Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আল জাজিরার মিথ্যাচারে ভুগছে মধ্যপ্রাচ্য


৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:১৮

আল জাজিরা কাতারভিত্তিক মিডিয়া, যার উত্থান মূলত মিশরে আরব বসন্তের সূত্র ধরে। মিশরে ২০১০ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় আল জাজিরার কাজ ছিল জনগণকে বিভ্রান্ত করা। মিশরের জনগণ আজও সেই ভুল সংবাদের কান দেওয়ায় ভুগছে। কারণ আরব বসন্তের কারণে এখনো মিশরের ৩০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করছে, প্রতিবছর ১৪ শতাংশ হারে গড়ে সকল দ্রব্যের দাম বাড়ে। আরব বসন্তের বলি হয়ে সেখানে অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী শতকরা ৩০ শতাংশ।অথচ আরব বসন্তের আগে শিক্ষা বা দারিদ্রের হার সব সময় মিশরে ১০-১৫ শতাংশর মধ্যে উঠানামা করত।

আরব বসন্তের সূত্রপাত আল-জাজিরার প্রোপাগান্ডাগুলোর সূত্র ধরে। সেই থেকে আরব বসন্তের আগুন লাগায় ইয়েমেন সিরিয়া ,ইরাক, তিনিউশিয়া, লিবিয়াতে। এখনও সে সকল দেশের জনগণ আক্ষেপ করে কী হারালাম আমরা বলে! খাদ্য, বাসস্থান শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসার দুর্গতি তাদের জীবনকে সাক্ষাৎ নরক বানিয়ে ছেড়েছে।

ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে সিরিয়ার ৭৫ শতাংশ, ইয়েমেনের ৭২ শতাংশ, লিবিয়ার ৬০ শতাংশ , তিউনিশিয়ার ৫১ শতাংশ, ইরাকের ৪৫ শতাংশ, আলজেরিয়ার ৪০ শতাংশ, মিশরের ৩২ শতাংশ লোকের জীবন মানের চরম অবনমন হয়েছে আল জাজিরার মতো তথাকথিত মিডিয়ার গুজবের কারণে।

এই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় যুদ্ধ বিগ্রহ সৃষ্টি করার অন্যতম মূল হোতা কিন্তু আল জাজিরা। এই বিষয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তে আহমেদ সুয়াগ নামে আল জাজিরা আরবির এক সংবাদপাঠকের ভাষ্য আপনাদের ভাবতে বাধ্য করবে, ‘আমরা জানতাম সামনে কিছু আসছে। আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সবচেয়ে দ্রুত সংবাদ প্রচার করা যেগুলো মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে এবং খবর সংগ্রহ করা। সেজন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় ক্যামেরা এবং রিপোর্টার পাঠিয়ে দিতাম’। মিশরের সংবাদ সংস্থাগুলোর মতে আল জাজিরার একটি গোপন উদ্দেশ্য ছিল এবং আল জাজিরার একজন বিদেশি গুপ্তচর টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে বলেছিল, ‘তাদের কাতারের আল জাজিরার অফিসে প্রশিক্ষণ দেয় আমেরিকা এবং ইসরাইলের অজ্ঞাত ব্যক্তি দ্বারা’।

আল জাজিরার মিথ্যা গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে সিরিয়ার, ইয়েমেনের, লিবিয়ার, তিউনিশিয়ার, ইরাকের, আলজেরিয়ার মিশরের কোটি মানুষের জীবনে এক ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে যার ফল এখনও ভোগ করছে নিরীহ জনগণ। আল জাজিরা চলে মূলত কাতারের পেট্রো ডলারে।

আল জাজিরার প্রতিষ্ঠাতা শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানি তার বাবাকে সশস্ত্র ক্যুর মাধ্যমে সরিয়ে ক্ষমতায় দখল করেন। এরপর তিনি আল জাজিরা প্রতিষ্ঠা করেন মধ্যপ্রাচ্যে তার সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য। আল থানির প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে আগুনের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে এবং ২০২১-এ এসে একসময়ের মধ্যপ্রাচ্যের বিত্তশালী দেশগুলো ধুঁকছে খাদ্যের অভাব, শিক্ষার অভাব, চিকিৎসার অভাবে। প্রভাব বিস্তার নিয়ে সৌদির সঙ্গে কাতারের সমস্যা বাধে সেই ১৯৯৬ সালে আল থানীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে। আল জাজিরা তার সৌদি বিদ্বেষী প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে নিষিদ্ধ।

বর্তমানে সমসাময়িক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আল জাজিরা এক প্যারাডক্সের নাম। যে কোন সময়ে গুজব তৈরি করে নিরীহ মানুষকে খেপিয়ে দিয়ে নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তারি এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপপ্রয়াস চালাচ্ছে আল জাজিরা। তবে আশার বাণী হচ্ছে, এখনকার মানুষ অনেক সচেতন, তাই আল জাজিরার গাল গল্প মানুষ গোনায় ধরে না।

সূত্র: দৈনিক গার্ডিয়ান, ফরেন পলিসি

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক আল-জাজিরা টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর