জমিজমা সংক্রান্ত ভুয়া মামলা এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ
৩ জুন ২০২২ ১৫:০৯
সভ্যতার অগ্রগতিতে দিন যতো এগোচ্ছে ততো জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে যে বাড়তি জনসংখ্যা হচ্ছে তার জন্য দরকার হচ্ছে খাদ্য এবং বাসস্থান। কিন্তু জনসংখ্যা বাড়লেও নতুন করে আর বসতভিটা বাড়ছে না কিন্তু ওই বাড়তি জনসংখ্যার বাসস্থানের দরকার ঠিকই পড়ছে। এই চাহিদা থেকে কমে আসছে কৃষি জমি এবং অন্যের সাথে জমিজমা নিয়ে ঝগড়াবিবাদ। এরই সূত্র ধরে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে মামলা মোকদ্দমা বাড়ছে তো বাড়ছেই।
গায়ের জোর খাটিয়ে অন্যের বসতভিটা বা কৃষি জমি হস্তক্ষেপ করছে একদল মানুষ। অন্যের পাকা ধান কেটে ঘরে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যপক্ষ বাধাগ্রস্ত করতে গেলে সৃষ্টি হচ্ছে নৈরাজ্য এবং কখনো বা প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। শত্রুতা বসত ভুয়া মামলা ঠুকছে আদালতে। আদালতে যেসব মামলা হয় তার বেশিরভাগই জমিজমা সংক্রান্ত ভুয়া মামলা, স্থবিরতার কারণে এই মামলাগুলো খারিজ হতেও লাগে দীর্ঘ সময়। নজির আছে এমন একটি মামলা যেটা নিষ্পত্তি হতে ৩০ বছর সময় লেগেছে। এমন বহু উদাহরণ আছে। এই ভুয়া মামলার পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। মামলা চালাতে গিয়ে ভিটেমাটি বিক্রি করেও নিঃস্ব হচ্ছে।
যে বিষয় নিয়ে মামলা হচ্ছে তা খুব বেশি জরুরিও নয়। এসবের সুযোগ নিচ্ছে একদল মানুষ। এলাকার মোড়ল স্বভাবের মানুষেরা জিম্মি করছে সাধারণ মানুষদের। পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেদারসে গ্রহণ করছে টাকা। এইসব সমস্যা মধ্যস্ততা করতে গিয়ে আরো উসকানি দিচ্ছে ফলে মনোমালিন্য বাড়ছে একে অপরের মধ্যে।
ভুয়া মামলার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাদি বিবাদি দু পক্ষই। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের নাম এসব মামলায় জড়ানো হয়। এসব মামলা করা হলে সরকারি চাকরির ভবিষ্যৎ বলে কিছু থাকে না। ক্লাস থাকলেও ক্লাসে যেতে পারেনা, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিক্ষাজীবন। কখনো বা জেলও খাটতে হয়। এখানে শুধু মানবিক দিক যেমন ক্ষুণ্ন হচ্ছে তেমনি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
কোনো শিক্ষার্থীর জীবন যাতে এমন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য সকলের উচিত এ ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া। যাকে আসামী করা হচ্ছে, তিনি যদি শিক্ষার্থী হন, তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ খবর নিয়ে তিনি ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন কিনা এসব দেখে মামলা নেওয়া উচিত। এতে হয়তো অনেকাংশ একজন ভবিষ্যৎ নাগরিকের জীবন বেঁচে যাবে। আমাদের সকলের উচিত সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে এগিয়ে আসা। জোর যার মুল্লুক তার এই নিয়ম থেকে সরে আসতে হবে। ভুয়া মামলায় যাতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে প্রশাসনের।
লেখক: শিক্ষার্থী
সারাবাংলা/এজেডএস
জমিজমা সংক্রান্ত ভুয়া মামলা এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ মাহমুদুল হাসান মিল্টন