চিরদিনের বাতিঘর: প্রফেসর আবদুল জলিল
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৭:১৬
এক.
নোয়াখালী অঞ্চলে কেনোই বা তিনি কিংবদন্তী— এ প্রশ্নটি নতুন প্রজন্মের কাছে হয়তো আজ জিজ্ঞাসা। কেননা কুড়ি বছর চলে গেছে, তার চলে যাওয়ার। একটি অনগ্রসর অঞ্চলে উচ্চতর শিক্ষাকে গণমুখী করে তোলার পাশাপাশি শিক্ষিত সমাজে রূপান্তর তাকে কিংবদন্তী করে তুলেছে। তবে কেমন মিথ তিনি? ‘পান খাওয়া’, ‘বড়শি দিয়ে মাছ ধরা’-ই কি মিথ? তার মিথ হচ্ছে তার সাহসিকতা, তার দৃঢ়তা, আপন কর্ম সম্পাদনে গভীর প্রত্যয়ে অভিযাত্রা।
‘পাছে লোকে কিছু বলা’র মতো কোনো সংশয়-সংকোচ-দ্বিধা বা কোনো হুমকি-হয়রানি তার কাজকে কখনো শ্লথ করতে পারেনি। সংক্ষুব্ধ নদী নিকটবর্তী দক্ষিণ জনপদের অবহেলিত ইতিহাসের গভীরে প্রবেশ করে তন্ন তন্ন করে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, নিখুঁতভাবে গড়তে চেষ্টা করেছেন দক্ষিণাঞ্চলের উচ্চশিক্ষার দ্বার। যিনি শিক্ষার আলো জ্বালাতে গিয়ে সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের সমগ্র শক্তিকে নিয়োজিত করেছেন। সম্পূর্ণ নিজেকে নিবেদন করেছেন।
দুই.
প্রফেসর আবদুল জলিল। ‘অধ্যক্ষ আবদুল জলিল’—এক নামেই তিনি পরিচিত। তিনি একাধারে শিক্ষাবিদ, শিক্ষাপ্রশাসক, লেখক, ক্রীড়া সংগঠক, কর্মবীর ও অক্লান্ত সমাজসেবী। মেঘনাপাড়ের মানুষের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত সংগ্রামী মানসিকতার অধিকারী তিনি। নিজের এলাকার শিক্ষা উন্নয়নের একজন স্বাপ্নিক।
অধ্যক্ষ হিসেবে নোয়াখালী সরকারি কলেজে যোগদানের পর, তিনি এ কলেজের উন্নয়নে দিন-রাত পরিশ্রম করতে থাকেন। বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করতে থাকেন। তখনকার দিনে টাইপ মেশিন ছিলো, কম্পিউটার ছিলো না। মাঝে মাঝে নিজেও টাইপ করতেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তিনি চিঠি পাঠাতেন। কলেজের আসবাবপত্র লাগবে, কলেজের ফ্যাকাল্টি ভবন লাগবে। কলেজের রাস্তাঘাট নাই, ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধা-বেঞ্চ নাই, বসতে পারে না, বাউন্ডাররি ওয়াল লাগবে, মাটি বরাদ্দের জন্য, শিক্ষক স্বল্পতা, শিক্ষকের জন্য-ইত্যাদির জন্য তিনি লিখতেন। একবার নয়, কয়েকবার লিখতেন। স্ব-শরীরে ধরণা দিতে থাকেন। কিভাবে কলেজকে এ অঞ্চলের বড় বিদ্যাপীঠে পরিণত করা যায়, তার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ তিনি নেন। কলেজকে বড় অবয়বে নিয়ে যেতে কলেজ স্থানান্তর করার কাজে তিনি হাত দেন। নিজেদের আধিপত্য হারানোর ভয়ে একটি গোষ্ঠী তখন তার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে। বিভিন্নভাবে তাকে নাজেহাল করার চেষ্টা করে। নোয়াখালী জেলা শহরের বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে তার নামে চিকা মারা হয়—‘জলিল তুই কবে যাবি?’ তার নামে মামলা করা হয়। তাকে এ কলেজ থেকে সরানোর জন্য বদলি করা হয়। তার দৃঢ়তা তাকে আবার এ কলেজে ফিরিয়ে আনে। তিনি থমকে যাননি। পিছু হটেননি। যেদিন কলেজটি বর্তমান স্থানে স্থানান্তর হবে, সেদিনও তার বাসায় হামলা করা হয়। বহুবার তিনি অপদস্থ হয়েছেন। তাকে রিকশায় তুলতো না অনেকদিন, পুরাতন ক্যাম্পাস থেকে তিনি হেঁটে হেঁটে বাসায় আসতেন।
অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে নোয়াখালী সরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু হয়, যা ছিলো বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের প্রাণের দাবি। নোয়াখালী সরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালুর জন্য যে পদ্ধতি তিনি অবলম্বন করেছেন, সেসময়ে তাকে সোজা পথের পদ্ধতি হয়তো বলা যাবে না, কিন্তু কালের বিচারে প্রমাণিত হয়েছে এটা ছিলো সঠিক পন্থা। সঙ্গত উপায়। তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী প্রফেসর শাহ্ সুফিয়ান নোয়াখালী সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বার্ষিক প্রকাশনা সমন্বয় তৃতীয় সংখ্যায় ‘স্মৃতিটুকু রেখে গেলাম’ শীর্ষক শিরোনামে নিবন্ধে লেখেন—‘নোয়াখালীর মত অবহেলিত একটি জেলার দারিদ্র-নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর সন্তানরা বাড়িতে বসে পান্তাভাত খেয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করবে এটা ছিলো কল্পনার অতীত। যা নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর আবদুল জলিলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মহৎ কল্পনার ফসল …। অধ্যক্ষ জলিল যার অনুমোদনের জন্য সপ্তাহে ৫দিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতেন। যা আজও আমি কল্পনা করতে পারি না।’
অনার্স চালু করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। প্রয়োজনীয় পদসৃষ্টির জন্য উঠেপড়ে লাগলেন। পদ সৃষ্টির মতো একটি জটিল-দুরূহ বিষয় অত্যন্ত পারদর্শিতার সাথে তিনি কৃতকার্য হলেন, যা দেশের শীর্ষস্থানীয় কলেজ সক্ষম হয়নি। মাস্টার্স ডিগ্রি খোলার অনুমতিও তিনি আদায় করলেন।
নোয়াখালী সরকারি কলেজের সংকটকালে তার স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি ও কার্যকর পদক্ষেপই ছিলো তার ব্যক্তিগত মর্যাদার ভিত্তি। উদ্দেশ্যের সরলতা ও চিন্তার সূক্ষ্মতার মধ্যেই ছিলো তার শক্তি। তার প্রকাশভঙ্গি ছিলো মর্যাদাময়। তিনি সিংহের মতো সাহসী ছিলেন। অনেক বাধা অতিক্রম করে তিনি হয়ে উঠেছিলেন অদম্য, দুর্নিবার। তার জীবদ্দশায় কলেজের জন্য তিনি আরো জায়গার প্রস্তাব করেছিলেন। এছাড়া লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের উন্নয়নে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। অতি অল্প সময়ে তিনি বিএসসি চালুসহ এ কলেজের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অনার্স চালুর উদ্যোগ তার কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন।
নোয়াখালীবাসী তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তার মৃত্যুর পর নোয়াখালী সরকারি কলেজের অডিটরিয়ামের নামকরণ করে ‘অধ্যক্ষ আবদুল জলিল অডিটরিয়াম’।
তিন.
প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী লিখেছিলেন—‘শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রজ্ঞাপন। সমাজের গুণীজনদের নিয়ে যতোবেশি লেখালেখি হবে ততোই আধুনিক ও মননশীল সমাজের পথ প্রসারিত হবে। অধ্যাপক আবদুল জলিলের মতো ভালো মানুষেরা কখনো মরে না।’
শিক্ষাবিদ আবদুল জলিলের জন্ম নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার সিংবাহুড়া গ্রামে। সময়টি ১৯৪০ সালের ৪ জুলাই। তার পিতা ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একজন যোদ্ধা, পরবর্তীকালে সরকারি চাকুরিজীবী। মা রূপবানু ছিলেন রত্নগর্ভা, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তার সব ছেলে-মেয়েকে তিনি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। এই কারণে পাকিস্তান সরকার রত্নগর্ভা পুরস্কারে ভূষিত করে।
চার.
স্কুলজীবন থেকেই তিনি একজন কৃতি খেলোয়াড় ছিলেন। স্থানীয় অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন ১৯৫৩-৫৪ সালে তার নেতৃত্বে ফুটবলে স্কুল টিম চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৬১ সালে তারই নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বাণিজ্য বিভাগ প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। একই বছর বাস্কেটফল প্রতিযোগিতায় তার দল রানার্সআপ হয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ও আন্তঃহল ক্রীড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশেষ সনদ লাভ করেন। এছাড়া তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়া সংগঠক পুরস্কার লাভ করেন।
পাঁচ.
প্রফেসর আবদুল জলিল সাংবাদিক ফজলুল করিমের নেতৃত্বে স্কুলে ছাত্র থাকাবস্থায় ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তখন তিনি অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। দেয়াল লিখন করেছেন। খবরের কাগজে আলতা পোস্টার লিখেছেন। স্কুল থেকে মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়সহ নানারকম সহযোগিতা অব্যাহত রাখেন। কয়েকবার পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। তার বাসায়ও হামলা করে ওরা। কাকতালিয়ভাবে তিনি বেঁচে যান। জেলা প্রশাসন থেকে যে কজন অধ্যাপক-বুদ্ধিজীবী সতর্ক করা হয়েছে, তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। তার অনেক সম্পদের সাথে কিছু বইয়ের পাণ্ডুলিপিও পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
ছয়.
সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের লিখেছিলেন—‘প্রফেসর আবদুল জলিল ছিলেন সংবেদনশীল ব্যক্তিত্ব। সৎ ও নির্ভীক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে তিনি খুব শ্রদ্ধা করতেন। মুক্তিযুদ্ধে সপক্ষে তিনি ছিলেন এক নীরব যোদ্ধা।’
আবদুল জলিল ছিলেন রাজনীতি সচেতন। ছাত্র জীবনে সক্রিয় রাজনীতি করতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ঢাকা কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্র সংসদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদের নাট্য ও প্রমোদ সম্পাদক ছিলেন। একবার তার ছাত্রত্ব কেড়ে নেয়ার চেষ্টাও হয়েছিলো।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর শঙ্কা এবং অনিশ্চয়তার মধ্যেই শিক্ষাঙ্গনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তিনি নেপথ্য ভূমিকা রেখেছেন। সামরিক জান্তার চোখে ধুলো দিয়ে কীভাবে গণতান্ত্রিক আবহ তৈরি করে দেশের ছাত্ররাজনীতিকে বেগবান করতে হয়, সেই পথ তিনি তৈরি করেছিলেন।
সাত.
বাণিজ্য বিষয়ে একজন সুলেখক হিসেবে রয়েছে তার যথেষ্ট সুখ্যাতি। তিনি ছয়টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচিত বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও শিল্প আইন, ব্যাংক-বিধি, এ টেক্সট বুক অব ব্যাংকিং, অ্যাডভ্যান্সড অ্যাকাউন্টাসী মেড ইজি উল্লেখযোগ্য। আরো কিছু অপ্রকাশিত ছিলো।
ষাটের দশকের মধ্যভাগে পুঁথিঘর লি. থেকে তার লেখা ‘ব্যাংক-বিধি’ নামে বইটি প্রকাশিত হয়। মাতৃভাষা বাংলা শিক্ষার মাধ্যম স্বীকৃতি লাভের পর উচ্চ মাধ্যমিকে বাণিজ্য শ্রেণির জন্য এ গ্রন্থটি রচনা করেন তিনি। সেই সময়ে বাংলা ভাষায় প্রয়োজনীয় পাঠ্যপুস্তক ছিলো না। তিন দশকের বেশি ধরে এ বইটির জনপ্রিয়তা ছিলে তুঙ্গে। বলা যায়, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় এ বইটির ভূমিকা ছিলো। ‘বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও শিল্প আইন’, বাংলা একাডেমি প্রকাশ করে এ বইটি। গ্রন্থটি রেফারেন্স বই হিসেবে বহুল পঠিত এবং এর গুণগত মান সর্বজন বিদিত। তার মৃত্যুর পর কয়েকটি প্রবন্ধ নিয়ে বই ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়। এ বইতে তার লেখাগুলোর মধ্যে রিমেইন্ড চেঞ্জড। লেখার মধ্যে বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তার ছাপ আছে।
একটা কাগজকে কেটে তিন ইঞ্চি বাই তিন ইঞ্চি কাগজ করে ছোট ছোট নোট লিখতেন। এ নোটগুলোকে কেউ কেউ কৃচ্ছতা সাধন মনে করতেন। ব্যাপারটি তা ছিলো না। এগুলো ছিলো চিরকুট। শিক্ষককে লিখতেন, লিখে পাঠাতেন। তার চিরকুট ছিলো একটা বিশেষ ফরম্যাট করা—প্রথমে বকুনি, তারপর একটা যুক্তি এবং সর্বশেষ নির্দেশ। হয়তো ভিন্নতা ছিলো, কিন্তু এই চিরকুটগুলোই ছিলো তার ব্যাপক প্রাণবন্ত যোগাযোগের মূল ভিত্তি।
আট.
প্রফেসর আবদুল জলিল সংযতভাবে, ভেবেচিন্তে কথা বলতেন। অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করতেন না। তার সঙ্গে কথা বলা সব সময়ই আনন্দদায়ক ছিলো। আলোচনার মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক আবহ থাকতো। এটা একটি আকর্ষনীয় ব্যাপার। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি খুব জোরালোভাবে বলেছেন—‘শিক্ষাকে কাজে লাগাতে হবে মানবিক সমাজ-গঠনে। বন্ধুত্বের কাজে, ভাবের আদান-প্রদান হিসেবে। কোনো বিশেষ ধর্মের নিয়ন্ত্রক হওয়ার শিক্ষার কাজ নয়। শিক্ষার কোনো ধর্ম নেই, জাত নেই। অবাধ।’ তার একথার আবেদন এখনো অক্ষুন্ন। নিশ্চয় তার এ উপলব্ধি আমাদেরকে জানা এবং বোঝার শক্তি জোগাবে। নোয়াখালী অঞ্চলের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে তার নিরলস ভূমিকা রয়েছে।
নয়.
প্রফেসর আবদুল জলিল চলে গেলেন। খুব নীরবে। শব্দহীন শবযাত্রায়। মাটির কাছেই। সমকালীন সতীর্থ বা সহকর্মীদের বয়স তো খুব বেশি নয়। একদম শেষ জীবনে ভুগেছেন কর্কট রোগে। কেনো তার কর্কট রোগটি হলো? কীভাবে এমন রোগ হয়? তিনি তো অধূমপায়ী একজন মানুষ। তবে প্রচুর পরিমাণে পান-সুপারি খেতেন। জলযোগেও যাননি। আটপৌরে খুব সাধারণ কিংবা প্রচলিত সমাজে আমরা আদর্শ জীবনযাপন বলতে যা বুঝি, সেটাই তার জীবনাচরণ। সকলের প্রিয় প্রফেসর আবদুল জলিল ২০০১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হোন। তার প্রয়াণে নোয়াখালীর সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শোক জানিয়ে সেদিন পাঠদান স্থগিত রাখে।
নিজে স্বপ্ন দেখতেন আর সেই স্বপ্ন দেখাতেন তরুণদের। প্রায়ই বলতেন, ‘স্বপ্নের চাষবাস করি।’ স্বপ্নবাজ মানুষ তিনি। তার স্বপ্নের বা আদর্শের মৃত্যু নেই। তার মুক্তির বাসনার মৃত্যু নেই।
তথ্যসূত্র : অধ্যক্ষ আবদুল জলিল : স্মৃতিজল সুধায় আজন্ম, সম্পাদনা : আবুল বাশার ও হাবীব ইমন, শুদ্ধপ্রকাশ
লেখক: রাজনীতিবিদ, সংগঠক
সারাবাংলা/এসবিডিই