Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কৃষিতে সাফল্যের নায়ক বঙ্গবন্ধু

আবুল বাশার মিরাজ
৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:৫৮

বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ধান, গম ও ভুট্টা চাষে বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। বর্তমানে সবজি উৎপাদনে তৃতীয় আর চাল ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনেও শীর্ষে বাংলাদেশ।

কিন্তু কৃষির এ সাফল্য এমনি এমনি আসেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কারণেই কৃষিতে অবারিত সাফল্য এসেছে। কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়ার কারণেই মেধাবীরা কৃষির সাথে যুক্ত হতে থাকেন। তাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের কারণেই দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শুভাগমন ঘটেছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সবুজ চত্বরে। ব্রহ্মপুত্রের তীরে সবুজ শ্যামল অঙ্গন ঐ দিন মহান নেতার পদস্পর্শে মুখরিত হয়েছিল সেদিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক মিলন, নৈকট্য, কৃষিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের সাথে তার মতবিনিময়, দিক নির্দেশনামূলক ভাষণ এবং কর্মব্যস্ততা এ দিনটিকে স্মরণীয় করে রেখেছে।

দেশের কৃষি, কৃষক ও কৃষিবিদের বঙ্গবন্ধুর নিবিড় সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। নির্বাচনী ডামাডোলের শত ব্যস্ততার মধ্যেও তাই মমতার টানে তাইতো সেদিন তিনি ছুটে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এটিই ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রথম ও শেষ সফর। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই সফর আজও কৃষিবিদদের মায়ারবন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। কৃষিবিদ সমাজ ঐতিহাসিক এ দিনটির অপরিসীম গুরুত্ব ও মর্যাদাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর ১৩ ই ফেব্রুয়ারি ‘কৃষিবিদ দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধুর আগমন উপলক্ষে সেদিন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে অপরূপ সাজে সজ্জিত এবং অধুনালুপ্ত সমাবর্তন মন্ডপকে বিশেষভাবে তৈরী করা হয়েছিল। সার্কিট হাউজ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী ফজলুর রহিম, বাকসুর জি এস আব্দুর রাজ্জাক (র্বতমান কৃষিমন্ত্রী), ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ রহমতুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. শাহান-উদ্দীন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ারুল হক বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানিয়ে সংবর্ধনাস্থলে নিয়ে আসেন। বাকসুর তদানীস্তন ভিপি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও বাকৃবি’র সাবেক রেজিস্ট্রার নজিবুর রহমান মঞ্চ থেকে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন। এ লালগালিচা সর্ম্বধনা অনুষ্ঠানটি ছিল ব্যতিক্রমধর্মী। ‘জয় বাংলা বাহিনীর’ এক সুসজ্জিত দল বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় সেদিন।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের পূর্বে বাকসুর ভিপি নজিবুর রহমান (বাকৃবি’র সাবেক রেজিস্ট্রার) বঙ্গবন্ধুকে ‘বাংলাদেশের কৃষি’ এ আদর্শে প্রতিফলিত একটি কাঠের কারুকার্য এবং ‘বাংলার উৎফুল্ল কৃষক’ নামে একটি আলোকচিত্র উপহার প্রদান করেন। মানপত্র পাঠ করেন বাকসুর জি এস আব্দুর রাজ্জাক। বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন বিভাগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুকে ছাত্রদের বোনা একটি কম্বল উপহার দেওয়া হয়। ‘বাকসু’ কর্তৃক আলোকচিত্র শিল্পী নাইব উদ্দিন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ফটো অ্যালবাম প্রদান করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর আগমন উপলক্ষে প্রকাশিত কৃষি ‘বিশ্ববিদ্যালয় বার্তা’র বিশেষ সংখ্যার একটি কপি বঙ্গবন্ধুকে উপহার প্রদান করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অফিসে শহীদ স্মৃতি পাঠাগারের দ্বারোন্মোচন করেন। পাঠাগারের বই কেনার জন্য পাঁচ হাজার টাকা, দুটো ট্রাক এবং ছাত্রদের পূনর্বাসনের জন্য নগদ এক লাখ টাকা প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু। একইসঙ্গে তিনি ছাত্রদের যাতায়াতের সুবিধার্থে দুটি নতুন মডেলের বাস আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি পূর্ণাঙ্গ রেল ষ্টেশন প্রতিষ্ঠার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর আগমনের মধ্য দিয়েই এ দেশে কৃষি শিক্ষা ও কৃষিবিদগণ যথাযথ গুরুত্ব, সামাজিক সম্মান ও প্রথম শ্রেণীর পদ মর্যাদা, কৃষির নতুন অভিযাত্রা সূচিত হয়েছিল।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী ও সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, ময়মনসিংহ

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

আবুল বাশার মিরাজ কৃষিতে সাফল্যের নায়ক বঙ্গবন্ধু মুক্তমত

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কোস্ট গার্ডের নতুন ডিজি জিয়াউল হক
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩২

সম্পর্কিত খবর