প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ঢাকায় হোক
২২ মার্চ ২০২২ ১৭:২৪
২০২০ সালের ২০ অক্টোবরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে অবসরজনিত কারণে আরও ১০ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে মন্ত্রণালয় আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্য পদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্য পদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এযাবৎকালের ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। আবেদন করেছেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন প্রার্থী।
দেশে বিদ্যমান বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নিসন্দেহে এটি একটি বড় সুযোগ। সম্প্রতি গুঞ্জন উঠেছে যে, খুব শীঘ্রই এই প্রকৃয়া সম্পন্ন করা হবে।প্রায় সকল পত্রিকাতেও এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে বেকারদের মনে করোনাকালীন হতাশাকে ছাপিয়ে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। আশার পাশাপাশি বেকারদের মনে নানা সঙ্কাও দেখা দিয়েছে। কেননা আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা তেমন সুখকর নয়। এদেশে নিয়োগ প্রকৃয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে যথেষ্ট খারাপ অভিজ্ঞতা রয়েছে। যেমন – দুর্নীতি, ঘুষ, স্বজনপ্রীতি, তদবির ইত্যাদি। যা লক্ষ লক্ষ বেকারের জন্য অভিশাপস্বরূপ।
শিক্ষা জীবনের প্রথম ধাপ হল প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রায় সকল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার হাতেখড়ি হয় এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। একজন শিক্ষার্থীর ভিত কেমন হবে তা নির্ভর করে এই প্রাথমিক শিক্ষার উপর। কিন্তু যদি শিক্ষা জীবনের প্রাথমিক পর্যায় নড়েবড়ে থেকে যায় তাহলে সেই জাতি শিক্ষায় বেশি দূর এগুতে পারে না।আধুনিক, টেকসই ও যুগোপযোগী শিক্ষা লাভ করতে চাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোকেও সেরূপ আধুনিক, টেকসই ও যুগোপযোগী হওয়ার বিকল্প নেই। এজন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে উচ্চ শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক দরকার। নইলে শিক্ষা ব্যবস্থায় গোড়ায় গলদ থেকে যাবে। আর এজন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ শতভাগ স্বচ্ছ হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আমাদের নিয়োগ ব্যবস্থায় যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাগুলো জেলা পর্যায়ে হত। ফলে অনেকে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন অসাধু উপায়ে নিয়োগ পেয়ে যেত। এভাবে মেধাবী শিক্ষিত বেকাররা বঞ্চিত হত। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায় জেলা পর্যায়ে নিয়োগ পরীক্ষা হলে দূর্নীতি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।অনেকে স্হানীয় প্রভাব খাটিয়ে কেন্দ্র দখল করে অসদুপায়ে পরীক্ষা দিয়ে থাকে।
এমতাবস্থায় তের লক্ষ বেকারের কথা চিন্তা করে জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা না নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় পরীক্ষা নিলে দুর্নীতি কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি