স্বপ্নের আলোকবর্তিকা নিয়ে এগিয়ে চলেছে বঙ্গবন্ধুর হাসু
১৭ মে ২০২২ ১৬:৪৮
কালবৈশাখের ঝড় ও বৃষ্টিতে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সাঁজে ছিল ১৭ মে ১৯৮১। জৈষ্ঠ্যের তাণ্ডবে গোটা ঢাকা শহর যখন নিমজ্জিত তখন গ্রিক পুরাণের ফিনিক্স পাখির মতো করে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন। বঙ্গবন্ধু তনয়ার আগমন ঘিরে গণতন্ত্রকামী মানুষেরা যেন আবারও নিভে যাওয়া আশার আলোর খোঁজ পায়। শেখ হাসিনাকে একনজর দেখবে বলে ঝড় বৃষ্টির আধার রাত্রিকে উপেক্ষা করে মুক্তিকামী জনতার ঢল জনসমুদ্র তৈরি করে। সেই সময়ের মেঘের গর্জন বাতাসের প্রলয়ঙ্করী বেগ বৈরতাপূর্ণ আবহাওয়া যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার প্রতিশোধ নিতে তাণ্ডব শুরু করেছিল। তখন চারটার কিছু পর, শেখ হাসিনা কুর্মিটোলা এয়ারপোর্টে এসে নামেন। বাংলার রক্তেভেজা মাটি বঙ্গবন্ধু হত্যা বদলা নেওয়ার জন্য যেন প্রস্তুত। তৎকালীন কুর্মিটোলা এয়ারপোর্ট থেকে জনসমুদ্র যেয়ে ঠেকে শেরে বাংলা নগর পর্যন্ত।
তখন চোখে-মুখে ছিল উচ্ছ্বলতার জল, হৃদয়ে লেগেছিল দোলা। পিতা মুজিবের মতো করেই জনসমুদ্রের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ”সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই”।
তখন জনসমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের গর্জন হয়ে স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছিল কু্র্মিটোলা থেকে গোটা বাংলাদেশ। জনগণের মুখে মনে একই ধ্বনি-”পিতৃ হত্যার বদলা নিতে/ লক্ষ ভাই বেঁচে আছে, শেখ হাসিনার ভয় নাই/রাজপথ ছাড়ি নাই…”
এ যেন উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই, নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই। সেদিন থেকে উদয়ের পথের যাত্রা শুরু হয়েছিল, আজ তা গোটা বাংলাদেশ ছাপিয়ে বিশ্বপরিমণ্ডলে উদাহরণ হয়ে সমুন্নত।
বঙ্গবন্ধুর প্রিয় কন্যা সেই হাসু আজ বাংলাদেশ সরকারের চার বারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।দেশকে নিয়ে গেছেন উন্নয়নের মহাসড়কে, মধ্যম আয়ের দেশে। জনগণের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়িত হচ্ছে। গ্রাম হচ্ছে শহর, একটি বাড়ি-একটি খামার একটি জীবিকার নিউক্লিয়াস।
অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য টিসিবির খাদ্য সহায়তা যেমন রয়েছে, অন্যদিকে গৃহহীনদের পাকাঘর উপহার দেওয়ার মাধ্যমে সুনিশ্চিত হচ্ছে নিরাপদ বাসস্থান। কৃষিখাতে ভর্তুকির মাধ্যমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হচ্ছে ন্যায্য দামে। সরকারি অর্থায়নে প্রযুক্তি নির্ভর উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষ বিবেচনায় দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা সহায়তা। বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা ইত্যাদি মাধ্যমে জনগণের আর্থসামাজিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা ইন্টেনশনাল প্রসার ঘটানো হচ্ছে। বছরের প্রথম দিনে মাধ্যমিক পর্যায়ে বই উপহার প্রদান কর্মসূচির পাশাপাশি নারী শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব আরোপিত হয়েছে। প্রযুক্তি নির্ভর অনলাইন সেবার মাধ্যমে দক্ষ স্বনির্ভর জাতি গড়ার পাশাপাশি গ্লোবাল ভিলেজ পার্টিসিপেশন সুনিশ্চিত হচ্ছে। জেলায় জেলায় শেখ কামাল আইটি পার্ক নির্মাণের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অংশগ্রহণের দাঁড়প্রান্তে।
সর্বোপরি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন তথা কাঁচা রাস্তা থেকে পাকা, ওয়ান লেন রোড থেকে ফোর লেন রোড হচ্ছে। রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে আন্তঃনগর এক্সপ্রেসে মান ও পরিধি উভয়ই ঊর্ধগতিতে। মেগাপ্রজেক্ট হিসেবে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল ইত্যাদি আজ নির্মাণাধীন। পরিশেষে জীবনযাত্রার মানের উন্নতি ঘটেছে, উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ যখন টপ-স্পিডেট তখন ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, মাথাপিছু আয় ২৫৯১ মার্কিন ডলার ও প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.৯৪ শতাংশে।
আমাদের এত সব অর্জন যা সারা বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছে তার অবিকল্প ও নিরলস নেতৃত্বে রয়েছেন যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা গণতন্ত্রের মানসকন্যা বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। আজকের এমন একদিনে তিনি এসেছিলেন আলোকবর্তিকা নিয়ে, সেই আলো জ্বালিয়ে তিনি এগিয়ে চলুক শত সহস্র বছর।
লেখক: রাজনীতিবিদ
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি
মুক্তমত শেখ সাদাফ ইসলাম স্বপ্নের আলোকবর্তিকা নিয়ে এগিয়ে চলেছে বঙ্গবন্ধুর হাসু