তামাককে না বলি
৫ এপ্রিল ২০২২ ১৩:৪৩
বর্তমানে আমাদের দেশে ছোট বড় সব ধরণের দোকানে অর্থাৎ মুদি দোকান থেকে শুরু করে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় হচ্ছে। তামাক এমন একটি দ্রব্যে যার ক্ষতির মাত্রা খুবই ভয়াবহ। গবেষণা অনুযায়ী, তামাকের কারণে প্রতি বছর বিশ্বে ৮০ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। যার মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই এক লাখ ২৬ হাজার।
দেশের প্রতি বছর তামাকজাতদ্রব্য সেবনের কারণে ফুসফুসে-মুখগহ্বরের ক্যানসার, হৃদরোগ ও হাঁপানিসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি রোগে ১২ লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।তামাক মূলত হৃৎপিণ্ড, লিভার ও ফুসফুসকে আক্রান্ত করে।
ধোঁয়াযুক্ত ও ধোঁয়াবিহীন এই দুই ভাবে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যাবহার হয়ে থাকে। ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে বিড়ি, সিগারেট। সিগারেটের ব্যবহার বিশ্বে সর্বোচ্চ এবং ধূমপান তামাক ব্যবহারজনিত রোগ ও মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত। তামাকের ব্যবহারের ক্ষেত্রে ধূমপানকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ধূমপানের ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) (এমফাইসিমা ও ক্রনিক ব্রংকাইটিস সহ), ও ক্যান্সার (বিশেষত ফুসফুসের ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার, ল্যারিংস ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার) এর ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ে। ধূমপানের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস। এতে হার্ট অ্যাটাক, ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ, এমফাইসিমা, ও ক্যান্সার বিশেষত ফুসফুস, ল্যারিংস, মুখগহ্বর ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বৃদ্ধি পায়।
তামাকের ব্যবহার অর্থাৎ ধূমপান জনস্বাস্থ্যের জন্যে এত ক্ষতিকর হওয়ার পরও আমরা আমাদের চারপাশে একটু খেয়াল করলেই দেখি ছোটবড় প্রায় সবার হাতেই সিগারেট যা খুবই দুঃখজনক । এবং দেখা যায় যে ধূমপান কে সবাই স্বাভাবিক ভাবেই নিচ্ছে । ধূমপান করে ধূমপায়ী যেমন নিজের ক্ষতি করছে এবং তার আশপাশে থাকা মানুষও Second Hand Smoking এর শিকার হয়ে নানা ধরণের অসুস্থতায় ভোগেন।
গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৯ অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে ৪ কোটি ৮ লাখ মানুষ এবং এক্ষেত্রে নারীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। গর্ভবতী নারীদের উপর তামাকের ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায়। আমাদের দেশে দেখা যায় গর্ভবতী নারীরা যখন চিকিৎসকের কাছে যান তখন ও রাস্তায় সিগারেটের দ্বারা পরোক্ষ ভাবে স্বীকার হচ্ছে। আবার কোনো নারী যদি ধূমপান করে তবে সেই নারীর গর্ভপাত ঘটার হার বেশি। এছাড়া গর্ভস্থ ভ্রূণেরও অনেক ক্ষতি করে যেমন অকালে শিশুর জন্ম হওয়া (প্রিম্যাচুর বার্থ), জন্মের সময় নবজাতকের ওজন আদর্শ ওজনের তুলনায় কম হওয়া (LBW) ও সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম (SIDS) এর হার ১.৪-৩% বেড়ে যায়। ধূমপান ডিম্বাশয়ের জন্য ক্ষতিকর এবং বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ। ধূমপান জরায়ু ও ভ্রূণের আরো অনেক ক্ষতি করে।ধূমপায়িনী নারীর বন্ধ্যা হওয়ার সম্ভাবনা ৬০% বেশি।
পৃথিবীতে ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনকারীর ৯০% আছেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে। এসব দেশে ধূমপানের পাশাপাশি ধোঁয়াবিহীন তামাকের উচ্চহারে ব্যবহার রয়েছে। যেমন বাংলাদেশে ২০১৯ সালের গ্যাটসএর পরিসংখ্যান অনুযায়ি প্রায় ২ কোটি ধূমপায়ি আছে, কিন্তু পানের সাথে জর্দা এবং সাদাপাতা খাওয়া এবং মাড়িতে গুল লাগানো প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের সংখ্যা হচ্ছে ২ কোটি ২০ লক্ষ।
গত বছর মার্চ গত বছর মার্চ ২৯ মে,২০২১ পর্যন্ত কোভিডের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ১২৫৪৯ জন, এবং সংক্রমিত হয়েছে ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার ৩৮৬ জন। অর্থাৎ তামাক আগে থেকেই মহামারী আকারে রয়ে গেছে। তামাকের কারণে সেসব রোগ সৃস্টি হয় সেইসব অসংক্রামক। তামাকের কারণে মানুষ অ-সংক্রামক রোগে ভুগে মারা যাচ্ছে।কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের আমাদের যতো চেষ্টা থাকছে, তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্যে তার চেয়েও বেশি চেষ্টা থাকা উচিত কেননা তামাক সেবন সংক্রামক নয়, কিন্তু তামাক সেবনের অভ্যাস সংক্রামকের মতোই কাজ করে থাকে।
ধূমপান হোক বা ধোঁয়াবিহীন তামাক হোক, তামাক ছাড়তে না পারার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে এর মধ্যে নিকোটিন আছে। তামাকের পাতায় নিকোটিন আছে সেটাই তামাকদ্রব্যের মূল উপাদান। কিন্তু শুধু তামাকের পাতা দিয়ে যদি সিগারেট, বিড়ি, জর্দা ইত্যাদী তৈরি হোত তা সবার কাছে আকর্ষণীয় হোত না। তাই তামাককোম্পানি গুলো অন্যান্য উপাদান মেশায়। জর্দার ক্ষেত্রে মেনথল, গ্লিসারিন, নানারকম মশলা ও সুগন্ধি কেমিকেল দিয়ে ভরিয়ে দেয়া হয়।
প্রতিবছর শুধু ধূমপানের কারণে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে।এটি প্রতিরোধ যোগ্য অকাল মৃত্যুর প্রধান কারণ।বলা হয়ে থাকে একটি সিগারেট গড়ে প্রায় এগারো মিনিট আয়ু কমিয়ে দেয়। তামাকের ক্ষতি যত বড় হোক না তা প্রতিরোধযোগ্য।যদি আমরা একটু সচেতন হয় তাহলে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি ।
বর্তমানে দেশে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে যে ভয়াবহ স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে তার কারণে প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশীয় স্পিকারদের সম্মেলনে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দেন।দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্যে সরকার ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) ও আইন পাশ ও এ বিষয়ে বিধিমালা জারি করেছেন।
বাংলাদেশে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৪৮ শতাংশ, যেখানে অতি উচ্চবিত্ত জনগোষ্ঠির মধ্যে এই হার মাত্র ২৪ শতাংশ।জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বাড়ানোর হয়েছে কিন্তু কর বাড়ানোর পর ও তামাক দ্রব্যে ব্যাবহার করা হয় এই ব্যবহার কমানোর জন্য দরকার সচেতনতা ।
আমাদের দেশে অনেক পরিবারের মধ্যে লক্ষ্য করলেই দেখা যায় অনেক সদস্য বাচ্চাদের সামনে ধূমপান করে । আর বাচ্চারা অনুকরণপ্রিয় ফলে অনেক বাচ্চাদের না বুঝে সেই ফেলে দেওয়া সিগারেটের অংশ মুখে দিতে দেখা যায় এবং পর্যায়ক্রমে সেই শিশু আসক্ত হয়ে যায় । তাই পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে হবে ।
জর্দা, সাদাপাতা এবং গুলের ব্যবহারে নানা ধরণের স্বাস্থ্য ক্ষতি আছে, বিশেষ মুখ-গহবরে ঘা, ক্যান্সার, মাড়ীতে ঘা, কন্ঠনালী সহ পাকস্থলীর নানা সমস্যা দেখা যায় কিন্তু আমাদের দেশে বিশেষকরে গ্রামাঞ্চলে কোন আত্মতীয় কারো বাড়িতে বেড়াতে আসলে এখনো পান জর্দা নিয়ে আসার রীতি এখনো প্রচলিত। বিয়ে বা দাওয়াতে খাওয়ার পর পানের সাথে জর্দা পরিবেশন করা হয় এবং কোনো কারণে না দেওয়া হলে সেই পরিবার কে সামাজিকভাবে হেয় হতে হয় ।পানের সাথে জর্দা খাওয়া কেউ খারাপ চোখে দেখে না এবং এটা সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য।জর্দা ও সাদাপাতা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সিগারেট-বিড়ি নিয়ন্ত্রণের চেয়ে কঠিন কারণ যেটাকে মানুষ খারাপভাবে দেখছে না সেই অভ্যাস ত্যাগ করার তাগিদ তার মধ্যে কাজ করে না।
তামাকজাত দ্রব্যে সিগারেট ভয়াল রূপ ধারণ করেছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে । তরুণ বয়সে অধিকাংশই বন্ধু বান্ধবের পাল্লায় পড়েই অভ্যস্থ হয়ে পড়ে। তরুণরা অনেক সময় কৌতূহলের বসে প্রথমে ধূমপান করা শুরু করে । এছাড়া বিভিন্ন বিজ্ঞাপন বা সিনেমা দেখেও অনেক যুবক অনুপ্রাণিত হয়ে ধূমপান করা শুরু করে ধূমপায়ীদের কিছু অনর্থক ধারণা যেমন :ধূমপানকারীদের মতে ধূমপানের ফলে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায় ।তাই অনেক সময় পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বা অন্য কোনো মানসিক চাপ থেকে মুক্তি থাকতে ধূমপান করতে দেখা যায় । তবে গবেষণায় দেখা গেছে অধূমপায়ীর তুলনায় একজন ধূমপায়ী বেশি মানসিক চাপে ভুগে থাকেন। তাদের কে বুঝাতে হবে ধূমপানের ফলে মানসিক চাপ আস্তে আস্তে বাড়ে এবং ধূমপান পরিত্যাগ করার পর তা ক্রমশ হ্রাস পায়।মানসিক চাপ কমানোর জন্য – গান শোনা, ব্যায়াম করা, খেলাধুলা করা বা বই পড়ার অভ্যাস করা যেতে পারে যা মানসিক অস্থিরতা কমাবে এবং ধুমপানের আসক্তি থেকে মুক্তি দিবে।
তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার দিনকে দিন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকির মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে। তামাকজাত দ্রব্যের জন্যে যে সব রোগ হয় সেই সব রোগ প্রাণঘাতী, চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি। ঐসব রোগের চিকিৎসা করার সামর্থ্য আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের নেই। তাদেরকে আর্থিক ক্ষতির হিসাবটি যদি বুঝাতে হবে যেন তারা তাদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে তামাকজাত দ্রব্যে ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হয়। কেননা তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।
অল্পবয়সী তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই প্রবণতা অনেক বেশি। এর জন্য অনেকে কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপনকে দায়ী করেন কারণ এই বয়সের ছেলেমেয়েরা এরকম বিজ্ঞাপন দ্বারা প্রভাবিত হয় কেননা ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তাদের সুস্পষ্ট ধারণা থাকে না। কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন বাবদ ১২ বিলিওন ডলার খরচ করে থাকে। জনগণকে ধূমপানের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সরকার প্রকাশ্য ধূমপানের উপর অনেক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে কিন্তু তামাক কোম্পানির আগ্রাসী প্রভাবে এখনো তেমন ফল পাওয়া যায়নি।
আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক দরিদ্র আর এর সুযোগ নিচ্ছে তামাক কোম্পানি। তামাক কোম্পানি গুলো অর্থের লোভ দেখিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে জমি নিয়ে তামাক চাষ করে। তামাকচাষী দের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে হবে এবং এর বিকল্প হিসেবে রবি শস্য উৎপাদনে চাষী লাভবান হবে এটা তাদের বুঝাতে হবে ।
বাংলাদেশে সবচেয়ে কম মূল্যে তামাকজাত দ্রব্য কিনতে পাওয়া যায়। ফলে দরিদ্যদের মধ্যে তামাকের ব্যবহার বেশি। এজন্য বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তামাকের প্রভাব অত্যন্ত নেতিবাচক। সবরকম তামাকজাত পণ্য থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব আয় করে তার দ্বিগুণের বেশি অর্থ তামাকজাত রোগের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করতে হয়।তামাকজাত পণ্যের ক্ষতির দিক সবচেয়ে বেশি তাই তামাক কোম্পানির পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধ করার জন্যে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং এর জন্যে সঠিক পরিকল্পনা দরকার । কেননা এর ওপর অনেক মানুষের জীবিকা নির্ভর করছে । তাই সর্বপ্রথম তাদের জীবিকা নির্বাহের বিকল্প ব্যবস্থা আগে চিন্তা করতে হবে।
তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতির দিক তুলে ধরতে আমাদের দেশেও “বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস” উদযাপিত করা হয় কিন্তু এই কার্যক্রম ১টি দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টিভিতে বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা যেতে পারে, সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। এবং সরকাররের পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতন ও প্রতিবাদ করতে হবে তবেই তামাকের হাত থেকে সবাই রক্ষা পাবে।
তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে ও বিপণনের জন্য আমাদের দেশে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই এবং ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণের ব্যবস্থা নেই। যে কারণে বিভিন্ন স্থানে অনিয়ন্ত্রিতভাবে তামাকজাত পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এর বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা প্রণয়ন করে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
তামাকসেবনকারী নিজে তামাকের ক্ষতির সব তথ্য জানেন না তাই সে খেতে শুরু করে। তামাক উৎপাদন থেকে শুরু করে সেবন পর্যন্ত সবাই আর্থিক ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকে।বিশেষজ্ঞদের মতে তামাক মানুষের মস্তিষ্কের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। মানুষের স্মৃতিশক্তি ও বোধশক্তি দুটিই কমে যেতে পারে। কিশোর বয়সীদের স্মৃতিশক্তি ও বোধশক্তি কমিয়ে দেয়। এমনকি মস্তিষ্ক ছোট হয়েও যেতে পারে। তামাকের কুপ্রভাবে জাতিকে রক্ষা করতে হলে ব্যাপক সচেতনতা এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি কার্যকর করা দরকার। তামাকের গ্রাস থেকে মুক্ত হতে সরাকরের পাশাপাশি সকল নাগরিকের সচেতন হতে হবে। ব্যক্তি পর্যায়ে তামাক ছাড়ার চেষ্টা করতে হবে। তামাকের কুপ্রভাবে দিন দিন কর্মহীন, মেধাহীন জাতি তৈরি হতে পারে তাই তামাকের হাত জাতিকে, যুবসমাজকে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে তামাককে না করতে হবে ।
লেখক: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি