্যামিলি ও আনোয়ার খান হাসপাতাল। তারা টেলিভিশন সাংবাদিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তির ব্যবস্থা করবেন এবং চিকিৎসা দেবেন।

৫. এই ব্যবস্থায় টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন এ্যাটকো সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

৬. রোগীদের হাসপাতালে নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করেছে বিজেসি। পাথওয়ে এই সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে।

৭. আমাদের এই উদ্যোগ দেখে আরো অনেকে এগিয়ে এসেছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিজেসিকে কয়েকদিন আগে ১০ হাজার মাস্ক, ৩ হাজার পিপিই ও সেনিটাইজার দিয়ে সহায়তা করেছে। এর মধ্যে আছে ব্র্যাক, কারুপণ্য রংপুর, টেক্সটাউন, পানাম গ্রুপ। এইসব সামগ্রী আমরা এখন সংবাদকর্মীদের মধ্যে বিতরণ করছি। হাউস প্রতিনিধিরা সেগুলো নিয়ে তার হাউসের সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।

৮. সংবাদকর্মীদের টেলিচিকিৎসা পাওয়ার জন্য ওলওয়েল এর সাথে চুক্তি করেছে বিজেসি। ফলে টেলিফোনে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে যেকোন সময়।

৯. এই দুর্যোগে সংবাদকর্মীদের কি কি বিধি নিষেধ মানা উচিত, কিভাবে মাঠে কাজ করতে হবে তার জন্য এমআরডিআই এর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে গাইডলাইন প্রস্তুত করে বিজেসি।

১০. বিজেসি তথ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করে এই দুর্যোগে সাংবাদিকদের জন্য প্রণোদনা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তবে তথ্যমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে সাংবাদিকদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

১১. বিজেসি টেলিভিশন মালিকদের কাছে সংবাদকর্মীদের বেতন নিয়মিত দেয়া ও চাকরিচ্যুত না করার আহ্বান রেখেছে। সম্প্রচার সংবাদকর্মীদের উন্নয়ন, সুরক্ষা, সংকট মোকাবেলা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে গড়ে ওঠা বিজেসি এখন যুদ্ধে নেমেছে করোনার বিরুদ্ধে। এই যুদ্ধে আমরা জয়ী হবোই।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, মাছরাঙা টেলিভিশন; ট্রাস্টি, বিজেসি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর