Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনায় বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে হবে


৩০ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:০৭

আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। করোনায় একেবারে বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থা। কবে যে এ পরিস্থিতি পুরোপুরিভাবে স্বাভাবিক হবে কেউ বলতে পারছে না। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নানাভাবে চেষ্টা করছেন এ থেকে উত্তরণের।

প্রতিদিন যে প্রাঙ্গণ ছাত্রছাত্রীদের পদচারণায় মুখর থাকতো, ওরা এদিক-ওদিক ছুটাছুটি আর দুষ্টুমি করতো, ক্লাসগুলো জমজমাট থাকতো ওদের সরব উপস্থিতিতে, সে প্রাঙ্গণ হঠাৎই স্তব্ধ হয়ে গেছে। এর আগে এ ধরণের পরিস্থিতির মুখোমুখি কেউ কখনো হয়নি। এত  দীর্ঘসময় বন্ধ থাকেনি স্কুল-কলেজগুলো। এই সময় যেন শেষ হচ্ছেই না।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বের বহু দেশে এখনো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইউনেস্কোর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের ১৩০টি দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ব্যতিক্রম নয় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও। প্রকৃতপক্ষে, কোটি শিক্ষার্থীকে সামাল দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। সে কারণে হয়তো ভেবেচিন্তে ছুটি বাড়ানো হচ্ছে।

ইতিমধ্যে করোনার কারণে বাতিল করা হয়েছে এইচএসসি, জেএসসি, পিইসি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষাও। আজ ৩০ জানুয়ারি, শনিবার, এইচএসসির অটোপাসের ফল প্রকাশ হয়েছে।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালে ভবিষ্যতেও কিভাবে ছাত্রছাত্রীদেরকে পড়াশুনায় ব্যস্ত রাখা যায় তার কৌশল উদ্ভাবনের চেষ্টা করতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা। সচেতন পরিবারের সন্তানসন্ততিরা হয়তো অভিভাবকের তাগাদার কারণে পড়াশোনা করতে বাধ্য হয়। অসচ্ছল পরিবারে এই সুযোগটা নেই বললেই চলে। এমতাবস্থায় শিক্ষামন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং দফতর শিক্ষার্থীদের বাড়িতেই পড়ার টেবিলে বসানোর নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে ‘ঘরে বসে শিখি’তে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণীর ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বিটিভিতেও এর সম্প্রচার শুরু করা দরকার। ফেসবুক এবং অনলাইনের মাধ্যমে নানা গ্রুপ ও পেজ থেকে শিক্ষকরা ক্লাস নিচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু অবস্থায়ও এসবের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠনের স্বার্থে করোনাকাল ছাড়াও জরুরি সময়ে শিক্ষাকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে হলে অনলাইন মাধ্যমকে আরও বেশি কাজে লাগাতে হবে। বিশেষ করে অসচ্ছল পরিবারের বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীকে কিভাবে অনলাইন মাধ্যমে যুক্ত করা যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে। এসব পরিবারে প্রয়োজনে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে স্মার্টফোন, টিভি সরবরাহের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সিলেবাস কমানো, পরীক্ষা কমানোসহ সব ধরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। ভবিষ্যতে কোনোভাবেই যেন পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাসের দিকে যেতে না হয়, সে ধরণের কার্যক্রম আগেভাগেই নিতে হবে। তাছাড়া, ইমার্জেন্সি টাইমেও কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখা যায় তার পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হবে।

বিশ্বব্যাপী করোনা ছড়িয়ে পড়ে খুব দ্রুতই। শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠনে যে কোনো কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠন পরিষদ কমিটি করে তাদের পরামর্শে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।

জানি, এ মহামারি কোনো একদিন চলে যাবে। শিশুদের কলকাকলিতে আবার ভরে উঠবে স্কুল আঙ্গিনা আর খেলার মাঠ। শিক্ষাব্যবস্থা ফিরবে আগের অবস্থায়—এমন প্রত্যাশা শিক্ষাবান্ধব সকল মানুষের।

লেখক: শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক

অটোপাস করোনাভাইরাস শিক্ষা ব্যবস্থা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর