আবারও রোহিঙ্গা আসলে উখিয়াবাসীর আত্মহত্যা ছাড়া পথ নেই
১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৪৩
বেশ কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষ চলছে। প্রায়ই গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে তুমব্রু সীমান্তে। যার প্রভাব পড়ছে প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর। বিশেষ করে বান্দরবানের ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। অব্যাহতভাবে চলা এ সংঘর্ষের কারণে আবারও বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন রোহিঙ্গারা। গত দুই দিনে ১০-১৫ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। এ নিয়ে সতর্ক রয়েছে বাংলাদেশও। দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে কথা বলেছেন।
গত এক মাস ধরে প্রতিদিন সীমান্তের ওপার থেকে গোলাগুলির শব্দ আসছে। সীমান্তে গা ঘেঁষে টহল দেয় সেদেশের সেনাবাহিনী। গত কয়েকদিন যুদ্ধবিমান আর হেলিকপ্টার থেকে গোলা ছুঁড়তে দেখা গেছে। কিন্তু মিয়ানমার অংশে গুলির শব্দ আর থেমে থেমে মর্টারশেলের বিকট শব্দে প্রকম্পিত হয়ে উঠছে তুমব্রু সীমান্ত। কখনো তাদের মর্টারশেল উড়ে আসছে সীমান্তের এ পাড়েও।
ভরতসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, জানা গেছে আবারও মিয়ানমারে চাপে পড়েছে রোহিঙ্গারা। ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। ফলে অনেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার কথা ভাবছেন। ফলে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে আরও হাজারও রোহিঙ্গা। আর রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবিও। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, তুমব্রু, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছেন তারা। গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যে সংঘর্ষ চলছে, সেটার কারণ অথবা অজুহাতে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছেন। রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ ফের অভিযান শুরু করলেও বর্তমান পরিস্থিতি আগের তুলনায় কিছুটা শান্ত। কিন্তু মালয়েশিয়া থেকে পাঠানো ত্রাণের কথা জেনে তারা বাংলাদেশে চলে আসছেন। কারণ রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের মাত্রা একটু কমলেও রোহিঙ্গাদের কোনো কাজে বের হতে দিচ্ছে না মিয়ানমারের পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অনাহারে-অর্ধাহারে থাকা রোহিঙ্গারা তাই বাংলাদেশে ছুটছেন। মিয়ানমারের বলিবাজার ও সাপবাজার থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ পালিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন বলে গতকাল খবর প্রকাশিত হয়েছে থাইল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্টে।
এবার আসি বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে। মিয়ানমার থেকে নতুন করে রোহিঙ্গারা আসলে উখিয়াবাসীর আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো পথ থাকবে না। ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গারা ইয়াবা ব্যবসা, অস্ত্রবাজি ও সন্ত্রাস, ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে স্থানীয়দের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় এলাকাবাসীদের আতংকিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সীমান্ত আইন-লঙ্ঘন নিয়ে ইতোমধ্যে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে মিয়ানমারের উত্তপ্ত পরিস্থিতি গভীরভাবে অবলোকন করা হচ্ছে। নতুন করে আর একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এজন্য সতর্ক রয়েছে বিজিবি। তুমব্রু সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা সব সময় সতর্ক অবস্থানে আছে। নতুন করে কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তুমব্রু এলাকায় নতুন করে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।
লেখক : কবি, সাংবাদিক
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি
আবারও রোহিঙ্গা আসলে উখিয়াবাসীর আত্মহত্যা ছাড়া পথ নেই মুক্তমত রনি অধিকারী