Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অধিকার আদায়ের আরেক নাম নেলসন ম্যান্ডেলা


১৮ জুলাই ২০২০ ১৪:১৩

আজ ১৮ জুলাই। দিনটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ও দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মদিন। সারাবিশ্বে দিনটি ‘ম্যান্ডেলা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।

মানুষকে শান্তি ও স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছিলেন ম্যান্ডেলা। মহান এই নেতাকে সম্মান জানিয়ে ১৮ জুলাইকে ‘ম্যান্ডেলা দিবস’ ঘোষণা করে জাতিসংঘ। প্রতিবছর এই দিনে দক্ষিণ আফ্রিকায় নানা আয়োজন করে স্মরণ করা হয় কিংবদন্তি এই নেতাকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও স্মরণ করা হয় তাকে।

নোবেল বিজয়ী নেলসন ম্যান্ডেলা বাংলাদেশে এসেছিলেন ১৯৯৭ সালের ২৫শে মার্চ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেটাই ছিল বাংলাদেশে তার প্রথম এবং শেষ সফর।

২০০৯ সালের ২৭ এপ্রিল কনসার্ট ৪৬৬৬৪ এবং নেলসন ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন নেলসন ম্যান্ডেলা আন্তর্জাতিক দিবস প্রতিষ্ঠা ও পালনে বিশ্ব জনগোষ্ঠীর সহায়তা ও সমর্থন কামনা করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সেই বছর নভেম্বরে সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মদিনকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেন। জাতিসংঘের ১৯২ সদস্য মহাসচিবের প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়ে প্রস্তাবটি গ্রহণ করে। অবশেষে ২০১০ সালে নোবেল বিজয়ী নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মদিনকে ‘ম্যান্ডেলা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ। তখন থেকেই দিনটি ‘ম্যান্ডেলা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

১৯১৮ সালের ১৮ই জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার তৎকালীন কেপ প্রদেশের থেম্বু রাজবংশের ক্যাডেট শাখায় উমতাতার নিকটবর্তী ম্ভেজো গ্রামে এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নেলসন ম্যান্ডেলা।

প্রাথমিক পাঠ শেষ করে ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও উইটওয়াটারস্র্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করেন তিনি। পাঠচক্র শেষ করে জোহানেসবার্গে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি উপনিবেশ-বিরোধী কার্যক্রম ও আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ১৯৪৩ সালে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দেন এবং ১৯৪৪ সালে ইয়ুথ লিগ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি।

সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন ম্যান্ডেলা।

১৯৬২ সালে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। দীর্ঘ ২৭ বছর কুখ্যাত রবেন দ্বীপের কারাগারে বন্দি থাকতে হয় ম্যান্ডেলাকে।
১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কারাগার থেকে মুক্ত হন ম্যান্ডেলা। কারাগার থেকে বের হয়ে নিজ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সাথে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন। তারই ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে। সেই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৯৪ সালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার আগে ১৯৯৩ সালে এফ ডব্লিউ ডি ক্লার্কের সাথে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান তিনি।

অবশেষে ৯০ বছর বয়সে ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর কিংবদন্তিদের কিংবদন্তি নেলসন ম্যান্ডেলা না ফেরার দেশে চলে যান।

লেখক: উন্নয়নকর্মী

নেলসন ম্যান্ডেলা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর