Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সেদিন ঘাতকদের লক্ষ্য ছিল দুটো, বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা


২০ আগস্ট ২০২০ ২৩:০৭

আওয়ামী লীগ। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল। ঐতিহ্যবাহী দলটির নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে মোট চার বার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

আজকের আওয়ামী লীগ অনেক পরিণত, সুগঠিত। জনমানুষের দল হিসাবে পরিচিত। ৭৫ সালের সেই সংকটপূর্ণ অবস্থা থেকে আজকের এই পর্যায়ে আসতে চড়াই উতরাই আর প্রতিকূল পরিবেশ পেরিয়ে অতিক্রম করতে হয়েছে দীর্ঘ বন্ধুর পথ।

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘ এই পথচলায় নৌকার হাল শক্ত হাতে ধরে ছিলেন মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা। কেমন ছিল শেখ হাসিনার এই দীর্ঘ পথচলা। জানা জরুরি আজকের এই মসৃণ পথের পূর্বেকার ৭৫ পরবর্তী রাজনীতির যাত্রাপথ ঠিক কেমন ছিল।

প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর দ্বারা প্রায় ১৯ বার সশস্ত্র হামলার শিকার হওয়া, ৯০’ এর দশকে ৮ বার গৃহে অন্তরীপ অথবা গ্রেফতার হওয়া এবং সর্বশেষ সেনাসমর্থিত মেয়াদোত্তীর্ণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রায় ১১ মাস কারাভোগ করার পর আজকের এই জননন্দিত নেত্রী শেখ হাসিনা। আর আজকের এই আওয়ামী লীগ।

১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন গোড়াপত্তনের পর থেকেই দেশের আপামর জনসাধারণের কল্যাণ, মুক্তি ও অধিকার আদায়কে ব্রত হিসাবে নিয়ে কাজ করে চলেছে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলন এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর থেকে সর্বক্ষেত্রেই ষড়যন্ত্রের স্বীকার হওয়া দলটির নেতৃত্বে ছিলেন অনেক প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ নেতৃত্ব। কিন্তু নৌকার হালটা সবচেয়ে মানানসই ও নিরাপদ ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেই।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত হওয়ার পূর্বদিন পর্যন্ত প্রগতিশীল দলটির অভিভাবক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ৭১ সালের পরাজিত শক্তি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে দেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল, নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগকে।

সেই অপশক্তি পুরোপুরি সফল হতে না পারলেও কিছুটা সফল হয়েছিল। জাতির পিতা এবং জাতীয় চার নেতাকে হারিয়ে আওয়ামী লীগ সৃষ্টিলগ্নের পর সবচেয়ে কঠিন সময় অতিবাহিত করছিল। এই মুমূর্ষু ও সংকটময় অবস্থায় অনেকেই চেষ্টা করেছেন আওয়ামী লীগের যাত্রাপথকে মসৃণ করতে। কিন্তু দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে দিশেহারা, ছন্নছাড়া, নেতৃত্বের সংকট, গ্রুপিং সংগঠনটিকে মাথা উঁচু করে দাড়াতে দিচ্ছিল না।

দলের তৎকালীন শীর্ষনেতৃত্ব আপ্রাণ চেষ্টা করলেও কিছুর একটা অভাব রয়েই যাচ্ছিল। কোন কিছুর একটা শুন্যতাকে ঢাকা যাচ্ছিল না। সেই শুন্যতা পুরনে এবং দলের হাল ধরার জন্য নেতৃবৃন্দের চিন্তায় এলো বঙ্গবন্ধুর রক্তবীজ, তার আদর্শের উত্তরাধিকারিণী, ঐক্যের প্রতীক মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার কথা। যিনি বঙ্গবন্ধুর স্নেহাবেশে লালিত পালিত, আওয়ামী লীগের যৌবনের সব ধরনের ক্রিয়াশীল রাজনীতি, যুদ্ধের রণকৌশল, জাতীয় নেতৃত্বের রণনীতি খুব কাছ থেকে দেখেছেন এবং নিজেকে গড়েছেন ঠিক সেভাবেই।

দলের সকল স্থরের নেতৃবৃন্দের সর্বসম্মতিক্রমে ১৯৮১ সালের (১৩-১৫) ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে প্রবাসে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে ঘোষণা দেয়া হয়।

তৎকালীন সরকারের সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে দীর্ঘ ৬ বছরের প্রবাসজীবন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে আলোকবর্তিকা হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করলেন শেখ হাসিনা । সেদিন ঢাকা বিমানবন্দরে সকল নিরাপত্তার বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে কয়েক লক্ষ নেতাকর্মী অধীর আগ্রহে বসে ছিল তাদের প্রিয় নেত্রীর প্রত্যাশায়।

জনতার সংবর্ধনার জবাবে শেখ হাসিনা সেদিন বলেছিলেন, “বঙ্গবন্ধু ঘোষিত দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচী বাস্তবায়ন এবং শোষনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর কিছু পাওয়ার নেই। সব হারিয়েই আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে। পাশে থেকে বাংলার মানুষের মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য।”

পিতার মতো বীরের বেশে এলেন, বাংলার মানুষের মন জয় করলেন নিবেদিত নেত্রী।

যে পর্দার আড়ালে আওয়ামী লীগের সুনাম, ঐতিহ্যের ধারাটিকে ঢেকে দেয়া হয়েছিল, সেই পর্দাটিকে নিজের প্রজ্ঞা, বুদ্ধিমত্তার দরুন কেটে-ফেলে জনগণের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠার পুরো কৃতিত্বই শেখ হাসিনার। ডুব-প্রায় নৌকাকে স্রোতের প্রতিকূল থেকে বেয়ে আনতে বৈঠা ছিল শেখ হাসিনার হাতেই। জীবনের উপর হামলা হয়েছে বহুবার, গ্রেফতার হয়েছেন বারবার, রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর ষড়যন্ত্রও হয়েছে কিন্তু কোনো কিছুই তার প্রগতিশীল চিন্তার পথচলায় বাধা হতে পারেনি, কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি। এখনো বাঙ্গালির আশ্রয়স্থল সেই শেখ হাসিনাই।

এখনো শুনতে পাওয়া যায়, “যতদিন শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।”

পরিবার পরিজন হারিয়ে নিঃস্ব শেখ হাসিনা যখন মাত্র ৩৩ বছর বয়সে দেশে এসে দলের হাল ধরলেন তখন ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ২ লক্ষ বীরাঙ্গনার বাংলাদেশ সেই পাকিস্তানি প্রেতাত্মার এজেন্টদের হাতেই, খুনিদেরকে রাষ্ট্রীয় বড় বড় পদে বসানো হয়েছে, তাদের বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীরা নিয়ন্ত্রণ করছে দেশ, রাজনীতি। মুক্তিযোদ্ধারা কোণঠাসা। আর জাতির পিতার নাম মুখে তোলাও অপরাধ বলে গণ্য।

শেখ হাসিনাকে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে ৯০ দশকেই। ১৯৮১ সালের ২৯ শে মে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগে ১ম রাজনৈতিক ভাষণের মধ্য দিয়েই জনতার নেত্রী তার রাজনৈতিক পথচলা শুরু করলেন। সেই দিনটি ছিল শুক্রবার। বৃষ্টিতে ভিজে দাড়িয়ে থেকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তার আড়ম্বরহীন সাবলীল বক্তব্য শ্রবণ করেছেন প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ।

তারপর থেকে একের পর এক পরীক্ষা উপস্থিত হচ্ছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শের উত্তরাধিকারিণী শেখ হাসিনার কাছে। দলে অনেক অভিজ্ঞ নেতা থাকলেও কঠিন সিদ্ধান্তগুলো তাকে নিতে হয়েছিল একাই। একাই লড়াই করেছেন সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে, সামলে উঠে অতিক্রম করেছেন বন্ধুর পথ।

১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছিল দল পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে সহায়ক। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরো দেশে জনসংযোগ করেছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।

এই দশকের পুরো সময়ই সামরিক এরশাদের সৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে। স্বৈরাচারকে মোকাবেলা করার জন্য তার বিচক্ষণতায় গঠিত হয় ১৫ দলীয় ঐক্যজোট এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে সাথে নিয়ে কীভাবে যুগপৎভাবে লড়াই অব্যাহত রাখা যায় নেত্রী তার রূপরেখা ভাল করেই জানতেন।

শেখ হাসিনাকে দল পুনর্গঠনের সাথে মোকাবেলা করতে হয়েছে এরশাদের হীন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, কিছু স্বার্থনেস্বী নেতৃবৃন্দের বিশ্বাসঘাতকতা। কোরবান আলীর মতো লোকেরা মন্ত্রিত্বের লোভে পড়ে এরশাদের সৃষ্ট তৎকালীন “জাগদলে” যোগ দিয়েছেন। কিছু নেতা-কর্মী দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দিয়ে দলত্যাগী হয়েছেন।

বয়সে তরুণ শেখ হাসিনা তার সাংগঠনিক গুণের মাধ্যমে কৌশলে সামরিক এরশাদের সকল এজেন্টদের ছেঁটে-ফেলে মুল ধারার আওয়ামী লীগকে নিয়ে দৃঢ়তার সহিত এগিয়ে গেছেন। সংগঠনের নীতি পরিপন্থী কাজ করার দরুন তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ ৬ জন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে বহিষ্কার করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে।

১৯৮৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে অনেক কথা উঠলেও, এটি ছিল শেখ হাসিনার অন্যতম একটি দূরদর্শিতাপূর্ন সিদ্ধান্ত। আওয়ামী লীগের তীব্র আন্দোলনের ফলে সামরিক সরকারকে অন্তত ৫বার এই জাতীয় নির্বাচনের তারিখ পেছাতে বাধ্য করা হয়। সেই বছর ৭মে নির্বাচনে এরশাদের কারচুপি ও কলঙ্কজনক অধ্যায়ের পরেও এই নির্বাচনের ইতিবাচক দিক ছিল সামরিক সরকারকে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা। স্বৈরাচার বিরোধী তুখোড় আন্দোলনের ফলে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন জেনারেল এরশাদ।

স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি অনেক চড়াই উতরাই অতিক্রম করার মধ্য দিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তিকে মোকাবেলা করে দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসতে পেরেছিলেন। ১৯৯৬ সারের ১২ই জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখন বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলো একটি। তালিকায় ২/৩ নম্বরে। সেখান থেকেই তিনি বাংলার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক জীবনে মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পেরেছিলেন।

জিয়াউর রহমান ও এরশাদ ক্যান্টনমেন্ট থেকে বিপথগামী রাজনীতির অপধারাটি শুরু করে মূলধারার রাজনীতিতে যে আঘাত হানেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এর পুনর্জীবনের ফলে সেই ধারা কুপোকাত হতে বাধ্য হয়।

বঙ্গবন্ধু কন্যা যে দেশকে অমিত সম্ভাবনার দেশ হিসাবে বিশ্বসভায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন, পরবর্তী (২০০১-২০০৫) মেয়াদে খালেদা জিয়া সেই দেশকে নিয়ে গেছেন দুর্নীতি, দৃবৃত্তায়ন ও দুঃশাসনের চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই পাঁচ বছর এবং পরবর্তী সেনাসমর্থিত অবৈধ তত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেশকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল একেবারে খাদের কিনারায়। শেখ হাসিনাসহ তার আওয়ামী লীগের উপর নেমে এসেছিল নির্যাতনের স্টিমরোলার। এই সময়কালে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল অন্তত ৫বার তন্মধ্যে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টের আক্রমণ ছিল সবচেয়ে বর্বরোচিত। সৃষ্টিকর্তার অসীম কৃপায় আমাদের প্রিয় নেত্রী সেদিন বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ যায় আইভি রহমানসহ ২৪ নেতা-কর্মীর। এক এগারোর অবৈধ তত্বাবধায়ক সরকারের সময় জেল, জুলুম এবং রাজনীতি থেকে নির্বাসনের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রও করা হয়েছিল।

সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে ২০০৮ সালের ১১ জুন মুক্তি পায় জননন্দিত নেত্রী শেখ হাসিনা। অভিশাপ থেকে মুক্ত হয় প্রিয় মাতৃভূমি। সেই বছরের ২৯শে ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলার জনগণ আওয়ামী লীগকে এবং তাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে সমাপ্তি ঘটায় চার দলীয় জোট ও তত্বাবধায়ক সরকারের দুঃশাসনকাল।

২০০৯ সালের ৬ই জানুয়ারি দিনবদলের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার গঠিত হয়েছিল, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রগতিশীলতার ধারা সূচিত হয়েছিল, মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা সেই প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে হয়ে ওঠেন আগামীর “দিন বদলের নেত্রী”।

লেখক: শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

২১ আগস্ট শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর