কি হতে যাচ্ছে ১০ ডিসেম্বর?
৩১ অক্টোবর ২০২২ ১৮:৪০
১০ ডিসেম্বর সমাবেশের পর থেকে খালেদা জিয়ার কথাতেই চলবে দেশ। তাই এখন থেকেই প্রতিটি জনসভায় খালেদা জিয়ার জন্য একটি চেয়ার খালি রাখা হচ্ছে। আর ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। আমানউল্লাহ আমানের বক্তব্যে মনে হচ্ছে সবকিছুই যেন ছকে সাজানো হয়ে গেছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত একটি সরকারের বিপক্ষে এমন হুমকি কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে? এমন ঘটনা এবারই প্রথম ঘটছে, তা কিন্তু নয়। আগেও বহুবার হয়েছে।
চলুন ফিরে যাই ২০১৩ সালে —
শাপলা চত্ত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ চলছে। বিকেলের মধ্যে সমাবেশ শেষ করার কথা থাকলেও হঠাৎ করেই বেঁকে বসে হেফাজত। সরকার পতনের আগে তারা শাপলা চত্বর ছাড়বে না বলে ঘোষণাও দেয়। বিকেলের দিকে আসতে শুরু করে বিএনপি নেতারা। এদিকে পর্দার আড়ালে চলতে থাকে নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি। পল্টনে দিগন্ত টিভির কার্যালয়ে হয় দফায় দফায় বৈঠক। কে কোন মন্ত্রণালয় পাবে সেটাও প্রায় চুড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সরকার দৃঢ়ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সরকারের ধৈর্য্য ও প্ৰশাসনের বুদ্ধিমত্তায় রাতেই শাপলা চত্বর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। হেফাজতের আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি। তবে বিএনপি ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে জামায়াত-শিবির সমর্থকরা আগুনসন্ত্রাস সৃষ্টি করে প্রায় ৪১৯টি প্রধান ঘটনা ঘটায়। এতে ৪৯২ জন নিহত হয় এবং ২২০০ জন আহত হয়।
২০১৪ সাল —
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে। তারা সে সময় শত শত যানবাহন ভাঙচুর করে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই ঘটনায় তাদের পেট্রোল বোমা, হাতে বানানো বোমা এবং অন্যান্য সহিংসতায় ২০জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ২’শ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।
২০১৫ সাল —
২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিন আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে বিএনপি-জামায়াত জোট। তাদের অগ্নিসন্ত্রাসে মারা যায় ২৩১ জন। যাদের বেশিরভাগই পেট্রোল বোমা এবং আগুনে দগ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন আরও ১ হাজার ১৮০ জন। সে সময় ২,৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেলগাড়ি এবং ৮টি যাত্রীবাহী জাহাজে আগুন দেয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
এরপর ২০২১ সাল —
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার সফরের প্রতিবাদে সারাদেশে এক অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি করে হেফাজত। সেই আন্দোলনের পর গ্রেফতার হন হেফাজতের নেতারা। আর তাদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে মোদি বিরোধী আন্দোলনেও সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিয়ে একই রকম পরিকল্পনা ছিল বিএনপির।
তাদের বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে দেশব্যাপী। তাদের যুদ্ধাঙ্গদেহী মনোভাব সহিংসতাকেই উস্কে দিচ্ছে। বিএনপি কথামালার আড়ালে জনবিরোধী এক ধ্বংসাত্মক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক। বিএনপি বারবার প্রমাণ করেছে তারা দেশের জনগণের জন্য নয়, রাজনীতি করে ক্ষমতার লোভে। তারা অতীতে যে অপকর্ম করেছে তা দেশবাসী ভোলেনি। ভুলবেও না কোনোদিন। যারা ক্ষমতার লোভে দেশের সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে তারা কোনোদিন দেশ ও দশের ভালো চায় না। এটা জনগণ জানে।
লেখক: শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি