বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, বাঙালির বিজয় পূর্ণতার দিন
১০ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৪০
বঙ্গবন্ধু জন্ম না নিলে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টি অধরা রয়ে যেত। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এবং স্বাধীনতা একই সূত্রে গাঁথা তিনটি শব্দ। এই তিনটি শব্দ অবিচ্ছেদ্য এমন এক স্বত্ত্বা, যা বাঙালি জাতির অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রাম ছিল বাঙালির মুক্তি আর গৌরবময় পরিচয় প্রতিষ্ঠা। সে সংগ্রামে অদম্য তিনি, অধিকার আদায়ে আপোষহীন ছিলেন সবসময়।
পাকিস্তান রাষ্ট্রের ২৪ বছরের ইতিহাসে ১২ বছরই তাঁর পাকিস্তানের জেলে কেটেছে তবুও তিনি বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে কোন আপোষ করেননি। ২৫শে মার্চ কালরাতে মৃত্যু হতে পারে জেনেও পালিয়ে গিয়ে বাঙালি জাতিকে ছোট করেননি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তাঁকে বন্দী করে রাখা হয় পাকিস্তানের কারাগারে। বাঙালি যখন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে, বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের কারাগারে প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামি হিসেবে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। বাঙালিদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আন্তর্জাতিক চাপে শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি পাকিস্তানের বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয় পূর্ণতা পায়। ১০ জানুয়ারি তিনি ঢাকায় পৌঁছানোর পর আনন্দে উদ্বেল লাখ লাখ মানুষ বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পর্যন্ত তাঁকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানায়।
বাঙালি জাতির আত্মসম্মান তাঁর রাজনৈতিক দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। এছাড়া বাঙালি জাতির সার্বিক মুক্তিই ছিল তাঁর মূল রাজনৈতিক দর্শন। গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যেমন তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন তেমনই শোষণহীন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যও তিনি সংগ্রাম করেছেন। এমনকি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই তিনি জীবন দিয়েছেন। এক কথায় বলা যায় বাঙালির সার্বিক মুক্তিই তাঁর রাজনৈতিক দর্শন। আর স্বাধীন রাষ্ট্র ছাড়া এই মুক্তি কোন অবস্থাতেই সম্ভব ছিল না বলেই তিনি হাজার বছরের পরাধীন একটি জাতিকে ধীরে ধীরে সংগঠিত করে, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এবং বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও নিজের আদর্শ ও উদ্দেশ্যের প্রতি অবিচল থেকে স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক পথচলার সূচনা বিষয়ে আলোচনা করতে হলে বলা যেতে পারে যে, মূলত ইংরেজ শাসন আমলেই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের মূল ভিত্তি ছিল বাঙালি জাতির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মুক্তি। তিনি আশা করেছিলেন পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোতে হয়ত তা সম্ভব হবে। তাই তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর পরই যখন ভাষার দাবিকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানিদের সাথে বাঙালিদের বিরোধের সূত্রপাত হয় এবং তখনই তিনি বুঝতে পারেন পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোতে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাই ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলীম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন বাঙালি মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য। যা ১৯৫৫ সালে আওয়ামী লীগ নামে একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলে পরিণত হয় ও স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেয়।
বঙ্গবন্ধু বাল্যকাল থেকেই যে রাজনৈতিক দীক্ষায় দীক্ষিত হয়েছিলেন, সেটি সব সময় ছিল মানুষের পক্ষে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন মানব মুক্তি আর শোষণহীন সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার। তার চিন্তা জগতের অপরিহার্য ছিল, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানি শোষণ থেকে মুক্তি। বঙ্গবন্ধুর এই মুক্তি আন্দোলনের শুরু হয় ১৯৪৭ সালের পর থেকেই। যদিও চূড়ান্ত রূপটি আসে আরও পরে। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগের পর থেকেই এক নতুন অধ্যায়ের পথে যাত্রা শুরু করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। কেননা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলেও বাঙালি তার আত্ননিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ করতে পারেনি। পাকিস্তানি শাসকদের বিরামহীন বঞ্চনার শিকারে পরিণত হয় বাংলার কোটি কোটি জনতা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন গণতন্ত্রের অতন্দ্র সৈনিক। কৈশোর থেকেই তিনি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে ছিলেন সোচ্চার। বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আটান্নর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা-আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ- প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন নেতৃত্বের ভূমিকায়। বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনের প্রধান শক্তির উৎস ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে তিনি ছিলেন সর্বদা বজ্রকণ্ঠ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে তার ভাষণ গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে, স্বাধীকারের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে এক ঐতিহাসিক দলিল। ওই ভাষণ একটি জাতিকে জাগ্রত করেছে, একবিন্দুতে মিলিত করেছে। এমন ঘটনা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ৭মার্চের ভাষণেই রচিত হয়েছে বাঙালির মুক্তির নির্দেশনা। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির ঝাঁপিয়ে পড়া, জীবন উৎসর্গ করা সবটাই যেন সেই নির্দেশনারই বাস্তবায়ন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এক ধরনের মন্ত্রমুগ্ধতা ছিল। তিনি যেন সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট, আশা-আকাঙ্ক্ষা পড়তে পারতেন। সে কারণে তাঁর গণমানুষপন্থী সব বক্তব্যেই সাধারণ মানুষ জেগে উঠতেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ছাড়া বাংলাদেশের জন্ম সম্ভব হতো না। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যভাবে লিখিত হতো। বাঙালি জাতির অবরুদ্ধ থাকার, অধীন থাকার ইতিহাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতো। কিউবার প্রেসিডেন্ট বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রোর কথাই ধরুন। তিনি বলেছিলেন, আমি হিমালয় দেখিনি, আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট (১৯৭২ সালের এক সাক্ষাৎকারে) বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনার শক্তি কোথায়? বঙ্গবন্ধু সে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি। আর আপনার দুর্বল দিকটা কী? বঙ্গবন্ধুর উত্তর, আমি আমার জনগণকে খুব বেশি ভালোবাসি। জনগণের অন্তর্নিহিত শক্তির ওপর অপার আস্থা-বিশ্বাস, মানুষের প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসা, মমত্ববোধ, সহমর্মিতার বিরল দৃষ্টান্ত সমৃদ্ধ মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ কারণেই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক-অভিন্ন। কবি-মনীষী অন্নদাশঙ্কর রায় বাংলাদেশের আরেক নাম রেখেছেন ‘মুজিব ল্যান্ড’। এক অর্থে বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের ইতিহাস। তার জীবন ও ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিশেষ সময়খণ্ডের কথা আমরা জানতে পারি। শোষক ও স্বেচ্ছাচারী শসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধু পালন করেছেন ঐতিহাসিক ভূমিকা। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শক্তির শৃঙ্খল থেকে তিনি বাঙালি জনগোষ্ঠীকে মুক্ত করে স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সেই স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করেছেন। এ মুক্তির সংগ্রামে তিনি নিজের জীবনকে তুচ্ছ করেছিলেন।
ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক। বঙ্গবন্ধু জন্ম না নিলে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টি হতো না। বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে বঙ্গবন্ধুর নাম। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন রাষ্ট্র পুনর্গঠনের তাঁর অবদান নিশ্চয় স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে আছে। ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে তাঁর সেই ভাষণটি ছিল প্রণিধানযোগ্য, তিনি তাঁর ভাষণে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ পুনর্গঠনের কাজের প্রতিই সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সম্মিলিত উদ্যোগে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন বারবার। দৃপ্তকণ্ঠে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, বাংলাদেশের পুনর্গঠন কাজ পরিচালিত হবে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। রেসকোর্সের সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেন- “…গত ৭ই মার্চ আমি এই রেসকোর্সে বলেছিলাম ‘দুর্গ গড়ে তোলো’। আজ আবার বলছি আপনারা একতা বজায় রাখুন। আমি বলেছিলাম, ‘বাংলাদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ’। বাংলাদেশ আজ মুক্ত, স্বাধীন।…বাংলাদেশ ইতিহাসে স্বাধীন দেশ রূপেই বেঁচে থাকবে।…গত দশ মাসে পাকিস্তানের বর্বর সেনাবাহিনী বাংলাকে বিরান করেছে। বাংলার লাখো মানুষের আজ খাবার নাই, অসংখ্য লোক গৃহহারা।…আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, নেতা হিসেবে নয়, আপনাদের ভাই হিসেবে বলছি- যদি দেশবাসী খাবার না পায়, যুবকরা চাকরি বা কাজ না পায় তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে, পূর্ণ হবে না। তোমরা, আমার গেরিলা ভাইয়েরা, গেরিলা হয়েছিলে দেশমাতার মুক্তির জন্য। তোমরা রক্ত দিয়েছ। তোমাদের রক্ত বৃথা যাবে না।… বাংলাদেশ আজ মুক্ত, স্বাধীন। কিন্তু আজ আমাদের সামনে অসংখ্য সমস্যা আছে, যার আশু সমাধান প্রয়োজন। বিধ্বস্ত বাংলাকে নতুন করে গড়ে তুলুন। নিজেরা সবাই রাস্তা তৈরি করতে শুরু করুন। যার যার কাজ করে যান।”
(বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, দৈনিক বাংলা, ঢাকা, ১১ জানুয়ারি ১৯৭২ দ্রষ্টব্য)।
বিপুল জনসংখ্যার এই স্বল্পায়তনের বঙ্গভূমির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং উন্নয়নের রূপকার ও নির্মাতা ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সদ্য-স্বাধীন দেশে রাত-দিন এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে গেছেন। কীভাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠন ও নির্মাণ করা যায় সে ভাবনায় রত ছিলেন। তিনি সফলতার দেখাও হয়তো পেতেন পর্যাপ্ত সময় পেলে। কিন্তুু পরিতাপের বিষয় ৭৫–এর পনের আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ বহু আগেই পৌঁছে যেত উন্নত বিশ্বের কাতারে। কিন্তু দেশি–বিদেশি চক্রান্ত বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকে রক্তাক্ত করে দিয়েছে। আশার কথা হলো ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অপমৃত্যু ঘটাতে পারেনি। তাঁর হাত ধরে যে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়েছিল, সে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন তরুণ প্রজন্মের হাতধরে পূর্ণতা পাবে বলে বিশ্বাস করি।