Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নজয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়


২৭ জুলাই ২০২০ ১৩:৩৬

মানিক লাল ঘোষ

“আমাদের দেশ প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক পেছনে পড়েছিল। সেখান থেকে এ উত্তরণের পথে আসা নিয়ে নেতিবাচক প্রশ্ন ছিল অনেকের। আমরা তাদের নেতিবাচক ভাবনা মিথ্যা প্রমাণিত করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা” -২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে ডিজিটাল মিউনিসিপালিটি সার্ভিসেস সিস্টেম ‘একপে’ ও ‘একশপ’ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য এটি। সেই অনুষ্টানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। যার সুদূরপ্রসারী চিন্তার ফসল আজকের প্রযুক্তির উন্নয়নের বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

তথ্য প্রযুক্তিতে দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিলো বাংলাদেশ। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রথম ভাবনা আসে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মাথা থেকে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ কনসেপ্ট অন্তর্ভুক্তি জয়ের চিন্তার ফসল। সার্বিকভাবে বাংলাদেশকে প্রযুক্তি নির্ভর করতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবদান অনস্বীকার্য। এ জন্য তাকে শুনতে হয়েছে অনেক কটাক্ষ, সহ্য করতে হয়েছে সমালোচনা। কিন্তু জয়ের ভাবনা বর্তমানে সবদিকেই জয়জয়কার। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হাইটেকপার্ক নির্মাণ, ফোর-জি চালু, ইন্টারনেটের দাম কমানো, কম্পিউটার শুল্কমুক্ত আমদানী, ফ্রিল্যান্সিং এর উৎকর্ষতা, বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ অনলাইনে করাসহ নাগরিক বিভিন্ন সুবিধাকে মানুষের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসাতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্বপ্নগুলো ডানা মেলেছে সবখানে।

বিজ্ঞাপন

গত এক দশকে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মহাসড়কের পথ ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংক্রমণে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক বিরুপ প্রভাব ফেললেও তথ্য প্রযুক্তিতে উন্নয়ন কতোটা এগিয়েছে দেশ; তা আজ প্রমাণিত।

দেশের অর্থনীতি, শিল্প, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুতেই লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। ঘরে বসেই চলছে অফিসের কাজ। প্রধানমন্ত্রীর মিটিং, রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ড, ব্যাংক, বীমা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট কোম্পানীসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ, এমনকি টেলিভিশনের রিপোটিং ও টকশো পর্যন্ত বর্তমানে অনলাইন নির্ভর। শিক্ষার্থীদের ক্লাশ, পরীক্ষা, ভর্তি , নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনা, অসুস্থ রোগীর চিকিৎসায় টেলিমেডিসিন সেবা, আদালতের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা থেকে শুরু করে কোথায় নেই প্রযুক্তির স্পর্শ? উন্নয়নের পথে, প্রযুক্তির পথে বাংলাদেশের এই এগিয়ে যাওয়ার নেপথ্য মহানায়ক সজীব ওয়াজেদ জয়।

বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রীর পুত্র হওয়া সত্ত্বেও দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম। ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ দেওয়া হয় তাকে। তারই মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু তার। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ কিংবা ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণের কোন ভাবনা নেই তার। মেধা, মনন আর চিন্তা জুড়ে কেবল মায়ের মতো দেশের পাশে-জনগণের পাশে থাকা আর প্রযুক্তি উন্নয়নে বাংলাদেশকে বিশ্বের প্রথম সারিতে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন।

২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান সজীব ওয়াজেদ জয়। তখন থেকেই সরকারের পাশাপাশি দলীয় ঘরনার ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি, রাজনীতি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তরুন উদ্যোক্তা তৈরীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন তিনি। দেশ গঠনে তরুনদের মতামত ও পরামর্শ শুনতে, “লেটস টক” ও “পলিসি ক্যাফে” দারুন সাড়া ফেলেছে তরুন প্রজন্মের মাঝে। প্রশিক্ষিত তরুনদের নিয়ে বৃহত্তম প্লাটফর্ম “ইয়াং বাংলার” সূচনা করেন জয়, যা দেশের উদ্যোক্তা ও নেতৃত্ব বিকাশে রাখবে ইতিবাচক ভূমিকা।

ডিজিটাল বিশ্বের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগে ২০১৬ সালে সজীব ওয়াজেদ জয় অর্জন করেন আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। এর আগে ২০০৭ সালে তিনি লাভ করেন ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম থেকে ইয়াং গ্লোবাল লিডার অব দ্যা ওয়ার্ল্ড এর স্বীকৃতি। কিন্তু জয় মনে করেন তার সকল স্বীকৃতি সার্থক হবে সেদিন যেদিন প্রযুক্তির ব্যবহারে বিশ্বের প্রথম সারির কাতারে থাকবে বাংলাদেশের নাম।

জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরি তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্র পরিচালনা, নেতৃত্বে দক্ষতা ও মানবিকতায় সারা বিশ্বে তিনি প্রশংসিত। সজীব ওয়াজেদ জয় সেই মায়ের সন্তান, মাদার অব হিউম্যানিটি হিসেবে যার খ্যাতি বিশ্ব জুড়ে। মানুষের ভালোবাসায় মৃত্যুর দুয়ার থেকে বারবার ফিরে আসা মৃত্যুঞ্জয়ীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।

পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণেই রাজনীতির সব গুণ আছে তার। তাইতো দেশে কিংবা বিদেশে যেখানেই অবস্থান করেন না কেন দেশের উন্নয়ন ভাবনার পাশাপাশি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনো অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সমুচিত জবাব দিতে কুন্ঠাবোধ করেন না তিনি। মায়ের অবসরে তিনিই হবেন দলীয় প্রধান আর দেশের কান্ডারী এমন ভাবনা অবান্তর নয়। এ দেশের যুব সমাজ তাই প্রত্যাশায় আছে এমন তারুন্য নির্ভর নেতৃত্বের। যার মাঝে তারা খুঁজে পাবেন বঙ্গবন্ধু আর জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিচ্ছবি।

আগামী দিনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী রাজনীতির কান্ডারী সজিব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া দম্পতির ঘর আলোকিত করে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জন্ম নেয়ায় নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার নাম রাখেন জয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হওয়ার সময় মা-বাবার সাথে জার্মান ছিলেন জয়। পরে মায়ের সাথে রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে আসেন ভারতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। লেখাপড়া করেছেন নৈণিতালের সেন্ট জোশেফ কলেজে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আলিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন জয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রহণ করেন লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী।

২০০২ সালে ২৬ অক্টোবর ক্রিস্টিন ওয়াজেদকে বিবাহ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সোফিয়া ওয়াজেদ নামের একটি কন্যা সন্তান আছে তাদের।

রাজনীতিতে আপাতত সক্রিয় হওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও তার ভাবনা বাংলাদেশের উন্নয়ন আর অগ্রগতি নিয়ে। তিনি স্বপ্ন দেখেন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জাতিসংঘের আইসিটি ইন্ডিকেটের ডিজিটাল গভর্নেন্সে ইনডেক্সের সেরা ৫০’র মধ্যে থাকবে বাংলাদেশ। আর ২০২১ সালের মধ্যে নাগরিক সেবার সবগুলো প্রযুক্তি থাকবে দেশের জনগণের আঙ্গুলের ছোঁয়ায়।

ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেশ নিয়ে এমন ভাবনার জয় হোক। শুভ জন্মদিনে তার সব কর্মপরিকল্পনা দেখুক আলোর মুখ। জয়ের জয় হোক সর্বত্র এমন প্রত্যাশা করি।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিষ্ট ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা

সারাবাংলা/এসবিডিই

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সজীব ওয়াজেদ জয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর