কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে কি সম্প্রীতি রক্ষা করা যায়?
২ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৪৩
একটা সময় ছিলো যখন মানুষে মানুষে ধর্মীয় ভেদাভেদ ছিলো না। হ্যাঁ কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ তো সবসময়ই থাকে। কিন্তু তখন সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন ছিলো অনেক দৃঢ়। ধর্মীয় মেরুকরণ থাকলেও মানুষের মনে তা খুব একটা দাগ কাটতো না। আজ থেকে বিশ বছর আগেও মোটামুটি একটা ভালো পরিবেশ ছিলো। আমার নিজের গ্রামেই সকল ধর্মের মানুষ নির্বিশেষে ফুটবল খেলা, হাডুডু খেলা, যাত্রাপালা, গাজিরগীত নিয়ে মেতে থাকতো। অল্প কিছু মানুষ বাদে কেউ ধর্মীয় ভেদাভেদ করতো না। দীর্ঘদিন আমার গ্রামের দুর্গাপূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ইসলাম ধর্মের একজন মানুষ। কখনো সম্প্রীতির কমতি দেখা যায়নি। সারাদেশের অবস্থাও এমনই ছিলো। শাহ আব্দুল করিমের সেই গান তো সবারই জানা ” গ্রামের নওজোয়ান, হিন্দু মুসলমান, মিলিয়া বাওলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।”
কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেলো। এখন একটা ছোট্ট শিশুও সাম্প্রদায়িকতা শব্দটির সাথে পরিচিত। সে যে ধর্মেরই হোকনা কেনো অন্য ধর্মের প্রতি কেমন যেনো একটা বীতশ্রদ্ধ মনোভাব। যে বাঙালিরা হাজার বছর ধরে মানুষ হিসেবে একসাথে বসবাস করে এসেছে, কয়েকবছরের ব্যবধানে তাদের কি হয়ে গেলো। ধর্মীয় সম্প্রীতি কমার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড গুলোও আশঙ্কাজনক ভাবে কমে গেছে।
এবার মূল আলোচনায় আসি। শুক্রবার একটা জাতীয় পত্রিকার প্রথম পেজে একটা শিরোনাম দেখে হঠাৎ চোখ আটকে গেলো। “সম্প্রীতি রক্ষায় কঠোর হচ্ছে সরকার”। সম্প্রীতি রক্ষা করা অবশ্যই সরকারের দায়িত্ব, শুধু সরকারের না আমাদের সকল নাগরিকের দায়িত্ব এটা। কিন্তু জোর করে কি সম্প্রীতি রক্ষা করা যায়?
এই শিরোনাম দেখে প্রয়াত সাংসদ মহিউদ্দিন খান বাদলের মহান জাতীয় সংসদে বলা সেই কথা গুলো মনে পড়ে গেলো। তিনি বলেছিলেন “পুলিশ পাহারায় দূর্গা পূজা করলে ওই পূজা হয় না, পুলিশ পাহারায় বৌদ্ধদের কঠিন চিবর দান করলে তা হয় না।”
আগে তো পুলিশ পাহারায় পূজা করা লাগতো না। স্বাভাবিক ভাবেই পূজা হতো। সকল ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করতো তাতে। কিন্তু এখন কেনো দরকার হচ্ছে?
দেশের সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে সরকার পূজার সময় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাকে সাদুবাদ জানাই। কিন্তু এভাবে কতদিন? মানুষের মনের সংকীর্ণতা দূর করার জন্য, সাম্প্রদায়িকতা দূর করার জন্য কি কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে রাস্ট্রীয় ভাবে? উত্তর যদি যদি হ্যাঁ হয় তো খুব ভালো। আর যদি না হয় তাহলে কেনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি এবং কবে পদক্ষেপ নেয়া হবে?
বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায়। এমতবস্থায় মৌলবাদের উত্থান কীভাবে ঘটছে আর এটা কীভাবে নির্মূল করা যায় এটা নিয়ে সরকারের কাজ করা উচিত।
তা নাহলে হাজার পুলিশি পাহারা রেখেও মানুষের মনের সেই শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। আর এই সম্প্রীতি না থাকারও কারণ রয়েছে যথেষ্ট। বারবার মন্দির, মূর্তি ভাঙার পরও অধিকাংশ ঘটনার কোনো বিচার হচ্ছে না। এগুলো মানুষের মনে খুব প্রভাব বিস্তার করছে। যখন দেখা যাচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার প্রতিবাদ করার জন্য ঝুমন দাশ দীর্ঘদিন জেল খাটছে তখন মানুষের মনে আপনা আপনিই মেরুকরণের সৃষ্টি হয়ে যায়। পরবর্তীতে মন্দিরের গেটে মসজিদের দানবাক্স বসানো নিয়ে যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ জানালো তখন আবার তার বিরুদ্ধে মামলা হলো এবং জেলে নেওয়া হলো। এটা দেখে সংখ্যালঘুদের মনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ প্রতিবাদ করেও যদি শাস্তি পেতে হয় তাহলে কীভাবে শান্তিতে বসবাস করবে তারা।
গতবছর দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লায় একটি মন্দিরে মূর্তির পায়ের নিচে পবিত্র কুরআন শরীফ রাখাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে অনেক মন্দির এবং প্রতিমা ভাংচুর হয়েছে। রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় একটা পাগল এই কাজ করেছে এবং সে ইসলাম ধর্মাবলম্বী। এই ঘটনাও মানুষের মনে তীব্র প্রভাব ফেলেছে। মূর্তির পায়ের নিচে কুরআন শরীফ রাখার জন্য ইসলাম ধর্মাবলম্বী দের মনে যেমন প্রভাব পড়েছে। আবার এতো হামলা,ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের পর যখন জানা গেলো এটা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা করেনি তখন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মনেও প্রভাব পড়েছে। ফলে দুই ধর্মের প্রতি দুই ধর্মের মানুষের যে সম্প্রীতি ছিলো তাতে ভাটা পড়েছে। সংখ্যালঘু শিক্ষকদের টার্গেট করা হচ্ছে। স্কুল শিক্ষক হৃদয় মন্ডল তার প্রমাণ। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাথায় কীভাবে শিক্ষকের কথা রেকর্ড করার বিষয় আসবে? কাদের আস্কারায় এগুলো হচ্ছে। শুধু মাত্র ফেসবুক পোস্ট কে কেন্দ্র করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে, লুটপাট করা হচ্ছে। এমন হাজারো ঘটনা রয়েছে। এই ঘটনা গুলো কেনো ঘটছে তা খুজে বের করে সমাধান করা দরকার।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ বছরে এই দেশে ৩ হাজার ৬ শ’ ৮৯ বার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা হয়েছে। এটা প্রকাশিত তথ্যের কথা, প্রকৃত সংখ্যা আসলে আরও অনেক বেশি।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাতের মতে, ধর্মীয় লেবাসের আওতায় থেকে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করে আছে রাজনৈতিক নেতারা। কাজেই রাজনীতি এই সংঘাতের মূল কারণ। হিন্দুসমর্থিত দলকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যে এই সংঘাত ঘটানোর কারণ এই তত্ত্ব বোধ হয় উপরিভাসা অতি সরলীকরণ।
বিভিন্ন সময়ের কিছু পদক্ষেপও এই সব ঘটনা এবং মানুষের মধ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদ সৃষ্টির জন্য দায়ী।
হেফাজতের দাবি মেনে পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তন এর মধ্যে অন্যতম। তাদের দাবি মেনে মূলধারার শিক্ষায় সাম্প্রদায়িকতার প্রভাব আনা হয়েছে।
হেফাজতের দাবির বিষয়ে সেসময়ে নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছিলো , হেফাজত শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছবি আঁকার পাঠ তুলে দিতে চায়। কারণ, ধর্মে মানুষের ছবি আঁকা মানা। শরীরচর্চা-বিষয়ক কোনো পাঠে যদি মেয়েদের ছবি থাকে, তা-ও বদলাতে হবে।
হেফাজত পাঠ্যপুস্তক থেকে যেসব কবিতা বা গদ্য বাদ দিতে বলেছে, তা মেনে নেওয়া মানে ধর্মান্ধতা, হিন্দুবিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িকতাকে মেনে নেওয়া। কোনো কবিতা বা লেখা কেন বাদ দেওয়া হবে, তা-ও তারা ব্যাখ্যা করেছে। দু-একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হুমায়ুন আজাদের ‘বই’ কবিতাটি বাদ দিতে বলা হয়েছে। কারণ, ওই কবিতায় নাকি নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ ধর্মগ্রন্থকে কটাক্ষ করেছেন। অথচ এটি খুবই উৎকৃষ্ট কবিতা। তাই এমন অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। ওয়াজেদ আলীর ‘রাচী ভ্রমণ’ বাদ দিতে হবে। কারণ, রাচী ভারতে অবস্থিত ও হিন্দুদের তীর্থস্থান। সত্যেন সেনের ‘লাল গরু’টা বাদ দিতে হবে। কারণ, তাতে গরুকে মায়ের মতো উল্লেখ করে হিন্দুত্ব শেখানো হয়েছে। একইভাবে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘লাল ঘোড়া’ গল্পটি বাদ দিতে বলা হয়েছে। কারণ, তা পশুর প্রতি দরদ তৈরি করে, যা পশু কোরবানির জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কয়েকবছর আগের এই ঘটনার প্রভাব এখন মানুষ বুঝতে পারছে এবং ভবিষ্যতে আরও পারবে। অনেক সমালোচনার পর পরবর্তীতে হয়তো পাঠ্যবইয়ের কিছু পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু তার রেশ এখনও বিদ্যমান।
বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন জায়গায় হিজাব পরিধান নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী নারীরা। কয়েকদিন আগে একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী বিবাহিত মেয়ে শিক্ষার্থীকে শাখা সিঁদুর খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে বাধ্য করা হয়েছে। কেউ যদি নিজের ধর্মের নিয়ম পালন করতে চায় তাহলে তাকে বাধা দিতে হবে কেনো। এই বিষয়গুলোর কারণে যেকোনো ধর্মের মানুষের মধ্যে একটা খারাপ বার্তা যাচ্ছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান দূর্গা পূজা৷ কিন্তু এই অনুষ্ঠানের জন্য যথেষ্ট ছুটি দেয়া হয় না। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি বর্ধিত করলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সময়ে ক্লাস পরীক্ষা দেয়া হয়েছে। ছুটি বর্ধিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আবেদন করার পর ছুটি না বাড়ানোর নজিরও রয়েছে। এই বিষয়টি সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের মনে একটা ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় গুলো চাইলেই পূজার পাঁচ দিন ছুটি রাখতে পারতো। এটা না করার কারণ হিসেবে অনেকেই কর্তা ব্যাক্তিদের সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে দোষারোপ করেন৷ এবং এই দোষারোপ করাটা যুক্তিযুক্ত। কারণ ওই লোকগুলো নিজেদের স্বার্থে অসাম্প্রদায়িকতার মুখোশ পরে থাকে।
সংস্কৃতিতে সাম্প্রদায়িকতা টেনে আনাও বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অনেকটা দায়ী। ওটা অমুক ধর্মের সংস্কৃতি আমাদের না এই বিষয়গুলো খুব বেশি দেখা যাচ্ছে বর্তমানে। কিন্তু ওগুলো হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি এটা ভুলে যাচ্ছি আমরা। সংস্কৃতির গন জোয়ার সৃষ্টি করা দরকার। সংস্কৃতির চর্চা ছাড়া কোনো জাতি এগিয়ে যেতে পারে না।
সংস্কৃতিক বিপ্লব ছাড়া কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, অপসংস্কৃতি, মৌলবাদ মুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব না। কিন্তু বাজেটে এই ক্ষেত্রে বরাদ্দ যথেষ্ট নয়।২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৬৩৭ কোটি টাকা। যার মধ্যে পরিচালনা খাতে দেওয়া হয়েছে ৩৯০ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ২৪৭ কোটি টাকা। গত বছর সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা। যা পরবর্তীতে সংশোধন করে ৫৭৮ কোটি টাকা করা হয়। গতবারের তুলনায় এবার ৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট নন সাংস্কৃতিককর্মীরা। কারণ সংস্কৃতির উন্নয়নে আরও বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন। সংস্কৃতি কর্মীরা অনেক বড় অবদান রাখেন দেশের অগ্রযাত্রায়। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কুসংস্কার দূর করতে, সাম্প্রদায়িকতা রূখতে সংস্কৃতির প্রসার প্রয়োজন। আর এর জন্য দরকার বেশি সরকারি বরাদ্দ। তা না হওয়ায় অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সংস্কৃতি কর্মীদের।
নিজেদের সুবিধার জন্য বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করা এবং অসাম্প্রদায়িকতার মুখোশ পরে থাকা সাম্প্রদায়িক মানুষগুলো পচাত্তরের ঘাতকদের থেকেও ভয়ংকর।
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ধর্মের অহরহ ব্যাবহার কোনো জাতির জন্য ভালো লক্ষণ না। এভাবে পরিবারের শিশুদের মধ্যেও সাম্প্রদায়িকতা ঢুকে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এর ফল খুবই খারাপ।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বিভিন্ন হামলা,ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনার বিচার না হওয়া। ফেসবুক পোস্ট কে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনা ঘটছে তারও বিচার হয়নি। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অপরাধীরা এগুলো করতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে এসব কাজের সাথে স্থানীয় সরকার দলীয় নেতারা জড়িত। নাসির নগরের হামলার প্রধানদের একজনকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও দেয়া হয়েছিল। পরে সমালোচনার মুখে বাদ দেয়া হয়েছে। এসব কারণে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস কমছে।
প্রশাসনের উচিত মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করা। ফেসবুকে পোস্ট অন্য কেউ ও দিতে পারে এবিষয়টা সাধারণ মানুষকে জানানো এবং বোঝানো। সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার করা। সরকারের উচিত সম্প্রীতি নষ্টের কারণ গুলো খুঁজে বের করে সমাধান করা। তাহলেই আগেই সেই দিন ফিরে আসবে। হাজারো পুলিশ পাহারায় পূজা করার পর যদি আবার সেই ফেসবুক পোস্টের কারণে বাড়িঘর পোড়ানোর ঘটনা ঘটে তাহলে সম্প্রীতি আর ফিরে আসবে না। তাই সময় থাকতে সমস্যা সমূলে উৎপাটিত করা উচিত। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতার যুগান্তর কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “বাংলাদেশে আমি ধর্মনিরপেক্ষতার একটি ছোট্ট চারা রোপণ করেছি। যদি কোনো কারণে এই চারার ক্ষতি হয় তাহলে বাংলাদেশ অস্তিত্ব সংকটে পরবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই চারাকে উপড়ে ফেলা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসার পর মানুষের মনে আশার সঞ্চয় হয়েছিল। বিভিন্ন ঘটনার কারণে সেই আশার বাতি ক্ষীণ হয়ে গেছে। এটাকে নিভতে দেয়া যাবে না।অসাম্প্রদায়িক, সংস্কৃতিমনা এবং উদারচিন্তাধারার সমাজ ব্যাবস্থা ব্যাতীত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। আর জোর করে সম্প্রীতি রক্ষাও সম্ভব না।
লেখক: শিক্ষার্থী
সারাবাংলা/এজেডএস