Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিবিরের নৃশংসতার ইতিহাস; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব-৩)


১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:০৫

দ্বিতীয় পর্বের পর

২০০৯ সালের ২৮ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকায় সহিংসতায় নেতৃত্বদানকারী শিবির ক্যাডার সাঈদুর রহমান ওরফে সাঈদুরকে পুলিশ একটি শিবির নিয়ন্ত্রিত মেস থেকে আটক করে।

২০০৯ সালের ২৪ আগস্ট ছাত্রলীগের দুই জন কর্মীকে ছুরিকাঘাতে আহত করার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিবির ক্যাডারকে আটক করে পুলিশ।

২০০৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাবির সৈয়দ আমীর আলী হল শাখার সভাপতি শিবির ক্যাডার একরামুল পুলিশ ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলায় জড়িত থাকার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের হাতে আটক হয়।

২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর মতিহার থানাসহ রাজশাহীর বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক অস্ত্র, নারী নিপীড়ন ও অধ্যাপক ইউনুস হত্যা মামলার আসামি শিবির ক্যাডার জাফর বাবুকে পুলিশ রাজশাহী শহরের কাটাখালি মিউনিসিপ্যালিটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

২০০৯ সালের ১৫ নভেম্বর রাবির ৩টি হলে অভিযান চালানোর সময় পুলিশ শিবির ক্যাডার হাসমত আলী ওরফে লিটনকে গান পাউডার ও বিভিন্ন প্রাণঘাতি রাসায়নিক দ্রব্যসহ আটক করে।

২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শিবির আবারও রগ কাটার রাজনীতিতে ফিরে আসে। এই দিন ছিল শিবিরের রগ কাটার সবচেয়ে সফল অভিযান। ওইদিন গভীর রাতের হামলায় শিবির ক্যাডাররা ছাত্রলীগ কর্মী ফিরোজ মাহমুদ, আরিফুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম এবং সাইফুর রহমান বাদশার রগ কেটে দেয়। সেদিনের হামলায় শাহ মখদুম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারুক হোসেন নামের অপর এক ছাত্রলীগ কর্মীর রগ কেটে দেওয়ায় ও পিঠে হাসুয়ার কোপে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয় এবং ঘটনাস্থলেই সে মৃত্যুবরণ করে। পরে তার লাশ ম্যানহোলের ভেতরে লুকিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকাণ্ডের পরে কার্যত তারা ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হয়। ফারুক হত্যার পরে তারা ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হলেও থেমে থাকেনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।

২০১০ সালের মার্চে রাবি ক্যাম্পাস দখল করতে এসে বিনোদপুর বাজারে ৩ ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে জখম করে শিবির ক্যাডার। এ ঘটনায় সোহরাওয়ার্দী হলের ৮ শিক্ষার্থী আহত হয়।

২০১১ সালের ১২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পেছনে শিবির ক্যাডাররা কুপিয়ে জখম করে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ রানাকে।

২০১২ সালের ৮ এপ্রিল তাপসী রাবেয়া হলের সামনে শিবির ক্যাডাররা কুপিয়ে জখম করে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন টিপুকে।

২০১২ সালের ১০ মে তালাইমারী শহিদ মিনারের পাশে শিবির ক্যাডাররা কুপিয়ে জখম করে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজকে।

২০১২ সালের ২০ অক্টোবর রাবি সংলগ্ন বিনোদপুর বাজার এলাকায় রাতে শিবির ক্যাডার হাতে ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুর রহিম (বহিরাগত) খুন হন এবং একই দিন দুপুরে রাবি ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান হোসেন গুপ্ত হামলার শিকার হন।

২০১২ সালের ২৪ অক্টোবর নগরীর আরডিএ মার্কেটের সামনে শিবির ক্যাডাররা রাবি শাখার শেরে বাংলা হলের ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রতনকে মারাত্মকভাবে ছুরিকাঘাত করে।

২০১২ সালের ২১ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আখেরুজ্জামান তাকিমকে সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের পশ্চিমপাড়ায় শিবির ক্যাডাররা কুপিয়ে জখম করার পর এক পা এবং এক হাতের রগ কেটে দেয়।

২০১৩ সালের ১৭ মার্চ রাতে ক্যাম্পাসের পাশে বিনোদপুর বাজারে মহানগরীর ৩০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির।

২০১৩ সালের ১৪ এপ্রিল রাতে শিবিরের বর্বরতায় পা হারান রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচণ্ডী এলাকায় হামলার শিকার হন হাবিব। ক্যাডাররা তার বাম পা এবং ডান হাতের রগ কেটে দেয়। পরে চিকিৎসকরা হাবিবের ডান পায়ের হাঁটু পর্যন্ত কেটে ফেলে তার জীবন রক্ষা করেন।

২০১৩ সালের ২৩ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সৈয়দ আমীর আলী হলে ছাত্রলীগের আলোচনা সভা শেষ করে রাত ১০টার দিকে পাঁচ-ছয়জন নেতাকর্মীসহ মাদার বখশ হলের দিকে যাওয়ার পথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল হোসেন তুহিনের ডান হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির সন্ত্রাসীরা। এসময় ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক শাওন শিবিরের হামলায় আহত হয়। শাওন গুলিবিদ্ধ হয়।

২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সাদ্দামের হাত এবং পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডাররা। এসময় তিনি ফুসফুসে মারাত্মক আঘাত পান।

২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের শাহ্ মখদুম (এসএম) হলের সভাপতি খলিলুর রহমান মামুন ছাত্রশিবির হাতে নিজ জেলা গাইবান্ধাতে নিহত হন।

২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর শিবির ক্যাডাররা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতরের এক কর্মচারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সেলিম রেজা খান সেলুর রগ কেটে দেয়।

২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলে ককটেল হামলা করে শিবির ক্যাডাররা। বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ক্রীড়া সম্পাদক কাজী লিংকন ও উপ-প্রচার সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম শুভ্র। আরও আহত হন সকালের খবরের আলোকচিত্রী আজহার উদ্দিন ও এটিএন নিউজের ক্যামেরাম্যান রুবেল হোসেন।

২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচণ্ডি এলাকায় শিবির ক্যাডাররা মতিহার থানার ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক ডিউকের দুই হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়।

শিবিরের নৃশংসতার ইতিহাস; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব-১)

শিবিরের নৃশংসতার ইতিহাস; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব-২)

লেখক: প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ

জয়দেব নন্দী শিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর