শেখ পরশের নেতৃত্বে ইতিবাচক ধারায় যুবলীগ
২ জুলাই ২০২০ ১৮:৫৯
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠন হিসেবে পরিচিত। তবে নানা কর্মকাণ্ডে যখন যুবলীগ ভাবমূর্তির সংকটে পড়ে যায়। ঠিক তখনি বাবার হাতে গড়া সংগঠনের প্রতি বিশেষ মায়া এবং দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আওয়ামী যুবলীগের হারানো গৌরব, ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব শেখ ফজলে শামস পরশ সযত্নে গ্রহণ করেন।
২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনসটিটিউটে যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় সভায় চেয়ারম্যান হিসেবে শেখ ফজলে শামস পরশের নাম ঘোষণা করা হয়।
যুবলীগের চেয়ারম্যান হিসেবে শেখ ফজলে শামস পরশ নির্বাচিত হয়েই প্রথম প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করে বলেন, ‘যুবলীগের একজন চেয়ারম্যান হিসেবে নয়, একজন কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থেকে কাজ করব। আপনারা আমার শক্তি হবেন। আমার বাবা শেখ মণি বঙ্গবন্ধুর ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য এই সংগঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও তার কন্যার দেশের প্রতি হৃদয়ের ভালোবাসা থেকে আমি সাহস পাই। তাই আজ আমি আপনাদের সামনে বলতে চাই, আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হচ্ছে আমি সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে দায়িত্বগুলো পালন করবো।’
তারপর থেকে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। যুবলীগ পরশের নেতৃত্বে আরও বেশি সুসংগঠিত হয়েছে। বিশেষ করে এই করোনা মারামারির সময়ে মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে যুবলীগ।
শেখ পরশ বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির বড় সন্তান। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া এবং বেড়ে উঠা পরশ খুব কাছ থেকেই দেখেছেন ১৯৭৫ সালের ট্রাজেডি।
পঁচাত্তর ট্রাজেডিতে বাবা-মাকে হারানো শেখ ফজলে শামস পরশ ধানমন্ডি সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের কলারাডো ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেয়ার পর দেশে ফেরেন। তারপর গত ১০ বছর ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছিলেন। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। সরাসরি রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেব রাজনীতির দীক্ষা নিয়েছেন খুব কাছ থেকে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কিন্তু তাকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা শেখ পরশের মনে বড় ধরনের ক্ষতের সৃষ্টি করেছিল। পরশের বাবা এদেশের তরুণ-যুব সমাজের আলোকবর্তিকা শেখ ফজলুল হক মনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। আওয়ামী যুবলীগ ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে এদেশের যুব আন্দোলনের পথিকৃৎ শহীদ শেখ মনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, শোষনমুক্ত সমাজ অর্থাৎ সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা তথা জাতীয় চার মূলনীতিকে সামনে রেখে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং যুবসমাজের ন্যায্য অধিকারসমুহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুবলীগের প্রতিষ্ঠা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের মধ্য থেকে স্বাধীনতা ও প্রগতিকামী যুবক ও যুব মহিলাদের ঐক্যবদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তোলাই ছিল যুবলীগের উদ্দেশ্য। প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করে।
দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই জরুরি বৈঠক করে সারাদেশে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশ দেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। নির্দেশনার পরই সারাদেশে ত্রাণ তৎপরতা থেকে শুরু করে মানুষকে করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে কাজ করছে নেতাকর্মীরা। হতদরিদ্র, গরিব মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, যুবলীগের উপহার সামগ্রী, নগদ অর্থ, স্বাস্থ্য সামগ্রী প্রদান করেছে। এছাড়া কৃষকের ধান কাটা, ২৪ ঘণ্টা টেলিমেডিসিন সেবা, ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে যুবলীগ। যে কোনো সংকটে যুবলীগ অতীতের মতো বর্তমান সময়েও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
আজ যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের জন্মদিন। জন্মের শুভক্ষণ সমুজ্জ্বল প্রীতময় হোক। শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায় অভিনন্দন বার্তা। জীবনের প্রতি পরতে আনন্দক্ষণগুলো আপনাকে ছুঁয়ে থাকুক। বিপদমুক্ত হোক চলার পথ। আপনার স্নেহছায়ায় যেন অনেক বছর পথ চলা হয় আমাদের। আমরা আপনাকে রাজনৈতিক মঞ্চে একজন আদর্শিক নেতা হিসেবে পেয়েছি। আপনার বিনয়ী উদারতার স্পর্শে আমাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ করবে। আপনি রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যুবলীগকে রাজনৈতিক মাঠে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার সুখী ও সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আপনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
লেখক: সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ