Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সারাদেশে লোডশেডিং: বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক

রনি অধিকারী
১৩ অক্টোবর ২০২২ ১৫:১৪

দেশে এখন মধ্যরাতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। কখনো ভোরেও আচমকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ছে অনেক এলাকা। তীব্র গরমে লোডশেডিংয়ে নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষের। বিদ্যুৎ দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদার সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিদ্যুৎ ছাড়া আমাদের চলে না, চলবে না। দেশের উন্নয়নের প্রথম শর্ত বিদ্যুতের সহজপ্রাপ্যতা। বিদ্যুৎপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা গেলে উন্নয়নের ধারায় আরো বহু মানুষকে যে সম্পৃক্ত করা যাবে, এটিও নিশ্চিত করে বলা যায়। কলকারখানার পাশাপাশি সব ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রমে বিদ্যুৎ অপরিহার্য। বিদ্যুতের অভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি কমে যাচ্ছে। সে কারণে অতীতের সব সরকারের আমলের মতোই বর্তমান সরকারের আমলেও বিদ্যুৎ ছিল আলোচনার বিষয়। বিদ্যুতের ব্যাপারে সরকারের শীর্ষমহল থেকে সব সময় বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু কয়েক দিন ধরে আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাজধানীসহ সারা দেশেই সকাল আর দুপুর তো বটেই, মধ্যরাতেও লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাজধানীতে দিনরাত মিলিয়ে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। ঢাকার বাইরের পরিস্থিতি আরো খারাপ। কোনো কোনো জেলা ও গ্রামাঞ্চলে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাচ্ছে না মানুষ। গত সোমবার দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে ১২ হাজার ৬৮৬ মেগাওয়াট। বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল এক হাজার ৫১৪ মেগাওয়াট। বেশ কিছু বিদুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে, যার কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি বাড়ছে বলে বেশ কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, জ্বালানিসংকটসহ নানা কারণে উৎপাদন বন্ধ ৩০টি বিদ্যুকেন্দ্রের।

বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান জানাচ্ছে, জ্বালানিসংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় তারা এখন বরাদ্দের চেয়ে কম সরবরাহ পাচ্ছে; যে কারণে লোডশেডিং বেশি দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীও জানিয়েছেন, লোডের কারণে দিনে কিছু বিদ্যুকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। আবার দিনে যেগুলো চালানো হচ্ছে, সেগুলো রাতে বন্ধ রাখা হচ্ছে। এ জন্য লোডশেডিংয়ের জায়গাটা একটু বড় হয়ে গেছে। এর আগে ২০১৩ সালেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল। বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষকে তখন চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। সেই সময়ের মতো এখনো রাজধানীর অনেক এলাকায় কয়েক দিন ধরে এক ঘণ্টা পর পর বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলা চলছে। সামনে স্কুলগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা। ফলে মোমবাতির আলোতে দুঃসহ গরমে একাকার হতে হচ্ছে শিশুদের। পাখা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাতে বারবার ঘুম থেকে জেগে উঠতে হয়। অথচ এ সময় বিদ্যুতের কারণে এই ভোগান্তি কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাস পাওয়া না গেলে শিল্পোদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা সীমাহীন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এ অবস্থায় শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের প্রাপ্যতা নিশ্চিতের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনেকরি। একই সঙ্গে কৃষিখাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা না হলে ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানিনির্ভরতা বেড়ে যাবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সময়োপযোগী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।

বাংলাদেশের মানুষের জীবনে নানা ধরনের দুর্ভোগ আছে, থাকবে। বিদ্যুৎ নিয়েও অতীতে এর চেয়ে বড় দুর্ভোগ সহ্য করেছে তারা। আশা করব, বিদ্যুৎ নিয়ে নতুন করে কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হবে না বর্তমান ও আগামী দিনের গ্রাহকদের। দ্রুত বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হবেন এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

লেখক: কবি, সাংবাদিক

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

মুক্তমত রনি অধিকারী সারাদেশে লোডশেডিং: বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘আমাদের সেনাবাহিনী যেন তৈরি থাকে’
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:২৯

আগস্টে কমেছে মূল্যস্ফীতি
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৭

সম্পর্কিত খবর