মানুষ বইমুখী হোক
২৫ এপ্রিল ২০২২ ১৭:০৮
দিনটা ছিল ২০২২ সালের ১৪ মার্চ। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ থেকে হাঁটতে হাঁটতে বই মেলার দিকে যাচ্ছি।
বই মেলায় যেতে যেতে পথে একটা জিনিস চোখে পড়ল। দেখলাম সেখানে একটা উন্মুক্ত লাইব্রেরি। স্বভাবতই আমার এগুলো ভালো লাগে। বই পড়তেও বেশ ভালো লাগে। বিশেষ করে বইগুলো যদি হয় নানান ইতিহাস আর বিজ্ঞান ভিত্তিক বই। তাই চোখে পড়তেই লাইব্রেরির দিকে এগিয়ে গেলাম। আমি সেখানে বিভিন্ন বিষয়ের বই দেখলাম। প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো বসে সেখানে কয়েকটা বই পড়লাম, দেখলাম। আমার মতো অনেকেই লাইব্রেরিটি দেখে এগিয়ে এলেন। দেখলাম কয়েক জন বই পড়লেন। আমার মনে হয় মানুষকে বইমুখী করতে এই ধরনের উদ্যোগগুলো বেশ ভালো অবদান রাখবে।
আসলে পৃথিবীর ইতিহাস যাদের নাম লিখে রেখেছে তারা বইয়ের মানুষ। হয় তারা বই লিখেছেন, নয়তো বই পড়েছেন। পড়েছেন যারা তারা তো পড়েছেনই। কিন্তু লিখেছেন যারা তারা কি বই পড়েননি? অবশ্যই বই পড়েই তারা লিখেছেন। আর তারা লিখেছেন বলেই পড়েছেন পাঠক। মোটা দাগে বলতে হয়, লেখার জন্য পড়তে হয়। পড়ার জন্য লিখতে হয়। না লিখলে বই জন্মাবে কীভাবে? আর বই না জন্মালে পড়বে কীভাবে মানুষ? লিও টলস্টয় বলেছিলেন জীবনে মাত্র তিনটি জিনিসের প্রয়োজন। বই, বই আর বই।
মন ভালো কিংবা মন খারাপ খুব সহজেই বইয়ের আশ্রয় নেয়া যায়। বই হচ্ছে জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধু। বই এমনই আত্নীয়, যার সাথে কখনো ঝগড়া হয় না। এমন এক বন্ধু যে কখনো ছেড়ে যায় না। খুব হতাশার মধ্যেও আগলে রাখে বই। খুব সহজেই নির্ভর করা চলে বইয়ের উপর। মানুষ কথা রাখে না। অথচ বই কখনো কথার বরখেলাপ করে না। মানুষ বদলে যায় সহজেই। কিন্তু বই কখনোই বদলায় না। বরং বই হলো সুন্দরের পক্ষে জীবন বদলে যাওয়ার মূল আয়োজন।
আমাদের অভিভাবকদের কেউ কেউ শিশুদের হাতে খেলনা বন্দুকসহ নানান ধরনের খেলনা তুলে দেন। কিন্তু কয়জন বই তুলে দেন আমি জানি না।
আপনি আপনার সন্তানকে খেলানার সাথে সাথে একটা বই তুলে দেন। সে বইটি ছিঁড়ে ফেললেও হয়ত বই রাখতে রাখতে তার বইয়ের প্রতি একটা টান সৃষ্টি হবে। পাতা উল্টাতে উল্টাতে পড়তে শিখবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ
সারাবাংলা/এজেডএস